× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সংবাদ প্রকাশের জের

জলবায়ু উদ্বাস্তু আশ্রয়ণ প্রকল্পে চালু হলো সরকারি প্রাথমিক

কক্সবাজার অফিস

প্রকাশ : ১২ অক্টোবর ২০২৩ ২২:৪০ পিএম

আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২৩ ২২:৪৩ পিএম

কক্সবাজারের খুরুশকুলের বাঁকখালী নদীর তীরে জলবায়ু উদ্বাস্তু আশ্রয়ণ প্রকল্পে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু হওয়ায় স্বল্প পরিসরে পাঠদান শুরু। প্রবা ফটো

কক্সবাজারের খুরুশকুলের বাঁকখালী নদীর তীরে জলবায়ু উদ্বাস্তু আশ্রয়ণ প্রকল্পে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু হওয়ায় স্বল্প পরিসরে পাঠদান শুরু। প্রবা ফটো

জাতীয় দৈনিক প্রতিদিনের বাংলাদেশে সংবাদ প্রকাশের পর কক্সবাজারের খুরুশকুলের বাঁকখালী নদীর তীরে জলবায়ু উদ্বাস্তু আশ্রয়ণ প্রকল্পে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু হয়েছে। গত বুধবার থেকে অস্থায়ীভাবে চালু হওয়া এই বিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) স্বল্প পরিসরে পাঠদান শুরু হয়েছে। 

এটি দেশের প্রথম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, যা আশ্রয়ণ প্রকল্পে চালু হলো। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নিদের্শনায় দ্রুত সময়ের মধ্যে এই বিদ্যালয়টি চালু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ।

খুরুশকুল জলবায়ু উদ্বাস্তু আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকার কারণে যেখানে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে সরকার চালু করে শিখন কেন্দ্র নামের ১০টি কেন্দ্র। সমাজ কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থা- স্কাসের অধীনে ওইসব কেন্দ্রে ৩০০ শিশুকে পাঠদান করানো হতো। এ ব্যাপারে গত ৩০ আগস্ট প্রতিদিনের বাংলাদেশে একটি সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হয়। এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে দৃষ্টিগোচর হলে গত ২২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া জলবায়ু উদ্বাস্তু আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে আসেন। ওই সময় তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু করার আশ্বাস দিয়েছিলেন।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ জানান, খুরুশকুল ইউনিয়নের বাঁকখালী নদীর তীরবর্তী এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের ভিত্তিতে জলবায়ু উদ্বাস্তুদের জন্য তৈরি করা হয় বিশেষ এই আশ্রয়ণ প্রকল্পটি। ২০২০ সালের ২৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রী এটি উদ্বোধন করেন। যেখানে ১৯টি ভবনে এরই মধ্যে আশ্রয় নিয়েছেন ৬০০ পরিবারের ৪ হাজার মানুষ। যেখানে আরও ৬০টি ভবন নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে। আগামী ২ মাসের মধ্যে এখানে আরও কয়েক শত পরিবারের আড়াই থেকে ৩ হাজার মানুষ আশ্রয় পাবেন। প্রকল্প এলাকাটির আশপাশের ৩ কিলোমিটার এলাকায় কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল না। যার কারণে এখানে আশ্রয় নেওয়া শিশুরা প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দৃষ্টিগোচর হওয়ার পর ১৫ অক্টোবরের মধ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চালুর জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়। নির্দেশনার প্রেক্ষিতে ১১ অক্টোবর অস্থায়ীভাবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি চালু করা হয়েছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব জানান, প্রকল্প এলাকায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং কমিউনিটি ক্লিনিক করার জন্য জমি খালি রয়েছে। প্রাথমিকভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সেনাবাহিনীর পক্ষে প্রকল্প এলাকার সাইক্লোন শেল্টারটি অস্থায়ীভাবে ব্যবহারের অনুমতি পাওয়া গেছে। ওই সাইক্লোন শেল্টারে অস্থায়ীভাবে চালু করা হলো প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। যেখানে এরই মধ্যে ৫০ শিক্ষার্থী পাওয়া গেছে। একজন প্রধান শিক্ষকসহ পাঁচজনকে পদায়ন করে বিদ্যালয়ের পাঠদান শুরু হয়েছে। জামালপুর থেকে বিদ্যালয়ের জন্য বেঞ্চসহ নানা উপকরণ আনা হয়েছে। এখানে আশ্রয়ণ প্রকল্পের পরিবারের শিশু ছাড়াও আশপাশের এলাকার শিশুদের ডিসেম্বরে ভর্তি করানো হবে। 

খুরুশকুল জলবায়ু উদ্বাস্তু পুনর্বাসন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামের এই প্রতিষ্ঠানটি অস্থায়ীভাবে চালু হলেও দ্রুত সময়ের মধ্যে ভবন নির্মাণসহ অন্য সুবিধা নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন সচিব ফরিদ আহাম্মদ। তিনি জানান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে এরই মধ্যে চিঠি পাঠানো হয়েছে। প্রকল্প এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য নির্ধারিত স্থানে ছয়তলাবিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণের কাজ দ্রুত শুরু করতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নেবে। 

বৃহস্পতিবার খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পের সাইক্লোন শেল্টারে গিয়ে বিদ্যালয়ে পাঠদানের দৃশ্য দেখা গেছে। যেখানে শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাচ্ছেন শিক্ষকরা।

বিদ্যালয়টি দ্রুত সময়ের মধ্যে চালু করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন জানান, প্রকল্প এলাকায় প্রাথমিক জরিপের পর অল্পসংখ্যক শিশু এনে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এলাকাটিতে পরিচালিত জরিপে ভর্তি উপযোগী ৩ শতাধিক শিশু পাওয়া গেছে। এটা আরও বাড়তে পারে। 

তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী শাহাব উদ্দিনের মা ফাতেমা বেগম বলেন, আমাদের আদিনিবাস কুতুবদিয়া উপজেলার আলী আকবর ডেইল এলাকায়। বিগত ১৯৯১ সালের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে আমরা ভিটেমাটি হারিয়ে কক্সবাজার শহরের কুতুবদিয়া পাড়ায় সরকারি খাস জমিতে আশ্রয় নিয়েছি। কিন্তু কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিকমানে রূপান্তরিত করার কাজে আমাদের আশ্রয়ের ঠিকানাও অধিগ্রহণ করে সরকার। পরে খুরুশকূল আশ্রয়ণ প্রকল্পে সরকার আমাদের মাথা গোঁজার ব্যবস্থা করে।

তিনি বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পে আমাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই হলেও আশপাশে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকায় সন্তানদের পড়ালেখার সুযোগ ছিল না। তা ছাড়া প্রতিদিন ৩ থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে গিয়ে লেখাপড়া ছিল কষ্টকর ব্যাপার। এ কারণে স্কুলে যাওয়ার মতো উপযোগী অনেক শিশু পড়ালেখা থেকে ঝরে পড়ার ঝুঁকিতে ছিল। এখন সরকারি উদ্যোগে স্কুল প্রতিষ্ঠা হওয়ায় সেই আশঙ্কা দূর হয়েছে।’

দ্বিতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী আব্দুর রহিমের মা বিলকিস আক্তার জানান, তার স্বামী দিনমজুর। আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে গিয়ে তার ছেলের পড়ালেখা করা ছিল খুবই কষ্টকর। এ কারণে তার ছেলের পড়ালেখা বন্ধ ছিল। প্রকল্প এলাকায় সরকারিভাবে স্কুল চালু হওয়ায় তার ছেলেকে ভর্তি করে দিয়েছেন। এখন অন্য শিশুদের মতো তার ছেলেও পড়ালেখা করতে পারবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা