× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

রংপুরে যানজট নিরসনে পুলিশের নতুন উদ্যোগ

এহসানুল হক সুমন, রংপুর

প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:২৫ এএম

নগরীতে যানজট কমাতে এবং অবৈধ অটোরিকশা শনাক্ত করতে নিবন্ধিত অটোরিকশার সামনের অংশ নীল রঙ করা হচ্ছে। প্রবা ফটো

নগরীতে যানজট কমাতে এবং অবৈধ অটোরিকশা শনাক্ত করতে নিবন্ধিত অটোরিকশার সামনের অংশ নীল রঙ করা হচ্ছে। প্রবা ফটো

রংপুর নগরীতে যানজট নিরসনে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে মেট্রোপলিটন পুলিশ। নিবন্ধিত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নীল রঙ করা হচ্ছে। এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন হলে পুলিশ বৈধ-অবৈধ অটোরিকশা দ্রুত শনাক্ত করতে পারবে। এরপর নগরীতে অনিবন্ধিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধে শুরু হবে অভিযান। বাইরের অটোরিকশা নগরীতে ঢুকতে পারবে না। ফলে যানজট কমবে। পুলিশের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

সরেজমিনে দেখা যায়, রংপুর নগরীর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে রেইন ট্রি, মেহগনি গাছের ছায়ায় সারি সারি দাঁড়ানো নিবন্ধিত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। তাদের নীল রঙ করার কাজে ব্যস্ত এক দল শ্রমিক। কেউ রঙ প্রক্রিয়া করছে, কেউ অটোরিকশা সারিবদ্ধ করছে, কেউ রঙ স্প্রে করছে, কেউ রঙ করতে সহযোগিতা করছে। রঙ করার কাজে নিয়োজিত একজন শ্রমিক পিভিসি ব্যানারের একটি অংশ দিয়ে অটোরিকশার সামনের কাচ ঢেকে দিচ্ছে এবং অপরজন রঙ স্প্রে করছে।

প্রথমে সাদা রঙ করে অটোরিকশাকে মাঠে রোদে শুকাতে দেওয়া হচ্ছে। আধঘণ্টা পরই পুনরায় সেই অটোরিকশা নীল রঙ করা হচ্ছে। মাঠের এক প্রান্তে মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সদস্যদের উপস্থিতিতে অটোরিকশার মালিক-শ্রমিকনেতারা চালকদের বৈধ কাগজপত্রসহ রঙ করার খরচ বাবদ ৪০০ টাকা করে নিচ্ছেন। রঙ শেষে তাদের কাগজপত্র বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এভাবে ১৮ অক্টোবর থেকে প্রতিদিন শতাধিক অটোরিকশা রঙ করা হচ্ছে। এদিকে নিবন্ধিত অটোরিকশাগুলোকে কালেক্টরেট মাঠে এসে রঙ করার জন্য নগরজুড়ে মাইকিং করছে শ্রমিক-মালিকদের সংগঠন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধিত অটোরিকশাগুলো রঙ না করলে পরে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানানো হয় মাইকিংয়ে। 

কালেক্টরেট মাঠে অটোরিকশা রঙ করাতে আসা নগরীর সাতমাথা এলাকার অটোরিকশাচালক শাহ আলম বলেন, ‘আমাদের শহরে একটি অটোরিকশার লাইসেন্স দিয়ে তিন থেকে চারটি গাড়ি চলে। একজন অটোরিকশা চালিয়ে তার নম্বরপ্লেট নিবন্ধনহীন অটোরিকশাতে লাগায়। এতে করে সার্বক্ষণিক নগরীতে অটোরিকশার চাপ থাকে। এ ছাড়া বাইরের অনিবন্ধিত অটোরিকশা এসে শহরে যানজট বাড়িয়ে দেয়।’

অটোচালক বাবুল মিয়া বলেন, ‘লাইসেন্স ছাড়া অটোরিকশাগুলো সকালে নগরীতে ঢুকে পড়ে। পরে শহরের নিবন্ধিত অটোরিকশা চলাচল শুরু করলে যানজট লেগে যায়। এতে করে আমরা যে রাস্তায় তিনবার যাতায়াত করতাম সেখানে এখন একবার যাতায়াত করতে পারছি। আমাদের আয় কম হচ্ছে। যাত্রীরা অস্বস্তিতে যাতায়াত করছে।’

অটোরিকশাগুলো রঙ করার পর নগরীর আটটি প্রবেশমুখে চেকপোস্ট বসিয়ে নিবন্ধনহীন অটোরিকশা বন্ধ করলে এর সুফল তারা পাবেন বলে তিনি মনে করেন। 

আরেক চালক মকবুল হোসেন বলেন, ‘রঙ করার জন্য ৪০০ টাকা করে নিচ্ছে। আপাতত ৪০০ টাকা অনেক বেশি মনে হচ্ছে। তবে এর যে সুবিধা পাওয়া যাবে তা ৪০০ টাকার চার গুণ হবে।’ অপর অটোচালক ইউনুস আলী বলেন, ‘আমাদের অটোরিকশার পাশাপাশি লাইসেন্স থাকা চার্জার রিকশাকেও রঙ করতে হবে। তা না হলে নগরীতে যানজট কমবে না। নগরীতে অবৈধ অটোরিকশা চলাচল করলে তা ডাম্পিং করতে হবে।’ 

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের তথ্যমতে, রংপুর সিটি করপোরেশন পাঁচ হাজার ২৪০টি অটোরিকশা ও ৫ হাজার ১০৭টি চার্জার রিকশার লাইসেন্স দিলেও মূলত নগরীতে চলছে ৪০ হাজারের বেশি অটোরিকশা ও চার্জার রিকশা। প্রতিদিন সকালে মিঠাপুকুর, পীরগাছা, কাউনিয়া, গঙ্গাচড়া, বদরগঞ্জ, তারাগঞ্জসহ রংপুর সদরের বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে নিবন্ধনহীন অটোরিকশা ও চার্জার রিকশা নগরীতে প্রবেশ করছে। ফলে তীব্র যানজট হচ্ছে। 

তবে অনেকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, এর আগেও সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে অটোরিকশাগুলোকে হলুদ রঙ করা হয়েছিল। পরে সেই উদ্যোগ আলোর মুখে দেখেনি। জেলা সুজনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন বলেন, ‘নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত অটোরিকশা এবং চার্জার রিকশার কারণে নগরীতে চলাচল করা দুরূহ হয়ে পড়েছে। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন হলে নগরীতে আমরা স্বস্তিতে চলাচল করতে পারব।’ 

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, যানজট রংপুর নগরীর অন্যতম একটি সমস্যা। সমস্যা সমাধানে আমরা ডিজিটাল ট্রাফিক সিগন্যাল সিস্টেম চালু, যান চলাচলে বিকল্প সড়কের ব্যবহার, নিবন্ধিত অটোরিকশা রঙ করে চিহ্নিত করা, সড়কের কার্যকর ব্যবহার, পার্কিংয়ের স্থান নির্ধারণসহ নানামুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছি। যানজট নিরসনে জনপ্রতিনিধি, শ্রমিক-মালিক সংগঠন, ব্যবসায়ীসহ নগরবাসীর সহযোগিতা প্রয়োজন।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা