× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ঋণে বন্দি জেলেদের শুঁটকির সমুদ্রযাত্রা

মোংলা ও শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০২৩ ১১:০১ এএম

আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:০৫ পিএম

বৃহস্পতিবার দুপুরে মোংলার পশুর নদীর চিলা পাড়া থেকে তোলা ছবি। প্রবা ফটো

বৃহস্পতিবার দুপুরে মোংলার পশুর নদীর চিলা পাড়া থেকে তোলা ছবি। প্রবা ফটো

রফিকুল ইসলাম। বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার শ্রীফলতলা গ্রামের বাসিন্দা। একসময় ছিলেন সুন্দরবনের দুর্ধর্ষ বনদস্যু। তবে সেসব ছেড়ে এখন তিনি পেশাদার জেলে। দীর্ঘ চার বছর যাবৎ সাগরে মাছ ধরেন তিনি। এই মাছ ধরতে গিয়ে মহাজনের ঋণের জালে আটকে গেছেন রফিকুল। প্রায় ২০ লাখ টাকা দাদন নিয়ে এখনও তা শোধ করতে পারেননি তিনি।

জীবিকা এবং পেশার তাগিদে সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার মনতোষ সরকারও ঋণের জালে বন্দি। মহাজনের এই ঋণ থেকে মুক্তি মিলছে না একই উপজেলার মধুসুদন বিশ্বাস , বিশ্বনাথ সরকার , মোংলা উপজেলার সোনাইলতলা হাবিবুর রহমান শেখেরও। এ রকম হাজার হাজার জেলে মহাজনের কাছ থেকে দাদন নিয়ে শোধ করতে পারেনি টাকা। তাই বাধ্য হয়েই এই পেশা ছাড়তেও পারছে না তারা। বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে মোংলার পশুর নদীর চিলা পাড়ে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হলে জানা যায় এসব কথা।

এসব জেলের এইবার ঋণ শোধ করতেই হবে, সে কথা মাথায় রেখে শুঁটকি তৈরিতে বঙ্গোপসাগরের দুবলার চরে ছুটছেন উপকূলের প্রায় ১০ হাজার জেলে। তাই শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা উপকূলের জেলে-মহাজনদের মাঝে। সাগরে যেতে যে যার মতো প্রস্তুত করেছে জাল, দড়ি, নৌকা ও ট্রলার। অনেকেই আবার সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে ইতোমধ্যে চলে এসেছে মোংলা ও পশুর নদীর চিলা পাড়ে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সুন্দরবনের দক্ষিণে বিশাল চর- দুবলার চর। বছরের সাত মাস এই চর ফাঁকা থাকে। এই দুবলার চর সংলগ্ন সমুদ্রে মাছ আর মাছ। আর এই মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করে উপকূলের কয়েক হাজার জেলে। নভেম্বরের শুরু থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে সেখানে অস্থায়ী বসতি গড়ে তারা। গড়ে ওঠে দোকানপাটও। মাছ ধরা, শুঁটকি বানানো ও বিকিকিনির এই কর্মযজ্ঞ চলবে পাঁচ মাস। তবে এর বিনিময় জেলেদের জন্য কোনো সুবিধা নেই সেখানে। যদিও এই শুঁটকিপল্লী থেকে প্রতি বছর পাঁচ থেকে ছয় কোটি টাকার রাজস্ব পায় বন বিভাগ।

বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার জেলে আব্দুল লতিফ শেখ  বলেন, প্রতি বছর শুঁটকি মৌসুমে তারা সাগরে যায়। সেখানে গিয়ে অস্থায়ী বসতি গড়ে সমুদ্র থেকে মাছ আহরণ করে তা রোদে শুকিয়ে শুঁটকি তৈরি করা হয়। এ কাজে তাদের হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে হয়। তারপর এই মাছ দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করে তাদের মহাজনরা। তবে ঝড় জলোচ্ছ্বাসে এসব জেলের আশ্রয় নেওয়ার কোনো পাকা স্থাপনা নেই। মোটা অঙ্কের রাজস্ব দেওয়া হলেও তাদের কথা কেউ ভাবে না বলেও জানায় এই জেলে।

এদিকে জেলেদের দুঃখদুর্দশার কথা স্বীকার করে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) রানা দেব বলেন, তাদের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ শিগগিরই পদক্ষেপ নেবেন। এ ছাড়া তিনি বলেন, এবার শুঁটকি মৌসুম ঘিরে উপকূলের বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৩০ হাজার জেলে সমবেত হবে দুবলার চরে। দুবলার চরের ওইসব জেলে প্রায় দেড় হাজার ট্রলার নিয়ে মাছ ধরবে গভীর সাগরে। সাগর থেকে আহরিত বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বাছাই করে শুঁটকি করবে তারা।

এ বছর চরে জেলেদের থাকা ও শুঁটকি সংরক্ষণের জন্য এক হাজার ১০৮টি জেলে ঘর ও ৭৮টি ডিপো স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গত শুঁটকির মৌসুমে দুবলার চর থেকে বন বিভাগের রাজস্ব আদায় হয়েছিল ছয় কোটি টাকা। আর এবার তার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সাত কোটি টাকা বলেও জানান এই বন কর্মকর্তা। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা