প্রবা প্রতিবেদক, ঢাকা ও গাজীপুর
প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২৩ ১৬:৫৯ পিএম
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:৫১ পিএম
গাজীপুরে বেতন বাড়ানোর দাবিতে পোশাকশ্রমিকদের বিক্ষোভের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক শ্রমিক মারা গেছেন। সোমবার (৩০ অক্টোবর) বেলা সোয়া তিনটায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, ওই ব্যক্তির বুকের ডান পাশে ও ডান হাতের কব্জিতে গুলি লেগেছে। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গাজীপুরের গাছা থানাধীন মালেকের বাড়ি এলাকায় সংঘর্ষ চলাকালে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গুলিবিদ্ধ হন রাসেল হাওলাদার নামের ওই পোশাকশ্রমিক।
এ বিষয়ে গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, ‘আমরা শুনেছি আহত এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।’
নিহত ২৫ বছর বয়সি রাসেল হাওলাদারের বাড়ি ঝালকাঠির সদর উপজেলায়। মালেকের বাড়ি এলাকার ডিজাইন এক্সপ্রেস লিমিটেডের ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। থাকতেন গাজীপুরের বাইপাস এলাকার মালেকের বাড়িতে।
রাসেলকে হাসপাতালে নিয়ে আসা সহকর্মী রন্জু মিয়া প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আজ আন্দোলন করার সময় রাসেল কাজ শেষে বাসায় ফিরছিল। আন্দোলনকে ঘিরে পুলিশ গুলি করলে রাসেলের বুকে গুলি লাগে। গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়।’
জানা গেছে, আজ সোমবার গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক ও তেলিচালা এলাকায় বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা বেতন বড়ানোর দাবিতে কর্মবিরতি ঘোষণা করে মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। একই দাবিতে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় কারখানার শ্রমিকরাও বিক্ষোভে নামেন। এরপর এ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী, কাশিমপুর, নাওজোড়, ভোগড়া, বাসন সড়ক, মালেকের বাড়ি, রওশন সড়ক ও চান্দান চৌরাস্তা এলাকায়।
আজ সকালে সপ্তম দিনের মতো গাজীপুর মহানগরীর নাওজোড়, নলজানী ও মালেকের বাড়ি এলাকা থেকে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। এ সময় বাসনসড়ক এলাকায় ১৫-১৬টি যানবাহন ভাঙচুর করে এবং পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল, সাউন্ট গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এ সময়ে বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হন। তাদের গাজীপুরের তায়রুননেছা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে এই মৃত্যুর খবরে শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কসহ বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন শ্রমিকরা।