× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

উদ্বোধন হবে ১১ নভেম্বর

চকরিয়ায় ‘স্বপ্নের ট্রেনের’ সঙ্গে সেলফি

সুবল বড়ুয়া ও নুপা আলম, কক্সবাজার

প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ২২:৪৭ পিএম

আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৩ ০১:০১ এএম

চকরিয়ায় ‘স্বপ্নের ট্রেনের’ সঙ্গে সেলফি

ঝিনুকের আদলে তৈরি এশিয়ার সর্ববৃহৎ আইকনিক রেলস্টেশন কক্সবাজারে পৌঁছে গেল স্বপ্নের প্রথম ট্রেন। রবিবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটের দিকে হুইসেল বাজাতে বাজাতে ট্রেনটি এসে দাঁড়ায় আলোকসজ্জিত এই রেলস্টেশনে। এর আগে সকাল ৯টা ২ মিনিটে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে কক্সবাজার অভিমুখে ট্রেনটি যাত্রা শুরু করে।

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের শহর কক্সবাজারে স্বপ্নের এই রেললাইন উদ্বোধন হতে চলেছে আগামী ১১ নভেম্বর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনের আগে রেলপথটি ট্রেন চলাচলের উপযোগী কি না, প্রকল্পটি সফলতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করা হয়েছে কি না- এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সেখানে এটি চালিয়ে দেখা হয়। ট্রেন পৌঁছানোর দৃশ্য দেখতে রবিবার বিকাল থেকেই স্টেশনে জড়ো হতে থাকে মানুষ। সন্ধ্যার আগে এ অঞ্চল লোকে-লোকারণ্য হয়ে ওঠে। ট্রেন এসে পৌঁছলে মানুষজন মুখরিত হয়ে ওঠে উল্লাসে।

যাত্রা হলো শুরু

রবিবার সকাল ৯টা। প্রকৃতিজুড়ে শীতের আমেজ। ট্রেনের হুইসেল বেজে উঠল চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে। প্রতিদিন এমন হুইসেল অনেকবারই শোনা যায় এ স্টেশনে, কিন্তু রবিবারের এই হুইসেলের সঙ্গে মিশে ছিল অন্যরকম আনন্দ। কারণ এ হুইসেল দিয়ে যে ট্রেনটি যাত্রা শুরু করল, সেটির শেষ গন্তব্য পর্যটন নগরী কক্সবাজার। প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে ছাড়ল এই ট্রেন। আটটি বগি নিয়ে যাত্রা শুরু করে ২৯২৫ সিরিজের ইঞ্জিনবিশিষ্ট এই জিআইবিআর স্পেশাল ট্রেন।

সরকারি রেল পরিদর্শক (জিআইবিআর) রুহুল কাদের আজাদের নেতৃত্বে ১৪৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথে রবিবার শুরু হয় ট্রেনযাত্রা। চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে ষোলশহর স্টেশন, জ্বালানিহাট রেলস্টেশন, সংস্কার করা শতবর্ষী কালুরঘাট সেতু পার হয় ট্রেনটি। এরপর বোয়ালখালী, পটিয়া, চন্দনাইশ এলাকা পার হয়ে পৌঁছে দোহাজারী স্টেশনে। দোহাজারী থেকেই মূলত ১০২ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেলপথ নির্মাণ করা হয়েছে। 

দোহাজারী স্টেশন থেকে এই ট্রেন চলাচল করে সাতকানিয়া, লোহাগাড়ার চুনতি অভয়ারণ্য হয়ে চকরিয়া রেলস্টেশনে। চকরিয়া থেকে রামু হয়ে পৌঁছে কক্সবাজারে নবনির্মিত আইকনিক স্টেশনে। 

জিআইবিআরের এই পরিদর্শন দলের সঙ্গে আরও আছেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জিএম মো. নাজমুল ইসলাম, দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মো. সুবক্তগীন, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিঞা, অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক মো. আবুল কালাম চৌধুরীসহ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে কক্সবাজারের রামু পর্যন্ত ট্রেনে গিয়ে দেখা যায়, নির্বিঘ্নে ট্রেন চলাচল করছে। কালুরঘাট সেতুর ওপর দিয়ে চলার সময় ট্রেনের গতি কমিয়ে ফেলা হয়। কালুরঘাট সেতু পার হতে না হতেই ট্রেনের গতিবেগ বেড়ে যায়। কিছুদূর গিয়ে ট্রেনটি পৌঁছে সাতকানিয়ার কেওচিয়া এলাকায়। যেখানে সাম্প্রতিক বন্যায় প্রায় দুই কিলোমিটার অংশের ক্ষতি হয়েছিল, যা ইতোমধ্যেই সংস্কার করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। 

পরে সাতকানিয়া সড়ক ক্রস করে রেলপথ ছুটে যায় কক্সবাজারের পথে। সাতকানিয়া পেরিয়ে লোহাগাড়ার চুনতি অভয়ারণ্য পার হতে থাকে ট্রেন। এখানে চোখে পড়ে হাতি চলাচলের জন্য আন্ডারপাস নির্মাণ করা হয়েছে। পাহাড়ঘেরা চিরসবুজ এই রেলপথের চুনতি স্টেশন পেরিয়ে ট্রেনটি একের পর এক হারবাং, ডুলাহাজারা, ইসলামাবাদ স্টেশন ও রামু স্টেশনে পৌঁছে। এ সময় পথের পাশে দাঁড়ানো হাজার হাজার স্থানীয় মানুষ তাদের উষ্ণ অভিনন্দন জানান।

কক্সবাজারের ইসলামাবাদ স্টেশনে কথা হয় শিক্ষক শফিউল আলমের সঙ্গে। তিনি স্থানীয় পোকখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। কক্সবাজারে ট্রেন যাওয়ায় উচ্ছ্বসিত শিক্ষক শফিউল আলম বলেন, ‘একদম স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। আমার বাপ-দাদারা ট্রেনে চড়ে কক্সবাজার যাননি। কিন্তু আমি আর আমার সন্তানরা ট্রেনে চড়ে কক্সবাজার যাচ্ছি। অনেক আনন্দের ব্যাপার এটা। 

আটটি বগি নিয়ে কক্সবাজারের উদ্দেশে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলক যাত্রার এই ট্রেন চালাচ্ছেন লোকোমাস্টার মো. মাহফুজুর রহমান এবং সহকারী লোকোমাস্টার রুখন মিয়া। এ ছাড়াও ট্রেনে একাধিক গার্ড, রেলওয়ে পুলিশ, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা (আরএনবি) দায়িত্ব পালন করছেন।

ইতিহাসের অংশীদার কক্সবাজারে প্রথম ট্রেন নিয়ে যাওয়া লোকোমাস্টার মো. মাহফুজুর রহমান প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, ‘পর্যটন নগরী কক্সবাজারে যাওয়া পরীক্ষামূলক ট্রেনটি আমি চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। এতে খুব ভালো লাগছে। তবে এ অভিজ্ঞতা আমার নতুন নয়। ২০১৪ সাল থেকে আমি লোকোমাস্টার হিসেবে ট্রেন চালাচ্ছি। সম্প্রতি আখাউড়া আগরতলা রেলপথের প্রথম ট্রেনটিও আমি চালিয়েছি। সত্যিই ভালো লাগছে।’

প্রত্যেক স্টেশনে জিআইবিআর প্রধান পরিদর্শন শেষে সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটের দিকে ট্রেনটি কক্সবাজার আইকনিক স্টেশনে পৌঁছেছে। রেলপথটি কেবল নির্মিত হওয়ায় এবং ব্রিজ ও স্টেশনগুলোয় জিআইবিআর প্রধান পরিদর্শন করায় এ দীর্ঘ সময় লেগেছে বলে জানিয়েছেন ট্রেনের আরেক লোকোমাস্টার সাজু কুমার দাশ। তিনি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত যেতে সময় লাগবে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টার মতো। যেহেতু এখনও নতুন রেলপথ। তাই ঘণ্টায় ৪০-৪৫ কিলোমিটার গতিবেগে ট্রেন চালানো হয়েছে। সব ঠিকঠাক হয়ে গেলে ক্রমান্বয়ে ঘণ্টায় ৬০, ৭০ ও ৮০ কিলোমিটার গতিবেগে ট্রেন চালানো হবে। তখন ট্রেন নির্ধারিত সময়েই পৌঁছবে।’

