× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ত্রিশালের ঐতিহ্যবাহী পলো বাওয়া উৎসব

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০২ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:৪৩ পিএম

আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:২৫ পিএম

বোকা বিলের ঐতিহ্যবাহী পলো বাওয়া উৎসবে মানুষের ঢল। প্রবা ফটো

বোকা বিলের ঐতিহ্যবাহী পলো বাওয়া উৎসবে মানুষের ঢল। প্রবা ফটো

ময়মনসিংহের ত্রিশালে বছরের নির্দষ্ট দিনে অনুষ্ঠিত হয় মাছ শিকারের ঐতিহ্যবাহী পলো বাওয়া উৎসব। উপজেলার বৈলর ইউনিয়নের বোকা বিলে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে হাজার মানুষের ঢল নেমেছে। 

বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) কাক ডাকা ভোরে বোকা বিলে গিয়ে দেখা যায় অজস্র মানুষ হই হুল্লুড় করে পলো হাতে মাছ ধরছেন। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গেই শুরু হয় উৎসব। শিশু থেকে বুড়ো, সব শ্রেণি-পেশার মানুষের উপস্থিতিতে বিলের চারপাশে বিরাজ করছিলো উৎসবমুখর পরিবেশ। কারো জালে বড় মাছ ধরা পড়লেই স্লোগান আর আনন্দ উল্লাসে মাতোয়ারা হয়ে উঠছিলো পুরো বিল। মাছ ধরার এ উৎসব চলে দুপুর পর্যন্ত।

প্রতি বছরই স্থানীয় এবং আশেপাশের বিভিন্ন স্থান থেকে বোকা বিলে পলো উৎসবে যোগ দিতে সমবেত হন কয়েক হাজার মানুষ। পলো বাওয়া উৎসব আয়োজন করে থাকেন স্থানীয় এলাকাবাসী। উৎসবের ঘোষণা দিতে আগের দিন মাইকিং করা হয়। এবারও হয়নি তার ব্যতিক্রম। 

কয়েক শত একর আয়তনের এ বিলে একদিনের জন্য মাছ শিকারে সমবেত হয় কয়েক হাজার মানুষ। ছোট থেকে বড় সবার হাতেই পলো। কারো হাতে হাত জাল। কেউ এসেছেন একা। কেউ কেউ দল নিয়ে। সবাই মাছ ধরায় ব্যস্ত। শুধু কি মাছ ধরা, মাছ ধরা দেখতে বিলের ধারে ভীড় করেছেন অজস্র নারী-পুরষ। 

মাছ ধরতে এসেছেন বৃদ্ধ হেলিম মিয়া, আজিজুর রহমান, আনিছুল মিয়া। কথা হয় তাদের সঙ্গে। তারা জানান, পুরোনো ঐতিহ্য ধরে রাখাতেই বহু বছর পর বোকা বিলে বাওয়া উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। মধ্যরাত থেকেই প্রস্তুতি নিতে থাকে সবাই। কারণ, ভোরের আলো ফোটার সঙ্গেই তো শুরু হয়ে যাবে মাছ ধরা। এই আনন্দ উৎসবে যোগ দেন এ অঞ্চলসহ দুরদুরান্তের হাজারো মানুষ। বাওয়ার খবর পেয়ে কারও কারও বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন অনেক আত্নীয়। সকালেই ছোট-বড় সবাই পলো, ছিটকি জাল, উড়াল জাল, লাঠি জাল, হাত জাল নিয়ে মাছ ধরতে নেমেছেন বিলে। এ বিলে পলো বাওয়ায় ধরা পড়ছে শোল, পুঁটি, বাইম, বোয়ালসহ অনেক প্রজাতির দেশি মাছ।

পাশের গ্রাম থেকে পলো বাওয়া উৎসব দেখতে এসেছেন কয়েকজন তরুণ। বুলবুল, শাওন, আব্দুল্লাহ, সিমরান, ইফতি সবার বয়সই বিশের কোঠায়। তারা জানায়, আমরা এর আগে এ ধরনের মাছ ধরার উৎসব দেখিনি। দাদা-নানাদের মুখে শুনেছি। ভোর থেকেই হাজার হাজার মানুষের ঢল। আমরা মাছ ধরতে আসিনি, এসেছি দেখতে। আমাদের মতো এমন অনেকে আছে এখানে। শুনেছি অনেক বছরের পুরোনো এ পলো বাওয়া উৎসব। প্রতি বছরই এমন আয়োজন করা উচিত। খুব ভালো লাগছে মাছ ধরা দেখে। উৎসবের আনন্দ যুবক-বৃদ্ধদের চেয়ে শিশুদের মধ্যেই একটু বেশি। অনেকেই পরিবারের পুরুষ সদস্যদের হাত ধরে উৎসবে শরিক হতে এসেছে। 

মাছ ধরা দেখতে এসেছেন স্থানীয় স্কুলের শিক্ষক সাদিকুর রহমান। কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, অক্টোবর মাসের শুরুতে ভারী ভর্ষনে ত্রিশালের ৮০ শতাংশ ফিশারি পানিতে তলিয়ে গিয়েছে। ঘের থেকে বের হয়ে এসব মাছের একটা বড় অশং বিলে এসে পড়েছে। তাই গত দুদিন ধরে স্থানীয়রা মাইকিং করে পলো বাওয়া উৎসবের আয়োজন করেছে। এলাকায় বহু বছর পরে এমন আয়োজন হলো। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে এলাকার ছোট বড় সবাই মাছ শিকারের সরঞ্জাম তৈরীতে গত কয়েকদিন ব্যস্ত সময় পার করছে। বাড়িতে আত্নীয় এসেছে বেড়াতে। আমরাও কল্পনা করতে পারিনি এত পরিমান লোক হবে। স্কুলের বাচ্চারাও বলছে, স্যার স্কুল বন্ধ দেন মাছ ধরতে যাবো!

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা