× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সাক্ষাৎকার

সবার আগে সিলেটকে ‘ক্লিন’ করতে চান আনোয়ারুজ্জামান

কাওছার আহমদ, সিলেট

প্রকাশ : ০৭ নভেম্বর ২০২৩ ১১:২৮ এএম

আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২৩ ১১:৩৫ এএম

নবনির্বাচিত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর। ছবি : সংগৃহীত

নবনির্বাচিত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর। ছবি : সংগৃহীত

নাগরিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত যেহেতু, তাই সিলেটকে ক্লিন, গ্রিন ও স্মার্ট নগরী হিসেবে গড়তে বিস্তর পরিকল্পনা রয়েছে নবনির্বাচিত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর। তিনি বলেন, সিলেট হলো আধ্যাত্মিক নগরী। পর্যটন-সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক নগরী। সিলেটের রয়েছে সংস্কৃতি, ইতিহাস-ঐতিহ্য। এসব সামনে এনে ‘ক্লিন’টাকে গুরুত্ব দিয়েছি। গত ২১ জুন নির্বাচিত হলেও আজ মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) বিকালে আনুষ্ঠানিকভাবে মেয়রের দায়িত্ব নেবেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কাওছার আহমদ

প্রতিদিনের বাংলাদেশ : নগরবাসী অনেক প্রত্যাশা নিয়ে আপনাকে মেয়র নির্বাচিত করেছে। দায়িত্ব গ্রহণের পর নগরায়ন নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?

আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী : একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে নগরবাসীর প্রত্যাশার জায়গাকে চিহ্নিত করে নগরায়নের পরিকল্পনা নেব। 

প্রতিদিনের বাংলাদেশ : আপনার দৃষ্টিতে নগরীর প্রধান সমস্যা কী?

আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী : দেখেন, প্রত্যেক সিটি বা এলাকাতে কমবেশি সমস্যা থাকে। আবার সমাধানেরও পথ আছে। সিলেট নগরীতেও সমস্যা আছে। যেমন পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা, যানজট নিরসন, সামাজিক অপরাধ ও ছড়া বেদখল হওয়াসহ অনেক সমস্যা। এসব সমস্যা পরিকল্পিতভাবে সমাধানের চেষ্টা করব।

প্রতিদিনের বাংলাদেশ : স্মার্ট নগরী গড়তে আপনার পরিকল্পনা কী?

আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী : বাংলাদেশ আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রযুক্তিনির্ভর অর্থাৎ ‘স্মার্ট বালাদেশ’ বিনির্মাণের দ্বারপ্রান্তে। তিনি ইতোমধ্যে চারটি মূল লক্ষ্য নির্ধারণ করে ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশের রূপকল্প প্রণয়ন করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্মার্ট বাংলাদেশের প্রথম স্মার্ট নগরী হিসেবে আমি সিলেটকে গড়ে তুলতে চাই। আর স্মার্ট নগরীর জন্য প্রথমেই প্রয়োজন স্মার্ট নগর ভবন। বর্তমান নগর ভবনের দিকে তাকালেই বোঝা যায় এর অবকাঠামোগত অবস্থা কী পরিমাণ শোচনীয়। তাই নগর ভবনের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে প্রথমে এই প্রতিষ্ঠানের বিরাজমান সমস্যা চিহ্নিত করে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করব। এছাড়া সিটি করপোরেশনের সম্পূর্ণ এলাকায় ফ্রি ওয়াই-ফাই সংযোগ দেওয়ার পাশাপাশি সিসি ক্যামেরা বসাব।

প্রতিদিনের বাংলাদেশ : গ্রিন সিলেট গড়তে আপনার নতুন ভাবনা কী?

আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী : রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি নির্মাণ এবং নগর পরিকল্পনায় সবুজকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। ‘গ্রিন সিলেট’ গড়ে তুলতে এলাকাভিত্তিক পরিকল্পিত বনায়ন করা হবে। বাড়িভিত্তিক সবুজায়নে উৎসাহিত করা হবে। এছাড়া পাহাড়, টিলা ও জলাশয় রক্ষা করে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা হবে। এক কথায় পরিবেশবান্ধব নগরায়ন হবে।

প্রতিদিনের বাংলাদেশ : সিটি করপোরেশনে নতুন করে যুক্ত ১৫টি ওয়ার্ডের উন্নয়ন নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?

আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী : নতুন ওয়ার্ডগুলো একেবারে গ্রামের মতো। এর একটা সুন্দর দিক হলো এখানে কাজ করার যথেষ্ট সুযোগ আছে। মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে কাজ করতে পারলে পুরোনো শহরের চেয়েও নতুন ওয়ার্ডগুলো অনেক সুন্দর হবে। এই ওয়ার্ডগুলো ইচ্ছেমতো সাজানো যাবে। পরিকল্পিতভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মন্দির, খেলার মাঠ ও ক্লিনিকসহ সবকিছু করা যাবে। 

প্রতিদিনের বাংলাদেশ : বৃষ্টি হলেই নগরী ডুবে যায়। এছাড়া সাম্প্রতিক কয়েক দফা বন্যা নগরবাসীকে ভাবিয়ে তুলেছে। এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য কী ধরনের পদক্ষেপ নেবেন?

আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী : বৃষ্টির পানিতে নগরী ডুবে যায় এটা খুবই কষ্টদায়ক, কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। এজন্য পানি নিষ্কাশনের সঠিক ব্যবস্থা করতে হবে। শুধু ড্রেন ভাঙা-গড়া করে এর সমাধান সম্ভব হবে না। এর স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক মানের এক্সপার্ট নিয়ে আসব, যারা পানি নিয়ে কাজ করে। এছাড়া সুরমা নদী খনন ও ছড়া উদ্ধার করতে হবে।

প্রতিদিনের বাংলাদেশ : সামাজিক অপরাধ কমাতে বা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী? 

আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী : সামাজিক অপরাধ বা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়টা প্রশাসনের সহযোগিতায় জিরো টলারেন্সে নিয়ে আসতে চাই। যাতে বাইরে থেকে কোনো লোক নগরীতে এসে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের শিকার না হয়। বিশেষ করে প্রবাসীরা দেশে এসে জমিসংক্রান্ত কোনো ঝামেলায় না পড়ে, এদিকটা গুরুত্বসহকারে দেখা হবে।

প্রতিদিনের বাংলাদেশ : যানজট নিরসনে আপনার কোন ধরনের ভূমিকা থাকবে?

আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী : নাগরিক জীবনে যানজট বড় একটা সমস্যা। যেখানে নগরীতে ৪-৫ হাজার পরিবহনের সক্ষমতা রয়েছে, সেখানে যদি ২০-২৫ হাজার হয়, তাহলে তো যানজট হবেই। এছাড়া সড়কে অব্যবস্থাপনা, ট্রাফিক সিগন্যাল না মানা, যত্রতত্র পার্কিং, ফুটপাথ দখল করে ব্যবসাÑ এসব শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের ক্ষমতা সীমিত। কাজটি মূলত পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের। পুলিশের এ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করে যানজট নিরসনের চেষ্টা করা হবে।

প্রতিদিনের বাংলাদেশ : নগরবাসীর নিরাপদ স্বাস্থ্য নিয়ে আপনার নতুন কোনো ভাবনা আছে কি?

আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী : উন্নত ও সুন্দর জীবনের জন্য সবার আগে প্রয়োজন নিরাপদ স্বাস্থ্যকর নগর। এ পবিত্র নগরীতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নের মাধ্যমে নগর এলাকাকে চারটি জোনে বিভক্ত করে চারটি বিশেষায়িত হাসপাতাল করতে চাই। সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনাধীন স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোকে আধুনিকায়ন ও প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সংখ্যা বৃদ্ধি করে নাগরিকদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে চাই। এছাড়া নগরীর প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে কমিউনিটি ক্লিনিক করার পরিকল্পনা রয়েছে। 

প্রতিদিনের বাংলাদেশ : মশার উপদ্রবে নগরবাসী অতিষ্ঠ। এ থেকে রেহাই পেতে কার্যকর উপায় কী?

আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী : মশক নিধনের পাশাপাশি ছড়া ও ড্রেনে পানিপ্রবাহ রাখতে হবে। স্রোতের মধ্যে মশা বংশবিস্তার করতে পারে না। নগরবাসীকেও সচেতন হতে হবে। বাসাবাড়ি ও প্রতিষ্ঠানের আঙিনা পরিষ্কার রাখতে হবে। 

প্রতিদিনের বাংলাদেশ : নগরায়ন নিয়ে আর কী কী পরিকল্পনা রয়েছে?

আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী : নাগরিকদের মৌলিক সেবা গ্যাস, পানি, বিদ্যুতের সংকট অনেক এলাকায় আছে। এগুলোর সমাধানে পদক্ষেপ নেব। এছাড়া শিক্ষা ও সাংস্কৃতিকবান্ধব, নারীবান্ধব নগরী গড়ার পাশাপাশি পার্ক, উদ্যান ও খেলার মাঠ প্রতিষ্ঠাসহ অনেক পরিকল্পনা রয়েছে।

প্রতিদিনের বাংলাদেশ : আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী : একটি সুন্দর সাক্ষাৎকারের সুযোগ দেওয়ায় প্রতিদিনের বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা