নিত্যপণ্যের বাজার
হুমায়ুন মাসুদ, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:৩২ পিএম
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:০০ পিএম
খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজার। ছবি: সংগৃহীত
হরতাল-অবরোধ কর্মসূচির নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ভোগ্যপণ্যের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে। ক্রেতা কম থাকায় একদিকে কমেছে বেচাকেনা, অন্যদিকে পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল কমে যাওয়ায় কমছে সরবরাহ। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, হরতাল-অবরোধের কারণে গত সপ্তাহে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ৭০ শতাংশ বেচাকেনা কমেছে। সামনে এভাবে হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি থাকলে লোকসানে পড়বেন তারা। অন্যদিকে সরবরাহ সংকটে বেড়ে যেতে পারে দাম।
খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘হারতাল-অবরোধে খাতুনগঞ্জের সব দোকানপাট খোলা ছিল। কোনো আড়ত বন্ধ ছিল না। তবে বেচাকেনা খুব একটা ছিল না। ক্রেতা কম থাকায় অবরোধের সময় ৭০ শতাংশ বেচাকেনা কম হয়েছে। সামনের দিনগুলো কেমন হবে তা নিয়ে উৎকণ্ঠায় আছি।’
গত ২৯ অক্টোবর সারা দেশে হরতাল কর্মসূচি পালন করে বিএনপি-জামায়াত। এরপর ৩১ অক্টোবর থেকে টানা তিন দিন চলে অবরোধ। মাঝখানে এক দিন বিরতি দিয়ে আজ থেকে আবার দুই দিনের অবরোধ ঘোষণা করেছে তারা।
ভোগ্যপণ্যের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজ, রসুন, আদা, ডাল, চাল, মসলাসহ বিভিন্ন পণ্যের প্রায় সাড়ে তিন হাজার আড়ত আছে। এসব আড়তে গড়ে প্রতিদিন প্রায় হাজার কোটি টাকার বেচাকেনা হয়। অবরোধের কারণে কয়েকদিন তা নেমে এসেছে ৩০০ কোটি টাকার নিচে। ক্রেতা কম থাকায় গত কয়েকদিনে পেঁয়াজসহ কিছু পণ্যের দাম কমেছে। এ বিষয়ে খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘রাজনৈতিক অস্থিরতায় বিশেষ করে হরতাল-অবরোধের কারণে বাজারে ক্রেতা খুব একটা নেই। বিক্রি না হলে পেঁয়াজ পচে যাবে। তাই অনেকে লোকসান দিয়ে পেঁয়াজ বিক্রি করে দিচ্ছেন। আমরা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে আছি। অনেকের ব্যবসা করার আগ্রহ নেই।’
পেঁয়াজ-রসুনের মতো কিছু পণ্যের দাম কমলেও হরতাল-অবরোধে অনেক ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, অবরোধের কারণে ইতোমধ্যে বাজারে বিভিন্ন পণ্যের সরবরাহ কমেছে। আগে যেখানে প্রতিদিন ২০-২৫ ট্রাক পেঁয়াজ প্রবেশ করত, সেখানে গত চার দিনে পণ্যটি এসেছে মাত্র ১০ থেকে ১৫ ট্রাক। একই রকম ছিল ছোলা, চিনিসহ অন্যান্য আমদানিপণ্যের সরবরাহ। ব্যবসায়ীরা বলছেন, যেসব পণ্য ভারত থেকে স্থলপথে আসে, সেগুলোর সরবরাহ অনেক কমেছে। পরিবহন খরচও বাড়ছে। স্বাভাবিক সময়ে যেখানে একটি ট্রাকের ভাড়া ৩০ থেকে ৩৫ হাজার ছিল, অথচ এখন পড়ছে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক অহিদ সিরাজ স্বপন বলেন, ‘হরতাল-অবরোধের কারণে সাপ্লাই চেইন যাতে ঠিক থাকে, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আমরা ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করেছি। ব্যবসায়ীদের বলেছি, অবরোধের সুযোগ কাজে লাগিয়ে যাতে কেউ পণ্যের দাম না বাড়ায়। তাই এই মুহূর্তে আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হলো পণ্যের সরবরাহ ঠিক রাখা।’