সদরপুর-চরভদ্রাসন (ফরিদপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:৩৫ পিএম
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:৪০ পিএম
ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে বালুখেকোদের দৌরাত্ম্য ধসে গেছে পদ্মার তীর সংরক্ষণ বাঁধ। মঙ্গলবারের ছবি। প্রবা ফটো
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায় পদ্মা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনে নদীরক্ষা বাঁধের প্রায় ১৬০ ফুট এলাকাজুড়ে ধসে গেছে। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে নির্মাণের পর বাঁধটিতে এই প্রথমবারের মতো ভাঙন দেখে দিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শাহীনুজ্জামান শাহীন নামক এক বালু ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন ধরে পদ্মা রক্ষা বাঁধের ওপর দিয়ে ভারী পাইপলাইনের মাধ্যমে বলগেটের বালু উত্তোলন, লোড-আনলোড করে আসছিল। এতে পদ্মার তীর সংরক্ষণ বাঁধের তলদেশের মাটি সরে গিয়ে প্রায় ৩০ মিটার এলাকা ধসে গেছে। এ ছাড়াও ওই বাঁধ এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে ধস দেখা দিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, গত শুক্রবার চরভদ্রাসন সদর ইউনিয়নের টিলারচর এলাকায় বাঁধে ধস দেখা দেয়। সেদিন বিকালে ধসে যায় বাঁধের প্রায় ১৬০ ফুট জায়গা। এর একদিন পর গত রবিবার প্রায় ২০ ফুট জায়গা ধসে গিয়েছে। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে চরভদ্রাসন পদ্মা নদীর ‘সংরক্ষণ বাঁধ প্রকল্প’ নামে নদীভাঙন রক্ষায় ৪৫০ মিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয়।
গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, নদীরক্ষা বাঁধের ওপরের মাটি, কংক্রিটের ব্লকসহ প্রায় ১৬০ ফুটের মতো অংশ দেবে গেছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইনামুল হক প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, ওই এলাকায় বলগেট চলার কারণে বাঁধের নিচের মাটি সরে বাঁধ নরম হয়ে ধসে যাচ্ছে। অনেক জায়গাতেই এই ধস দেখা গেছে।
এ বিষয়ে পাউবোর ফরিদপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা বলেন, ‘শাহীনুজ্জামান নামক এক বালু ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন ধরে পদ্মা নদীরক্ষা বাঁধের ওপর দিয়ে ভারী পাইপলাইনের মাধ্যমে বলগেটের বালু লোড-আনলোড করে আসছিল। এতে পদ্মার তীর সংরক্ষণ বাঁধের তলদেশের মাটি সরে গিয়ে প্রায় ৩০ মিটার এলাকা ধসে গেছে। এ ছাড়াও ওই বাঁধ এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে ধস দেখা দিয়েছে।’
তিনি আরও জানান, পদ্মা রক্ষা বাঁধের ওপর দিয়ে ওই বালু ব্যবসায়ীর ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করা হয়েছে। গত শনিবার চরভদ্রাসন সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহনাজ পারভীন বীথিসহ একটি টিম অভিযান পরিচালনা করেছে। এই সময় কোনো বলগেট পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বালু ব্যবসায়ী শাহিনুজ্জামানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মেহেদী মোর্শেদ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, পদ্মা রক্ষা বাঁধের ওপর দিয়ে বলগেটে বালু আনলোড দ্রুত বন্ধ করার জন্য ইতোমধ্যেই আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। কোনো বলগেট পাওয়া যায়নি। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং ধসে যাওয়া বাঁধ এলাকা মেরামতের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।