উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০২৩ ২১:০৪ পিএম
আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০২৩ ২১:৩০ পিএম
উলিপুরে গিদারি নদীর তীব্র স্রোতে সেতু ভেঙে পড়েছে। ছবিটি বৃহস্পতিবার উপজেলার পান্ডুল ইউনিয়নের কাগজিপাড়া গ্রাম থেকে তোলা। প্রবা ফটো
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় নদীর তীব্র স্রোতে নিচের মাটি সরে গিয়ে একটি সেতু ভেঙে পড়েছে। সেতুটির অবস্থান উপজেলার পান্ডুল ইউনিয়নের কাগজিপাড়া গ্রামে গিদারি নদীর ওপর। বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) সকালে সেতুটি ধসে পড়ে। এতে যান চলাচল বন্ধ হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে এলাকাবাসী। তাদের অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) খননকাজে পানির প্রবাহ বেড়ে সেতুটি ভেঙে গেছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৬৯ সালে গিদারি নদীর ওপর সেতুটি নির্মিত হয়। এরপর থেকে সেতুটির কোনো সংস্কার করা হয়নি। সেতুটি দিয়ে পান্ডুল ইউনিয়নের কাগজিপাড়া, আমভদ্রপাড়া, চাকলিরপাড়, জটিয়াপাড়াসহ আশপাশের গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ যাতায়াত করে। গত মার্চে পাউবো গিদারি নদী খনন শুরু করে। এতে নদীতে পানির প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় সেতুটি ভেঙে পড়েছে। এর আগে ১১ অক্টোবর সেতুর মাঝের পিলার ধসে যায়।
চাকলিরপাড় গ্রামের বাসিন্দা মোকছেদ আলী বলেন, ‘সেতুটি ভেঙে পড়ায় আমাদের সমস্যা হলো। যাতায়াত ও মালামাল পরিবহনে এলাকাবাসীকে বিড়ম্বনা পোহাতে হবে। কবে নতুন সেতু হবে, এই বিড়ম্বনার শেষ হবে, তা বলা মুশকিল।’ চলাচলের স্বার্থে দ্রুত একটি নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
আরেক বাসিন্দা রহিম মিয়া বলেন, ‘অনেক চেষ্টা করেও সেতুটি রক্ষা করা গেল না। সরকার যেন দ্রুত একটা সেতু করে দেয়। না হয় আমাদের ভোগান্তির শেষ থাকবে না।’
তবে পাউবোর দাবি, খাল খননের কারণে নয়। পানির স্রোতে সেতুর অ্যাবাটমেন্ট ও পায়ারের নিচের মাটি সরে গিয়ে সেতুটি ভেঙে পড়েছে। বালুভর্তি জিও ব্যাগ ও ভারী যান চলাচল বন্ধ করেও সেতুটি রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
পাউবো কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘খাল খননের জন্য নয়, বরং নিচের একটি অংশ দিয়ে পানিপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছিল। ফলে পানির উচ্চতা বেড়ে তীব্র স্রোতের কারণে পিলারের নিচের মাটি সরে গিয়ে সেতুটি ঝুঁকিতে পড়েছিল। তারপরও আমরা জিও ব্যাগ ফেলে এটি রক্ষার চেষ্টা করেছিলাম।’
পান্ডুল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জমির উদ্দিন জানান, স্বাধীনতার আগে নির্মাণ করা সেতুটি সংস্কারের অভাবে ধসে পড়েছে। এতে ইউনিয়নের ছয় গ্রামের মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হবে। মূলত ভারী বৃষ্টিতে উজানে পানি জমে স্রোতের তীব্রতা বেড়ে যায়। এতে সেতুর ভাটির চেয়ে উজানে পানির উচ্চতা প্রায় তিন ফুট বেশি হয়। ফলে স্রোতে সেতুর নিচের মাটি সরে গিয়ে ভেঙে পড়েছে। পারাপারের জন্য অস্থায়ী সাঁকো তৈরিতে এক সপ্তাহ লাগবে বলেও জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘সেতুটি অনেক পুরোনো। ঝুঁকিতে পড়ার পর আমরা যাতায়াত নিয়ন্ত্রণসহ কিছু সাবধানতা অবলম্বন করেছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেতুটি ধসে পড়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী নতুন সেতু নির্মাণের প্রাক্কলন তৈরি করে কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবেন। অনুমোদন হলে দ্রুত নির্মাণকাজ শুরু করা হবে।’