দিনাজপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:০০ পিএম
দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে চলাচলের রাস্তায় বেড়া দেওয়ায় চরম ভোগান্তির মুখে পড়েছে ৪৯ পরিবারের সদস্যরা। এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও রাস্তা খুলে দেওয়ার পদক্ষেপ নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একেএম শরিফুল হকের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন অবরুদ্ধ এলাকাবাসী। আবেদনে দেড় শতাধিক মানুষ স্বাক্ষর করে। এ ছাড়া বিক্ষোভ ও মানববন্ধনও করেছে তারা। এ নিয়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, উপজেলার সাইতাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম সাইতাড়া গ্রামের দবিরের বাজার-সংলগ্ন দরবেশপাড়ায় চলাচলের রাস্তার মাঝখান দিয়ে বেড়া দেওয়া হয়েছে। একই এলাকার কিনামদ্দীন ও তার ছেলে আকতার হোসেন এ বেড়া দিয়েছেন বলে অভিযোগ। কিনামদ্দীন পেশায় কৃষক। আর আকতার হোসেন পূর্বসাইতাড়া সুখিপীর দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক।
স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৫০ বছর ধরে রাস্তাটি দিয়ে চলাচল করে আসছিল এলাকাবাসী। অভিযুক্তরা ৫ বছর আগে রাস্তাটি বন্ধ করে পাকা বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করলে এলাকাবাসী বাধা দেয়। পরবর্তীতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যসহ স্থানীয়রা বসে বিষয়টি মীমাংসা করেন। সেই বৈঠকে অভিযুক্তরা বিকল্প রাস্তার জায়গা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। সেই মোতাবেক এলাকাবাসী ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে বিকল্প রাস্তাটি নির্মাণও করে। রাস্তা নির্মাণের পর সবাই স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করে আসছিল। কিন্তু গত ২৪ অক্টোবর বাঁশের বেড়া ও গাছ লাগিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেন তারা। এলাকাবাসী রাস্তা বন্ধ করার বিষয়ে জানতে চাইলে তাদেরকে মারধরসহ হামলা-মামলার হুমকি দেওয়া হয়। গত পাঁচ দিন ধরে ৪৯টি পরিবারের দেড় শতাধিক মানুষের চলাচল একবারেই বন্ধ। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
দবিরুল ইসলাম নামে স্থানীয় একজন বলেন, ‘প্রায় ৫০ বছর ধরে এলাকার লোকজন এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। হঠাৎ দেখি কিনামদ্দীন ও তার ছেলে রাস্তার মাঝে বেড়া দিয়েছে। এটা অমানবিক কাজ।’ মসজিদের ইমাম আলতাফ হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘদিন শান্তিপূর্ণভাবে চলাচল করা রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়ায় সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।’
সাইতাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সন্তোষ কুমার রায় বলেন, ‘রাস্তা বন্ধের বিষয়টি জানার পর এলাকার ইউপি সদস্য রাবিন্দ্র নাথসহ গ্রাম পুলিশকে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কিনামদ্দীন ও তার ছেলে আকতার হোসেন বিষয়টি আমলে নেয়নি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে কিনামদ্দীন ও তার ছেলে আকতার হোসেনের বাড়িতে গেলে তারা বাড়িতে নেই বলে জানান পরিবারের সদস্যরা। পরে মোবাইলে আকতার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এখন আমার সময় নেই, পরে কথা বলব।’
জানাতে চাইলে ইউএনও একেএম শরিফুল হক বলেন, ‘রাস্তা-সংক্রান্ত বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণে কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’