কক্সবাজার অফিস
প্রকাশ : ১২ অক্টোবর ২০২৩ ২৩:১৪ পিএম
আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২৩ ২৩:১৪ পিএম
কক্সবাজারের প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য সরিয়েছে নিচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘কেওক্রাডং বাংলাদেশ’। প্রবা ফটো
পর্যটন মৌসুমের শুরুতেই কক্সবাজারের প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন থেকে সাত হাজার কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য সরিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘কেওক্রাডং বাংলাদেশ’। গত বছরের মতো এবারও ৯-১১ অক্টোবর টানা তিন দিন দ্বীপের অলিগলি ও সৈকতের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্লাস্টিক বোতল, খাদ্যদ্রব্যের প্যাকেট, নানা ধরনের অপচনশীল ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহে নেতৃত্ব দেয় সংগঠনটি। এ ছাড়া ২০১০ সাল থেকে প্রতিবছর নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে দ্বীপে আন্তর্জাতিক সংস্থা ওশান কনজারভেন্সি ও কোকাকোলার সহযোগিতায় বড় ধরনের পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করে আসছে সংগঠনটি।
সংগঠন ও ওশান কনজারভেন্সি বাংলাদেশের সমন্বয়কারী মুনতাসির মামুন জানান, সংগৃহীত প্লাস্টিক বর্জ্য ১৫০টি বস্তায় ভরে দুটি ট্রলারে সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফে নিয়ে আসা হয়। পরে ট্রাকযোগে টেকনাফ পৌরসভার বর্জ্য ডাম্পিং স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়।
মুনতাসির মামুন বলেন, ‘সামুদ্রিক আবর্জনা বা মেরিন ডেবরিজ বর্তমান দুনিয়ায় বহুল আলোচিত। মেরিন ডেবরি থেকে যে মাইক্রোপ্লাস্টিক/মাইক্রোফাইবার বা যেকোনো ধরনের প্লাস্টিকের কণা সামুদ্রিক পরিবেশ তথা যেকোনো পরিবেশের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। এতে আমাদের খাদ্যশৃঙ্খলে প্লাস্টিকের উপস্থিতি, মানবদেহে, রক্তে, মলে এমনকি মাতৃদুগ্ধেও প্লাস্টিকের কণা পাওয়া যাচ্ছে। এর ভয়াবহতার পরিমাপ আমাদের এখনও জানা সম্ভব হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক বর্জ্যর গন্তব্য হয় যেকোনো জলাধার। আর সেন্টমার্টিনের মতো ছোট দ্বীপে পড়ে থাকা প্লাস্টিক যদি মূল ভূখণ্ডে নিয়ে আসা না হয়, তবে এর পরিণাম শুধু এই দ্বীপের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, ছড়িয়ে পড়বে বঙ্গোপসাগরে। আমাদের ক্ষুদ্র প্রয়াস ছিল সামর্থ্য অনুযায়ী সেই পরিণামকে যতটা সম্ভব সীমিত করা।’
স্থানীয় বাসিন্দা নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে বেড়াতে এসে ফেলে যায় নানা রকম প্লাস্টিক বর্জ্য। সঙ্গে যোগ হয় স্থানীয়দের ব্যবহৃত পলিথিনসহ অপচনশীল বর্জ্য। এসব বর্জ্যের ভারে হুমকিতে পড়েছে ছোট্ট এই দ্বীপের প্রাণ-প্রকৃতি। ভ্রমণ মৌসুম শুরুর ঠিক আগে প্রতিবছর সমুদ্রসৈকত আর লোকালয়ের যত্রতত্র পড়ে থাকা এসব প্লাস্টিক বর্জ্য সরানোর মতো মহৎ কাজ করছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কেওক্রাডং বাংলাদেশের সদস্যরা। তাদের এ কাজ সত্যিই প্রশংসনীয়।’
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্যানেল চেয়ারম্যান আক্তার কামাল বলেন, ‘সেন্টমাটিন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার উদ্যোগটি খুবই প্রশংসনীয়। সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে এলে অবশ্যই সফল হওয়া সম্ভব। নিয়মিত এ ধরনের কর্মসূচির আয়োজন করলে দ্বীপের পরিবেশের উপকার হবে।’