একাধিকবার ট্রায়াল হয়েছে

পরীক্ষামূলক ট্রেনযাত্রা ও পরিদর্শন শুরুর আগে চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে জিআইবিআর প্রধান রুহুল কাদের আজাদ বলেন, ‘আমরা নবনির্মিত দোহাজারী কক্সবাজার রেলপথ পরিদর্শনের জন্য যাচ্ছি। আমরা নবনির্মিত রেললাইনের ট্র্যাক, স্টেশন বিল্ডিং, সিগন্যালিং, ব্রিজ, কালভার্ট, আন্ডারপাস সরেজমিনে পরিদর্শন করব। আমাদের সঙ্গে সিগন্যালিং, ইলেকট্রিক্যাল, রেল ট্র্যাকসহ সব বিভাগের প্রকৌশলীরা আছেন। আমার কাজ হলো রেল ট্র্যাক থেকে শুরু করে সবকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা। দেখে আমি ঢাকায় গিয়ে রিপোর্ট  দেব।’

এসময় রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জিএম নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘আজকের এই যাত্রা ট্রায়াল নয়। এটি রুটিন কাজ। জিআইবিআর প্রধান পরিদর্শন করছেন। এখানে জিআইবিআর প্রধানসহ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রত্যেক বিভাগের প্রধানরা আছেন। কালুরঘাট সেতুসহ দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০২ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেলপথ পরিদর্শন করা হবে। এই রেলপথ পরিদর্শনকালে জিআইবিআর সেখানে কোনো ত্রুটি আছে কি না দেখবেন। ইন্টারলকিং সিগন্যালিং ব্যবস্থা, প্ল্যার্টফর্মের উচ্চতা, কালভার্ট, লেভেল ক্রসিং গেট ইত্যাদি সঠিক কি নাÑ এসব দেখা হবে। পরে রেলের পরিদর্শন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সার্টিফাই করবেন। এরপর ট্রেন চলাচল করবে।’

এর আগে গত শনিবার ৯২ বছরের পুরোনো কালুরঘাট সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন চলাচলের জন্য একাধিকবার ট্রায়াল রান করে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রকৌশল বিভাগ। এদিন ২২০০ সিরিজ (ওজন ৫০-৫৫ টন), ২৯০০ সিরিজ (ওজন ৭০-৭৫ টন) ও ৩০০০ সিরিজের (ওজন ৮৫-৯০ টন) ইঞ্জিন দিয়ে এই ট্রায়াল রান করা হয়।

এ প্রসঙ্গে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু জাফর মিঞা বলেন, ‘কালুরঘাট সেতুর ওপর দিয়ে এখন ট্রেন চলাচলে আর কোনো বাধা নেই। ট্রেন যাবে পর্যটন নগরী কক্সবাজার। এর ফলে বাংলাদেশ রেলওয়ের সঙ্গে নতুন জেলা হিসেবে যুক্ত হবে কক্সবাজার।’

১৫ টন এক্সেল লোডে ট্রেন চলবে কালুরঘাট সেতুতে

প্রধান প্রকৌশলী বলেন, ‘বুয়েটের বিশেষজ্ঞ টিম গত তিন মাস ধরে প্রায় শতবর্ষী কালুরঘাট সেতুতে সংস্কারকাজ করেছে। গত বৃহস্পতিবার সামান্য কিছু কাজ বাকি ছিল। পূর্বে কালুরঘাট সেতুর ওপর দিয়ে ১০ টনের এক্সেল লোডে ট্রেন চলাচল করত। এখন বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দলের তত্ত্বাবধানে সংস্কারের পর এখান দিয়ে ১৫ টন এক্সেল লোডে ট্রেন চলাচল করতে পারবে। আমরা ইতোমধ্যে তিন হাজার সিরিজের (৯০ টন ওজন) ইঞ্জিন দিয়ে ট্রায়ালও করেছি। এখন এই ইঞ্জিনের সঙ্গে ৫০টি কোচ লাগালেও আর কোনো সমস্যা হবে না।’

দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথের উদ্বোধন

আগামী ১১ নভেম্বর নবনির্মিত দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ প্রসঙ্গে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মো. সুবক্তগীন বলেন, ‘দোহাজারী-কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেলপথ আগামী ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন। এজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আপাতত ট্রায়াল রান হবে না। জিআইবিআর প্রধানের নেতৃত্বে একটি দল নতুন রেলপথটি পরিদর্শনে যাচ্ছে আজ। তারা কোনো ত্রুটি আছে কি না- তা যাছাই-বাছাই করবেন।’ 

প্রকল্পের অগ্রগতি প্রসঙ্গে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক মো. আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, ‘ইতোমধ্যে প্রকল্পের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ। প্রকল্পের অধীনে ১০২ কিলোমিটার রেল ট্র্যাক বসানো হয়েছে। দোহাজারী থেকে চকরিয়া পর্যন্ত এবং চকরিয়া থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথে ৩৯টি ব্রিজ এবং আন্ডারপাসসহ ২৫১টি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। কক্সবাজারে দৃষ্টিনন্দন আইকনিক স্টেশনে নির্মাণকাজও শেষ। কক্সবাজার আইকনিক স্টেশনসহ ৯টি স্টেশনের নির্মাণকাজ একদম শেষ পর্যায়ে।

প্রকল্পের নথির তথ্যানুযায়ী, ২০১০ সালে ৬ জুলাই দোহাজারী-রামু-ঘুমধুম রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। পরে ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই মেগা প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। অর্থায়ন-সংক্রান্ত জটিলতায় বেশ কিছুদিন প্রকল্পটি থমকে থাকে। পরে ২০১৫ সালে অর্থায়নে আগ্রহ দেখায় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। ওই বছরের ডিসেম্বরে প্রকল্প বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়। দোহাজারী-চকরিয়া এবং চকরিয়া-কক্সবাজার (লট-১ ও লট-২) এই দুই লটে চীনা প্রতিষ্ঠান সিআরসি (চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন) ও দেশীয় তমা কনস্ট্রাকশনস কোম্পানি ২৬৮৮ কোটি টাকা এবং চীনা প্রতিষ্ঠান সিসিইসিসি ও দেশীয় ম্যাক্স কনস্ট্রাকশনস ৩৫০২ কোটি টাকায় যথাক্রমে এক ও দুই নম্বর লটের কাজ পায়। ২০১৭ সালে এই মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু হয়।

চকরিয়ায় মানুষের ভিড়

প্রতিদিনের বাংলাদেশের চকরিয়া প্রতিবেদক এম জাহেদ চৌধুরী জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম থেকে পুরোনো স্টেশন দোহাজারী হয়ে নতুন তৈরি করা স্টেশন ছুঁয়ে রবিবার বেলা ২টা ৩৭ মিনিটে ইঞ্জিনসহ ৯ বগির ট্রেনটি চকরিয়া স্টেশনে পৌঁছে। হুইসেলের আওয়াজ শোনার সঙ্গে সঙ্গে অসংখ্য নারী-পুরুষ চকরিয়া স্টেশনে একনজর ট্রেন দেখতে ভিড় করে। এই স্টেশনে ট্রেনটি এক ঘণ্টা অবস্থান করে। তখন উপস্থিত নানা বয়সি নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোররা রেলসহ সেলফি তোলার প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠে। বিকাল ৩টা ৩৭ মিনিটে চকরিয়া স্টেশন ছেড়ে কক্সবাজারের উদ্দেশে ট্রেনটি রওনা দেয়। ট্রেনটিতে রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও ছিলেন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।

ট্রেন দেখার পর উচ্ছ্বসিত স্থানীয় বাসিন্দা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘদিন পরে হলেও আমাদের এলাকায় ট্রেন চলছে দেখে খুবই ভালো লাগছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে কথায় নয়, কাজেই মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করেন, এর জ্বলন্ত প্রমাণ আজকের এই ট্রেন চলাচল।’

পূর্ব বড় ভেওলার কৃষক জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘আমাদের ইউনিয়নে রেলস্টেশন হওয়ায় আমরা এখন সহজেই ট্রেনে করে কৃষিপণ্য চট্টগ্রাম ও ঢাকায় নিয়ে যেতে পারব।’ 

ছেলেমেয়েদের নিয়ে ট্রেন চলাচল দেখতে এসেছিলেন সাধারণ গৃহিণী আমেনা বেগম। তিনি বলেন, ‘আমার শ্বশুরবাড়ি সাহারবিল ইউনিয়নে। আমাদের এলাকার ওপর দিয়ে রেল যাচ্ছে শুনে দেখতে এলাম। জীবনে এই প্রথম আমি রেলগাড়ি দেখলাম।’ 

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথের চকরিয়া অংশে পৃথক তিনটি রেলস্টেশন করা হয়েছে। উপজেলার হারবাং ইউনিয়নে হারবাং রেলওয়ে স্টেশন, সাহারবিল ও পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের সীমান্তে চকরিয়া রেলওয়ে স্টেশন ও ডুলাহাজারা ইউনিয়নে ডুলাহাজারা রেলওয়ে স্টেশন।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা