× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু

বেতাগীতে আশা জাগাচ্ছে সামাজিক ময়নাতদন্ত

বেতাগী (বরগুনা) সংবাদদাতা

প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৪২ এএম

আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৫৩ এএম

পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু প্রতিরোধে স্থানীয়দের অংশগ্রহণে চলছে ‘সামাজিক ময়নাতদন্তের’ কার্যক্রম। সম্প্রতি বরগুনার বেতাগী তেকে তোলা। প্রবা ফটো

পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু প্রতিরোধে স্থানীয়দের অংশগ্রহণে চলছে ‘সামাজিক ময়নাতদন্তের’ কার্যক্রম। সম্প্রতি বরগুনার বেতাগী তেকে তোলা। প্রবা ফটো

উপকূলীয় জেলা বরগুনার বেতাগীতে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু প্রতিরোধে আশা জাগাচ্ছে ‘সামাজিক ময়নাতদন্ত’ নামে একটি কার্যক্রম। পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর সামাজিক সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও দুর্ঘটনার কারণ খুঁজে বের করা হয় এ কার্যক্রমের মাধ্যমে। যাতে ভবিষ্যতে শিশু মৃত্যুর হার প্রতিরোধ করা যায়। রয়্যাল ন্যাশনাল লাইফবোট ইনস্টিটিউশন, ইউকে এবং প্রিন্সেস শার্লিন অফ মোনাকো ফাউন্ডেশনের সহায়তায় প্রজেক্ট ভাসা'র অধীনে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিচার্স বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি) নামের একটি বেসরকারি সংগঠন। 

সিআইপিআরবি বেতাগী অফিস সূত্রে জানা গেছে, সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সামাজিক ময়নাতদন্ত কার্যক্রমের মাধ্যমে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর প্রধান কারণ চিহ্নিত করা হয়। ভবিষ্যতে এ ধরনের মৃত্যু কীভাবে প্রতিরোধ করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়। সামাজিক ময়নাতদন্তে প্রতিবেশী, সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, বিভিন্ন এনজিও কর্মীসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকেন। একটি মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ৫০-৬০ জন মাকে একত্রিত করে এক থেকে দুই ঘণ্টা এ ময়নাতদন্ত করা হয়। 

অফিস সূত্রে আরও জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর পর্যন্ত উপজেলার ১টি পৌরসভাসহ ৭টি ইউনিয়নের ৩৫টি শিশু মৃত্যুর সামাজিক ময়নাদতন্ত শেষ হয়েছে। 

এর মধ্যে বিবিচিনি এলাকার লায়েছ খানের মেয়ে মাঈশা আক্তার, দেশান্তরকাঠির মো. আল আলামিনের মেয়ে আলিছা, পৌরসভার মো. বাদলের ছেলে আলিফ ইসলাম, বেতাগী সদর ইউনিয়নের শুশীল মিস্ত্রীর ছেলে রুদ্র মিস্ত্রী, বেলাল হোসাঈনের মেয়ে আনিকা সুলতানা, জাহিদ হোসেনের ছেলে আব্দুল্লাহ, বুড়ামজুমদারের মো. মনিরের ছেলে মো. হোসাঈন, মো. মতিউরের ছেলে মো. ইশা, কাজিরাবাদের মো. নজরুল হোসেনের ছেলে মো. ফেরদৌস, পরিতোষ সিকদারের মেয়ে স্নিগ্ধা, সড়িষামুড়ি ইউনিয়নের রেজাউল করিমের ছেলে তাওরাত ও মো. মনোয়ার খানের ছেলে মুসা করিম, সর্বশেষ মোকামিয়া ইউনিয়নের মো. মারুফ খানের মেয়ে মোসা. মাইশার পানিতে ডুবে মৃত্যুর পর সামাজিক ময়নাতদন্ত উল্লেখযোগ্য। 

এসব কার্যক্রমে কমিউনিটির প্রায় ৩ হাজার ৬৮ জন অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে ১ হাজার ৯৫৬ জনই নারী, যারা মৃত্যু প্রতিরোধে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারে। আর পুরুষ ছিলেন ১ হাজার ১১২ জন। এর বাইরে ছিলেন শিশুরাও।

সিআইপিআরবি’র সুপারভাইজার শাহনাজ পারভীন জানান, সামাজিক ময়নাতদন্তে কী কারণে শিশুর মৃত্যু হয়েছে, কী করলে দুর্ঘটনার শিকার শিশুকে পানিতে ডুবে যাওয়া থেকে বাঁচানো যেত এবং এর পেছনে কী ধরনের সামাজিক ভুল ছিলÑ এসব প্রশ্ন মাথায় রেখে বিশদ আলোচনা হয়। এ ছাড়া ময়নাতদন্ত শেষে পানিতে ডুবে মৃত শিশুর স্মৃতির উদ্দেশে ফলদ বৃক্ষ রোপণ করা হয়। সেখানে তার নামে একটি স্মৃতিফলকও উন্মোচন করা হয়। আর যাতে কেউ পানিতে ডুবে এ ধরনের দুর্ঘটনার কবলে না পড়ে এজন্য কার্যকরী উদ্যোগ নেওয়া হয়। 

এ কার্যক্রমের ফলে আচরণগত পরিবর্তন হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সবার মাঝে গুরুত্ব ও সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। অরক্ষিত স্থানসমূহ বেড়া দিয়ে সংরক্ষণ করা হয়েছে, অপ্রয়োজনীয় ডোবাসমূহকে ভরাট করে নিরাপদ করা হয়েছে। শিশুদের দেখভালের বিষয়ে আগের চেয়ে অনেক সচেতন হয়েছে।’ 

বিবিচিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নওয়াব হোসেন নয়ন বলেন, ‘এ ধরনের কার্যক্রমের মাধ্যমে যাদের শিশু রয়েছে তারা আরও যত্নশীল হবে। পানিতে ডুবে যাতে শিশুর মৃত্যু না ঘটে সে বিষয়ে সতর্ক হবে।’

পানিতে ডুবে মৃত শিশু মুসা করিমের মা আকলিমা বেগম বলেন, ‘সামাজিক ময়নাতদন্তে আলোচনার মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ সময় শিশুদের দেখে-শুনে রাখার ক্ষেত্রে মনের মধ্যে এক ধরনের ভয় ঢুকছে। যা আগামীতে শিশুদের ঝুঁকিমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করবে।’

সিআইপিআরবি’র আঞ্চলিক সমন্বয়কারী রজত সেন বলেন, ‘পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর সামাজিক সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও এ ধরনের দুর্ঘটনার কারণ খুঁজে বের করতেই সামাজিক ময়নাতদন্ত করা হয়। যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের মৃত্যু প্রতিরোধ করা যায়।’

ফিল্ড টিম ম্যানেজার মোতাহের হোসাঈন বলেন, ‘পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধে মানুষকে সচেতন করার দৃশ্যমান পদ্ধতি হলো সামাজিক ময়নাতদন্ত। মায়েরা যাতে বিভিন্ন দুর্ঘটনার হাত থেকে সন্তানকে রক্ষার জন্য কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা