× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

স্বস্তির যাত্রায় আতঙ্ক ছড়াচ্ছে থাবা পার্টি

রুবেল আহমেদ, আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:৩০ পিএম

আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:০৭ পিএম

প্রবা ফটো

প্রবা ফটো

নিরাপত্তা ও আরামদায়ক বিবেচনায় বেশিরভাগ মানুষ পছন্দ করেন ট্রেন। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া জংশনে সেই নিরাপদ যাত্রায় আতঙ্ক ছড়াচ্ছে থাবা পার্টি। জংশন ও আউটারে প্রতিনিয়ত হচ্ছে চুরি-ছিনতাই। বাদ যায় না চলন্ত ট্রেনও। এতে খোয়া যাচ্ছে মোবাইল, নগদ অর্থ ও অলংকারসহ প্রয়োজনীয় নথিপত্র। 

এদিকে উপদ্রবের কথা স্বীকার করেছে আখাউড়া রেলওয়ে পুলিশ। বাহিনীটির দাবি, থাবা পার্টির তৎপরতা কমাতে প্রতিনিয়ত চলছে অভিযান। গত এক মাসে স্টেশন ও আশপাশের এলাকা থেকে ৮ সদস্যকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। আটক ৮ জনের মধ্যে ওয়াশিম, রাসেল ও উদয়ের বিরুদ্ধে আখাউড়া রেল থানায় পূর্বেরও ৫টি থেকে ১২টি পর্যন্ত ছিনতাই মামলা রয়েছে।

প্রতিদিনের বাংলাদেশের অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ছয় মাসে আখাউড়া জংশনের দক্ষিণ আউটারে দেবগ্রাম নিমবাগান থেকে স্টেশন পর্যন্ত প্রতিরাতেই ট্রেনগুলোতে থাবা পার্টির আক্রমণের শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। তা ছাড়া স্টেশনে পকেটমার ও ছিনতাইকারী চক্রও বেশ সক্রিয়। আর এসব চক্রে পুরুষের পাশাপাশি রয়েছে নারী সদস্যও। কয়েক গ্রুপে ভাগ হয়ে চক্রটি দিনে ও রাতে চুরি ও ছিনতাই করে বেড়ায়। 

ছিনতাইকারীরা রুট হিসেবে বেছে নেয় আখাউড়া থেকে কুমিল্লা, ভৈরব ও শায়েস্তাগঞ্জ। তারা ভৈরব ও শায়েস্তাগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে ট্রেনে উঠে আখাউড়া আসে। আখাউড়াতে থাকা চক্রের আরও সদস্য যোগ দেয়। সেখান থেকে ভাগ হয়ে কুমিল্লা, শায়েস্তাগঞ্জ ও ভৈরবের ট্রেনে ওঠে। এর আগে যখন যাত্রীরা স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষায় থাকেন তখনও টার্গেট করে। 

ভুক্তভোগীরা জানান, যাত্রীরা ট্রেনে ওঠার সময় চক্রটি দল বেঁধে ধস্তাধস্তি করে। তারা ট্রেনের দরজার মধ্যে ভিড় সৃষ্টি করে রাখে। এসময় যাত্রীদের মানি ব্যাগ ও মোবাইল ফোন নিয়ে সহজে পালিয়ে যায়। আবার ট্রেন ছাড়ার সময় জানালার পাশে থাকা যাত্রীরা কথা বলার সময় থাবা দিয়ে মোবাইল নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে অহরহ।

সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হচ্ছেন নারীরা। কারণ তারা পকেমারদের উপদ্রবে খোয়াচ্ছেন গুরুত্বপূর্ণ মালামাল। গত আগস্ট মাসে মহানগর গোধূলি এক্সপ্রেসের এক যাত্রীর কাছ থেকে স্বর্ণের হার নেওয়ার সময় যাত্রীদের হাতে ধরা পড়ে চার নারী পকেটমার। তার আগে মে মাসে চট্টলা ট্রেনে এক নারী যাত্রীর গলা থেকে সোনার চেইন নিয়ে যাওয়ার সময় তিন নারী পকেটমারকে আটক করে পুলিশে দেয় যাত্রীরা। তাদের বাড়ি হবিগঞ্জের সদর উপজেলার উচাইল গ্রামে। 

সম্প্রতি থাবা পার্টির সক্রিয় সদস্য একাধিক ছিনতাই মামলার এক আসামির সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের। সে জানায় তার কাজ রাতের ট্রেনে ছিনতাই বা থাবা দেওয়া। তাদের ১৫-২০ সদস্যের একটি চক্র রয়েছে। তারা প্রতিরাতেই মিশনে নামে। কোনো কোনো রাতে দুই-তিনটি মোবাইলও পাওয়া যায়। আবার কোনো রাতে একটাও পাওয়া যায় না। একেকটি মোবাইল ৩-৪ হাজার টাকায় বিক্রি করে। আখাউড়ার মনিয়ন্দ এলাকার শরিফুল গত মাসে মা ও মেয়েকে নিয়ে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যেতে ঢাকাগামী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে ওঠেন। এ সময় ভিড়ের মধ্যে তার মায়ের গলা থেকে স্বর্ণের চেইন ছিনতাই হয়। 

বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল এলাকার সালমান হোসেন বলেন, গত সপ্তাহ কুমিল্লা থেকে নিশীথা এক্সপ্রেসে আসছিলাম। আখাউড়া স্টেশনের আগে দেবগ্রাম এলাকায় এলে থাবা দিয়ে আমার ফোনটি নিয়ে যায়। তার পাশে থাকা আরেক ভুক্তভোগী জানান, আপনি স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় থাকবেন আপনার সঙ্গে নারী থাকলে আপনাকে টার্গেট করে ফেলবে। আপনি ট্রেনে ওঠার সময় ভিড় সৃষ্টি করে স্বর্ণালংকার চুরি করবে। 

রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর একাধিক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সন্ধ্যার পর ছিনতাইকারীদের উৎপাত বাড়ে। সংঘবদ্ধ হয়ে তারা বিভিন্ন সময় ট্রেনে হানা দিয়ে মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়। অরক্ষিত স্টেশন, বহিরাগতদের আনাগোনা ও স্টেশনে নিরাপত্তাবেষ্টনীর অভাবই এমন অপ্রীতিকর ঘটনার কারণ। 

আখাউড়া রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ জসিম উদ্দিন খন্দকার প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, পুলিশ নিয়মিতই টহল দিচ্ছে। তবে আমাদের জনবলের সংকট রয়েছে। তবুও আমরা গত এক মাসে স্টেশন ও আশপাশের এলাকা থেকে ৮ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা