কুড়িগ্রাম প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২৩ ২১:২৩ পিএম
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় মেয়াদোত্তীর্ণ সোনাহাট সেতুর পাটাতন ভেঙে যাওয়ায় সাময়িকভাবে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে সড়ক বিভাগ। এতে স্থলবন্দরগামী যানবাহন নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) সকালে সোনাহাট সেতুর স্টিলের অংশের পাটাতন ভেঙে একটি ট্রাক আটকে যায়। পরে অপরপ্রান্ত থেকে অন্য একটি ট্রাক এনে আটকে পড়া ট্রাকের সঙ্গে রশি বেঁধে টেনে তোলা হয়। পরবর্তীকালে ট্রাকসহ সকল ভারী যানবাহন চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয় সেতুটির দুই পাড়ে ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা লোকজন। এতে করে সেতুর দুই পাড়ে যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, ব্রিটিশ শাসন আমলে ১৮৮৭ সালে লালমনিরহাট থেকে ভারতের গৌহাটি পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন করা হয়। তারই অংশ হিসেবে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দুধকুমার নদের ওপর নির্মিত হয় ১২০০ ফুট দীর্ঘ সোনাহাট রেলসেতু। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সৈন্যদের প্রবেশ ঠেকাতে সেতুটির একটি অংশ ভেঙে দেওয়া হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার দীর্ঘদিন পর এরশাদ সরকারের আমলে সেতুটি মেরামত করে ভূরুঙ্গামারী দক্ষিণের তিন ইউনিয়ন ও কচাকাটা ও মাদারগঞ্জের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ সচল করা হয়।
নির্মাণকালে সেতুটির আয়ুষ্কাল নির্ধারণ করা হয়েছিল ১০০ বছর। সে মতে সোনাহাট সেতুর মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে অনেক আগেই। নড়বড়ে সেতুটি যেকোনো সময় ভেঙে পড়ে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। বন্ধ হয়ে যেতে পারে সোনাহাট স্থলবন্দরের যাবতীয় কার্যক্রম।
সোনাহাট স্থলবন্দরের আমদানি ও রপ্তানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রতিমাসে সড়ক বিভাগ সেতুটি মেরামত করে থাকে। এবার হয়তো করেনি, তাই পাটাতনটি ভেঙে গেছে। আর এই সেতু দিয়ে যদি পণ্যবাহী গাড়ি না চলে, তাহলে স্থলবন্দরের আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সেতুটি দিয়ে গতকাল রাতে ওভার লোডের ট্রাক যাওয়ার কারণে পাটাতন ভেঙে গেছে। মেরামতের কাজ চলছে। যান চলাচল স্বাভাবিক করতে দ্রুত কাজ করা হচ্ছে। এটা অনেক পুরোনো বেইলি ব্রিজ হওয়ায় মাঝেমধ্যেই ত্রুটি দেখা দিচ্ছে। এখানে আমাদের সাইনবোর্ড দেওয়া আছে, যাতে ১০ টনের অধিক লোড নেওয়া না হয়। তার পরও ৩০-৪০ টন লোড নিয়ে পণ্যবাহী গাড়ি চলছে। অতিরিক্ত লোডের কারণে এই সমস্যা হচ্ছে।