× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বুড়ো সেতুতে উঠছে ৯০ টনের ট্রেন

চট্টগ্রাম অফিস

প্রকাশ : ০৪ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:১১ এএম

আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:১২ এএম

কালুরঘাট সেতু। প্রবা ফটো

কালুরঘাট সেতু। প্রবা ফটো

কালুরঘাট সেতুর বয়স ৯২ বছর। মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে অনেক আগেই। জোড়াতালি দিয়ে ঘণ্টায় মাত্র ১০ কিলোমিটার গতিতে রেল চালানো হচ্ছিল। নতুন করে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণের পর এই সেতু দিয়ে কক্সবাজারে রেল পাঠানো অসম্ভব ছিল। বাধ্য হয়ে সেতু সংস্কারের উদ্যোগ নেয় সরকার। সেই সংস্কারকাজ শেষে সেতুর ওপর দিয়ে ৯০ টন ওজনের ইঞ্জিন চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু জাফর মিঞা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘বুয়েটের বিশেষজ্ঞ টিম তিন মাস ধরে প্রায় শতবর্ষী এই সেতুতে সংস্কারকাজ করেছে। সেতুটির সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনা করেই এই সংস্কার করা হয়েছে। সংস্কার প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে।’ আগামীকাল শনিবার সেতু দিয়ে ট্রায়াল রানের ট্রেন যাবে বলে তিনি জানান।

প্রধান প্রকৌশলী আরও বলেন, আগে সেতুতে ১০ টনের এক্সেল লোডের ট্রেন চলাচল করত। মেরামতের পর ১৫ টন এক্সেল লোডের ট্রেন চলাচল করতে পারবে। ট্রায়ালের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চিফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার তাপস কুমার দাশ বলেন, কোরিয়া থেকে আমদানি করা ৩০০০ সিরিজের ইঞ্জিন (৯০ টন ওজন) দিয়ে কালুরঘাট সেতুর ট্রায়াল রানের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এই সিরিজের ইঞ্জিন দিয়েই কক্সবাজার রোডে ট্রেন চলাচল করবে।

আগামী ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজার গিয়ে বহুল প্রত্যাশিত নতুন এ রেলপথ উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছেন দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মো. সুবক্তগীন। এজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানান। ১০২ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন এই রেলপথ উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে দেশের মানুষ।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথের যেসব ইঞ্জিন ও কোচ চলাচল করবে, সেগুলোর ওজন কেমনÑ জানতে চাইলে চিফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার বলেন, প্রতিটি এসি কোচের ওজন ৩৬ টন, নন-এসি (শোভন চেয়ার) কোচের ওজন ৩২ টন। প্রকল্প পরিচালক সুবক্তগীন বলেন, চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে কালুরঘাট সেতুর ওপর দিয়ে ট্রায়াল রানের ট্রেনটি রোয়ালখালী, পটিয়া, দোহাজারী, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া ও চকরিয়া উপজেলা হয়ে কক্সবাজারের আইকনিক রেলস্টেশনে থামবে। ট্রায়াল রানে রেলমন্ত্রীসহ বাংলাদেশ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা থাকবেন।

প্রকল্প পরিচালক আরও বলেন, ইতোমধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার এবং চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথের জন্য একাধিক নতুন ট্রেন চালুর সময়সূচি এবং ট্রেনের ছয়টি নামের প্রস্তাব নির্ধারণ করে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপকের কার্যালয় থেকে ঢাকা রেলভবনে পাঠানো হয়েছে। আগামী ৭ নভেম্বর রেলমন্ত্রী এসব ট্রেনের সময়সূচির ঘোষণা দেবেন।

বর্তমানে প্রকল্পের অগ্রগতি প্রসঙ্গে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক মো. আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, ১০২ কিলোমিটার রেল ট্র্যাক বসানো হয়েছে। দোহাজারী থেকে চকরিয়া পর্যন্ত এবং চকরিয়া থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ৩৯টি ব্রিজ এবং আন্ডারপাসসহ ২৫১টি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। কক্সবাজারে দৃষ্টিনন্দন আইকনিক স্টেশনের নির্মাণকাজও শেষ। এ ছাড়া দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, হারবাং, চকরিয়া, ডুলাহাজারা, ইসলামাবাদ, রামু স্টেশনের নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে। কক্সবাজারসহ এসব স্টেশনে থাকবে কম্পিউটার বেইজড ইন্টারলক সিগন্যাল সিস্টেম এবং ডিজিটাল টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেম। পাশাপাশি রেলপথ নির্মাণের সময় অনেক গাছ কাটতে হয়েছে। সেগুলো পুষিয়ে নিতে প্রায় সাত লাখ গাছ রোপণ করা হবে। ইতোমধ্যে পাঁচ লাখ গাছ রোপণ করা হয়েছে। অনেক গাছ ইতোমধ্যেই তিন-চার ফুট উঁচু হয়েছে। পাশাপাশি যেসব আমলকীসহ ফলদ গাছ রোপণ করা হয়েছে, সেগুলোয় ফল ধরেছে। আপনারা রেলপথ দিয়ে গেলেই দেখতে পাবেন। এ ছাড়া আন্ডারপাসের ওপর দিয়ে হাতি চলাচলের জন্য ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সেটিও দৃষ্টিনন্দন হয়েছে।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রকৌশল বিভাগের তথ্যানুযায়ী, ব্রিটিশ আমলে শুধু রেল যোগাযোগের জন্য ১৯৩১ সালে কালুরঘাট সেতু নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে বিদ্যমান ৬৩৮ দশমিক ৫ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতু ১৯৬২ সালে সব ধরনের যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। সেই থেকে সেতু দিয়েই ঝুঁকিপূর্ণভাবে রেল ও ভারী যান চলাচল করছে। সর্বশেষ ২০০৪ সালে সেতুটির ভারী সংস্কার এবং এক দশক ধরে কয়েক দফা হাল্কা মেরামত করা হলেও সেটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। বুয়েট দলের তত্ত্বাবধানে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান সংস্কার করে।

প্রকল্পের নথি অনুযায়ী, ২০১০ সালের ৬ জুলাই দোহাজারী-রামু-ঘুমধুম রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন পায়। পরের বছর ৩ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এর ব্যয় ধরা হয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। অর্থায়ন সংক্রান্ত জটিলতায় বেশ কিছুদিন প্রকল্পটি থমকে থাকার পর ২০১৫ সালে অর্থায়নে আগ্রহ দেখায় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা