বাগেরহাট প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০২৩ ২০:০৩ পিএম
আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০২৩ ২০:৪১ পিএম
হজরত খানজাহান আলী (র.)-এর মাজারের দিঘির মারা যাওয়া কুমির। প্রবা ফটো
বাগেরহাটের ঐতিহাসিক হজরত খানজাহান আলী (র.) -এর মাজারের দিঘির একটি কুমিরকে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে দিঘির দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে পুরুষ (বড়) কুমিরটির মরদেহ ভাসতে দেখা যায়।
পুলিশ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, উপজেলা প্রশাসন, মাজার কর্তৃপক্ষ ও খাদেম ঘটনাস্থলে গেলে বিকালে জলাশয় থেকে কুমিরটিকে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়। বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম আজিজুল ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ’দুটি কুমিরের মধ্যে বড় কুমিরটি মারা গেছে। প্রাণীটির ময়নাতদন্ত করা হবে।’
মাজারের প্রধান খাদেম শের আলী ফকির বলেন, ’এই কুমির মেরে ফেলা হয়েছে। আমি সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাজারের পাশের এক বাসিন্দা বলে, ’এখানে কুমির নিয়ে ব্যবসা চলে। দিঘির কূলের অংশে বাধ দিয়ে আটকে ছোট ছোট পুকুর করা হয়েছে। খাদেমরা এসব করেছে। এসব কুমির পুকুরে এনে আটকে রাখা হয়। দর্শনার্থীরা কুমির দেখতে এলে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে। এক ঘাটে কুমিরকে রাখতে ঘুমের ওষুধ, চেতনানাশকসহ নানান ধরনের ওষুধও প্রয়োগ করা হয়। কুমিরটি মোস্তফা ফকিরের বাড়ির পুকুরে মারা যায়। পরে তারা টেনে দিঘির মধ্যে নিয়ে যায়।’
মোস্তফা ফকিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ’মাঝেমধ্যে আমার ঘাটে কুমিরটি আসা-যাওয়া করে। এজন্য অন্য যারা আছে তারা বিষয়টি সহ্য করতে না পেরে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। এ ধরনের ঘটনায় আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমাকে ফাঁসানোর জন্য তারা অভিযোগ করেছে।’
খ্রিস্টীয় ১৪ শতকের প্রথম দিকে নিজের শাসনামলে হজরত খানজাহান আলী (র.) এই দিঘিতে ‘কালাপাহাড়’ ও ‘ধলাপাহাড়’ নামে দুটি কুমির ছাড়েন বলে কথিত আছে। ২০১৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি মাজারের দিঘির শতবর্ষী কুমিরের শেষ বংশধর ‘ধলাপাহাড়’ মারা যায়।
২০০৫ সালে ভারতের মাদ্রাজ ক্রোকোটাইল ব্যাংক থেকে ওই কুমির এনে মাজারের পুকুরে ছাড়া হয়েছিল।