রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যানের উপহার হিসেবে খাদ্যসামগ্রী পাচ্ছে ৫০ হাজার পরিবার

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার অসহায় ও দরিদ্রদের সহযোগিতা করতে আবারও মহৎ উদ্যোগ নিয়েছেন দেশের শীর্ষ স্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ রফিকুল ইসলাম। এবার তিনি রূপগঞ্জের ৫০ হাজার অসহায় ও দরিদ্র পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী উপহার দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত কর‍তে এই উদ্যোগ নিয়েছেন রফিকুল ইসলাম।

বুধবার (১ নভেম্বর) থেকে রূপগঞ্জ উপজেলায় এই খাদ্যসামগ্রী বিতরণ শুরু হয়েছে। এদিন বিকালে উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া এলাকায় অবস্থিত রংধনু গ্রুপের অস্থায়ী কার্যালয়ে প্রথম ধাপের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়।

শুরুতে রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যানের এই উপহার পেয়েছে রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডের দরিদ্র ও অসহায় পরিবার। এরপর ধাপে ধাপে উপজেলার ভুলতা, গোলাকান্দাইল, রূপগঞ্জ, মুড়াপাড়া, দাউদপুর, ভোলাব ইউনিয়ন ও কাঞ্চন এবং তারাব পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের অসহায় ও দরিদ্র পরিবারদের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হবে।

খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আপনারা জানেন, আমি অন্তত দুই মাস পরপর রূপগঞ্জের মানুষের জন্য সাধ্যমতো সহযোগিতা করি। সব সময় আপনাদের পাশে ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব। মানুষকে এই সহযোগিতা ও পাশে থাকা গত ২৫ বছর ধরে আমি অব্যাহত রেখেছি। বিশ্বনেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামান্য কর্মী আমি। প্রধানমন্ত্রীর ডাকে দলের যেকোনো প্রোগ্রামে হাজার-হাজার নেতাকর্মী নিয়ে অংশগ্রহণ করে তা সফল করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।’

তিনি বলেন, ‘গত ৩০ অক্টোবর জাতীয় ইমাম সম্মেলন ও ষষ্ঠ পর্যায়ের ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন উপলক্ষে রূপগঞ্জে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। সেদিন পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে নেত্রীর আগমন উপলক্ষে হাজার-হাজার মুসল্লি ও নেতাকর্মী নিয়ে অভ্যর্থনা জানিয়েছি। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলাম। এর দুই দিন আগে গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় আওয়ামী লীগের উন্নয়ন ও শান্তি সমাবেশ ছিল। সেখানেও আমি ৩০ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে সমাবেশে যোগদান করেছি। আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিগত সময় থেকেছি, সামনের দিনগুলোতেও দলের যব বিষয়ে আমি আমার নেতাকর্মী নিয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে থাকব।’

রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘চাল, ডাল, চিনি, তেল, লবণ ও আলুসহ খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করার জন্য আজকের আয়োজন। রূপগঞ্জের সাতটি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভায় ৫০ হাজার পরিবারের মধ্যে এ খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হবে। আজকে খাদ্য বিতরণের প্রথম দিনে কায়েতপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও এলাকায় বিতরণ করা হয়েছে। আপনারা দোয়া করবেন, যেন ভবিষ্যতে সাধারণ মানুষের কল্যাণে আরও বেশি কাজ করে যেতে পারি।’

বিএনপি-জামায়াত দেশে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারপরও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটাই কথা– আমার দেশের মানুষ না খেয়ে থাকবে না, ভিটেহারা থাকবে না, ঘরহারা থাকবে না। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আমি ক্ষুদ্র একজন মানুষ অসহায় ও দরিদ্র মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছি। তাই প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনায় এবং আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকাকে পুনরায় বিজয়ী করার লক্ষ্যে এবারের আয়োজন রূপগঞ্জের ৫০ হাজার দরিদ্র ও অসহায় মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছি।’

রংধনু গ্রুপের পরিচালক ও নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মিজানুর রহমান মিজান বলেন, ‘রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান, আমার বড় ভাই আলহাজ রফিকুল ইসলাম করোনা মহামারির সময় থেকে শুরু করে দেশের নানা দুর্যোগ ও নানা সময়ে অসহায় ও দরিদ্র মানুষকে অর্থ, খাদ্যসামগ্রী, বস্ত্রসহ নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন এবং করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে রংধনু গ্রুপ তথা আমার বড় ভাই আলহাজ রফিকুল ইসলাম এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন।’

পরে সবার কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আলহাজ রফিকুল ইসলামের জন্য দোয়া কামনা করেন মিজানুর রহমান মিজান। 

কায়েতপাড়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মহিউদ্দিন বলেন, ‘রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ রফিকুল ইসলাম গরিব ও অসহায় মানুষের বন্ধু। রূপগঞ্জবাসী তাকে গরিবের বন্ধু হিসেবে চেনেন। ঈদ, পূজাসহ সব ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। সব ধর্মের মানুষকে তিনি ভালোবাসেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী করোনা মহামারির সময় থেকে শুরু করে নানা দুর্যোগে দেশের বিভিন্ন জেলায় গিয়ে রংধনু গ্রুপের পক্ষ থেকে অসহায় ও দরিদ্র মানুষকে আলহাজ রফিকুল ইসলাম আর্থিক, বস্ত্র এবং খাদ্যসামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করেছেন।’

উপহারের খাদ্যসামগ্রী পেয়ে খুশিতে আত্মহারা হয়ে ওঠেন অসহায় ও দরিদ্র মানুষেরা। তারা রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যানের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন। একই সঙ্গে আগামী জাতীয় নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত করা হবে বলে তারা জানান।

খাদ্যসামগ্রী উপহার পাওয়া দশমী দাস বলেন, ‘এ পর্যন্ত অনেকবার রফিক সাহেবের কাছ থেকে খাদ্যসামগ্রীসহ অনেক সুযোগ-সুবিধা পাইছি। ওনার মন ভালা। ভগমান (ঈশ্বর) উনারে আরও দিবে।’ 

আব্দুল মজিদ নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘রফিক সাহেবের তুলনা হয় না। তিনি গরিবের বন্ধু। সব সময় আমাদের মতো নিরীহ ও অসহায় মানুষের খোঁজখবর নেন। কেউ সমস্যায় পড়লে তার সমাধান করে দেন।’

আলাতুন্নেসা নামে এক বৃদ্ধা বলেন, ‘যখন খাবারের সমস্যা হয় তখন রফিক সাহেবের কাছে গেলে খাবারের ব্যবস্থা কইরা দেন। তিনি সপ্তায় (সপ্তাহে) তিন চার দিন এলাকায় আইসা আমাদের মতন অসহায় মানুষের খোঁজখবর নেন। তার কোনো তুলনা হয় না।’

খাদ্যসামগ্রী বিতরণের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, ভুলতা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু দাউদ মোল্লা, কায়েতপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল আলম, একই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল আউয়াল, রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক করিম পাঠান, কায়েতপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আলাউদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম রেজা, কায়েতপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলতাফ হোসেন, কায়েতপাড়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি মহিউদ্দিন মেম্বার, কায়েতপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী মহিলা লীগের সাবেক সভাপতি জোসনা মহিউদ্দিন, কায়েতপাড়া ১ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন, যুবলীগ নেতা বিল্লাল হোসেন, সাবেক ইউপি সদস্য নূর মোহাম্মদ, কায়েতপাড়া ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী স্বপ্না আক্তার,  তারাব পৌরসভা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মিনা আকতার, আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন, যুবলীগ নেতা আলমগীর হোসেন প্রমুখ। খাদ্যসামগ্রী বিতরণের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন, শেখ মোয়াজ্জেম হোসেন সাঈদ।