বরগুনা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:৪১ এএম
আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০২৩ ১৬:১২ পিএম
ভবনের পাইলের কাজ সম্পন্ন হলেও নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধির কারণে কাজটি বন্ধ রাখে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রবা ফটো
বরগুনা জেলায় পাঁচ বছরেও নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়নি ছয়টি মডেল মসজিদের। জমিসংক্রান্ত মামলা, পুরোনো স্থাপনা অপসারণ, ঠিকাদারদের কাজের ধীরগতি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির অজুহাত এবং নানা জটিলতায় শেষ করা হয়নি এসব মসজিদের কাজ।
বরগুনা গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের শুরুর দিকে জেলায় সাতটি মডেল মসজিদ নির্মাণের লক্ষ্যে দরপত্র আহ্বান শেষে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয় গণপূর্ত বিভাগ। যার কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল (দেড় বছরে) ২০২০ সালের শেষের দিকে। কিন্তু মেয়াদ শেষের তিন বছর হলেও নানা অজুহাতে এখনও কাজ শেষ হয়নি বরগুনার মডেল মসজিদের।
বরগুনা সদর উপজেলা পরিষদের সামনে মডেল মসজিদটি নির্মাণের কাজ শুরু করে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডালি অ্যান্ড গাজী কনস্ট্রাকশন জয়েন্ট ভেঞ্চার। কিন্তু ভবনের পাইলের কাজ সম্পন্ন হলেও নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধির কারণে কাজটি বন্ধ রাখে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
স্থানীয় মুসল্লি জসিম বলেন, ‘আমাদের এখানে একটি ভালো ভবন ছিল কিন্তু মডেল মসজিদ হওয়ার জন্য সেটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে একটি টিনশেড ঘর তুলে সেখানে নামাজ আদায় করা হচ্ছে। কিন্তু জায়গাস্বল্পতার কারণে মসজিদের বাইরে নামাজ আদায় করতে হয়।’
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের তদারকির দায়িত্বে থাকা মো. মনিরুজ্জামান জামাল বলেন, একটি পুরোনো মসজিদ, প্রান্তিক শেড ও গাছ থাকায় তা অপসারণের জন্য সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে একাধিকবার অবহিত করলেও তা অপসারণ করতে সময় লাগে ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত। অন্যদিকে ২০২০ সালে সংশ্লিষ্ট জমির মালিকানা দাবি করে একটি মামলা হওয়ায় কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। সময়ের দীর্ঘসূত্রতায় নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় কাজ করা অসম্ভব হয়ে যায়।
অন্যদিকে জেলার পাথরঘাটা ও তালতলী উপজেলার দুইটি মসজিদের কাজ ধীরগতিতে চলতে থাকলেও জমিসংক্রান্ত জটিলতার কারণে এখনও শুরু হয়নি বামনা ও আমতলী উপজেলার দুটি মসজিদের কাজ।
পাথরঘাটা মসজিদের ইমাম বলেন, ‘আমাদের মডেল মসজিদের কাজ চলমান তবে সেটা ধীরগতিতে চলছে। তবে কবে মুসল্লিদের নিয়ে নামাজ আদায় করতে পারব সেটা জানি না।’
তালতলী মসজিদের বৃদ্ধ মুসল্লি আ. মালেক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নাকি মোগো মডেল মসজিদ দেবে, শুধু হুইন্যাই গেলাম চোখে দেখতে পারমু না মনে হয়। বুড়া বয়সে সুন্দর একটা মসজিদে যেনো সিজদা দিয়ে মরতে পারি! শেখ হাসিনার কাছে এটা দাবি।’
এ বিষয়ে বরগুনা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুব্রত বিশ্বাস জানান, তিনটি মসজিদের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে নতুন দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে এবং অন্য একটি (আমতলী) মসজিদের জমিসংক্রান্ত জটিলতা এখনও নিরসন হয়নি।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, জমিসংক্রান্ত জটিলতা ইতোমধ্যেই সমাধান হয়েছে, তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন তিনি।