কমলগঞ্জের মুন্সীবাজার ডাকঘর
সাদিকুর রহমান সামু, কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার)
প্রকাশ : ১৩ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৫৫ এএম
আপডেট : ১৩ অক্টোবর ২০২৩ ১১:৪৭ এএম
কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সীবাজার ডাকঘরের জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন। প্রবা ফটো
তথ্যপ্রযুক্তির অভাবনীয় উন্নয়নে যোগাযোগের বিশ্বসমাদৃত ডাক ও ডাকপিয়ন আজ বিলুপ্তির পথে। খুব বেশি দিন আগের কথা নয়, প্রিয়জনের একটি চিঠির জন্য কাকডাকা ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ডাকপিয়নের অপেক্ষায় পথ চেয়ে বসে থাকতেন স্বজনরা। তার চিৎকারে যেন ঘুম ভাঙত, আসত প্রিয় মানুষের চিঠি। এসব এখন অতীত!
তবে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির যুগেও পোস্ট অফিসের প্রয়োজনীয়তা একেবারে ফুরায়নি। এখনও সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের প্রয়োজনীয় চিঠিপত্র পোস্ট অফিসের মাধ্যমে আদান-প্রদান হয়। সরকারও পোস্ট অফিসের আধুনিকায়নে নানা কার্যক্রম নিয়েছে। ব্যতিক্রম হচ্ছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সীবাজার ডাকঘর। সেখানে আধুনিকায়ন তো দূরের কথা, পুরোনো পদ্ধতিতেও কাজ চালানো দুষ্কর হয়ে পড়েছে। জরাজীর্ণ একটি সেমিপাকা ঘরে ঝুঁকি নিয়ে চলছে কার্যক্রম। এ ছাড়া চারদিকে ময়লা-আবর্জনা ফেলায় দুর্গন্ধে নাকে রুমাল চেপে যেতে হয় পোস্ট অফিসে। দীর্ঘদিন এ অবস্থা হলেও সংস্কার কিংবা নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেই।
উপজেলার মুন্সীবাজারের দক্ষিণ পাশে ডাকঘরটির অবস্থান। সরেজমিন দেখা গেছে, টিনের চালায় মরিচা ধরে অসংখ্য ছিদ্র হয়ে গেছে। বৃষ্টি হলেই চুইয়ে পড়ে পানি। এতে প্রয়োজনীয় চিঠিপত্র সংরক্ষণে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে কর্তৃপক্ষের। নষ্ট হচ্ছে ভবনের আসবাব। দেওয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে। কক্ষের মেঝের ইট-খোয়া উঠে সৃষ্টি হয়েছে গর্তের। দরজা-জানালা পুরোনো হওয়ায় নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। বৈদ্যুতিক তার একেবারে বেহাল, যা বিপজ্জনক অবস্থায় আছে। ডাকঘরের সাইনবোর্ডটি এমন জায়গায় রাখা হয়েছে, তা সহজে চোখে পড়ে না। ভবনটি দেখে মনে হয় পরিত্যক্ত। অথচ এই ভবনেই ঝুঁকি নিয়ে বছরের পর বছর চলছে কার্যক্রম।
স্থানীয় বাসিন্দা সামেয় আহমেদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে মুন্সীবাজার পোস্ট অফিসটির এমন নাজেহাল অবস্থা দেখছি। সময়ের ব্যবধানে সরকারের অনেক দপ্তরের অবকাঠামো পরিবর্তন হলেও গুরুত্বপূর্ণ অফিসটি কোনো উন্নয়ন হয়নি। এটি দুঃখজনক।’ বললেন পল্লী চিকিৎসক পরিতোষ শর্মাও। তাদের দাবি পোস্ট অফিসটি দ্রুত সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ করা হোক।
জানতে চাইলে উপজেলা পোস্টমাস্টার নারায়ণ চন্দ্র পাল বলেন, ‘মুন্সীবাজার ডাকঘরটি সিলেট বিভাগীয় ডাক অফিস থেকে তদারকি করা হয়।’
জেলা ডাক বিভাগের সহকারী পোস্টমাস্টার জেনারেল আব্দুল কাদের বলেন, ‘ব্রিটিশ আমলে একজনের দান করা জমির ওপর ডাকঘরটি নির্মিত। পরে ডাক বিভাগের নামে জায়গাটি না হওয়ায় নতুন ভবন নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। শুনেছি জায়গা নিয়ে মামলা চলছে। ডাকঘরের নামে জায়গা না পেলে হয়তো নতুন ভবন নির্মাণ সম্ভব নয়।’