গাজীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১২ অক্টোবর ২০২৩ ২২:২১ পিএম
আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২৩ ২২:২৩ পিএম
গাজীপুর সদরের ভবানীপুর বাজারে পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগে প্রকাশ্যে এক মানসিক ভারসাম্যহীন ও শারীরিক প্রতিবন্ধীকে বেধড়ক পিটিয়েছেন এক যুবলীগ নেতা। প্রবা ফটো
গাজীপুর সদরের ভবানীপুর বাজারে পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগে প্রকাশ্যে এক মানসিক ভারসাম্যহীন ও শারীরিক প্রতিবন্ধীকে বেধড়ক পিটিয়েছেন এক যুবলীগ নেতা। বুধবার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটে। পরে এর ভিডিও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
অভিযুক্ত ব্যক্তি হলেন সদর উপজেলার ভাওয়ালগড় ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের যুবলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক সোহেল রানা। মারধরের শিকার মানসিক ভারসাম্যহীন ওই ব্যক্তির নাম লিটন (৪০)। তবে তার বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লিটন শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী। তিনি ভবানীপুর বাজার এলাকায় ঘোরাফেরা করেন। বাজারের লোকজন তাকে খেতে দিলে খান, না দিলে না খেয়ে তার দিন চলে। বুধবার সন্ধ্যায় যুবলীগ নেতা সোহেল রানা লিটনের কাঠের তৈরি ক্র্যাচ (যাতে ভর দিয়ে তিনি চলেন) কেড়ে নেন। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় ওই নেতা ক্র্যাচ দিয়ে লিটনকে বেধড়ক পেটান। পরে পেটানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওতে দেখা যায়, ক্র্যাচের ওপর ভর দিয়ে সড়কে চলাচল করছিলেন লিটন। এ সময় ওই যুবলীগ নেতা এসে লিটনকে বকাঝকা শুরু করেন। পরে লিটনের হাতে থাকা ক্র্যাচটি কেড়ে নিলে সড়কের ওপর পড়ে যান। এ অবস্থায় ক্র্যাচ দিয়ে যুবলীগ নেতা লিটনকে বেধড়ক পেটাতে শুরু করেন। এ সময় স্থানীয় এক ব্যক্তি বাধা দিতে চেষ্টা করেন। অপরদিকে লিটন মাটিতে বসা দুই হাত দিয়ে ক্র্যাচের আঘাত ঠেকানোর চেষ্টা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আরও বেশি পেটাতে শুরু করেন সোহেল রানা। একপর্যায়ে স্থানীয় ব্যক্তি চলে যান। একা মাটিতে পড়ে থেকে লিটন মার খেয়ে একসময় চুপসে যান। পরে ক্র্যাচ দিয়ে আরও কয়েকবার আঘাত করে ঘটনাস্থল থেকে তিনি চলে যান।
এ বিষয়ে যুবলীগ নেতা সোহেল রানা বলেন, ‘ওই ব্যক্তি নেশাখোর, চুরিসহ এলাকার বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। সে জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের কয়েকজন নেতার ছবি সংবলিত সাঁটানো পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছে। এ বিষয়ে আমি তাকে জিজ্ঞেস করলে সে অন্য এক ব্যক্তির নাম বলে জানায়, ওই ব্যক্তির কথায় সে পোস্টার ছিঁড়েছে। পরে ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করলে সে অস্বীকার করে। এতে আমি তাকে চড়-থাপ্পড় দিয়ে ছেড়ে দেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বুধবার সন্ধ্যায় ভবানীপুর বাজারে আমি লিটনের সামনে পড়লে সে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুরু করে। তুই আমাকে মেরেছিস- ইত্যাদি বলে আমাকে হুমকি দেয়। পরে আমি তাকে চড়-থাপ্পড় দিয়ে ছেড়ে দিই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক এসএম আলতাফ হোসেন বলেন, গাজীপুরের সদর উপজেলার ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি ভেঙে দিয়েছি। তাই বর্তমানে প্রচার সম্পাদক পদে থাকার কোনো সুযোগ নেই। তিনি হয়তো ভেঙে দেওয়া কমিটির পরিচয় দিয়ে চলছেন। আমরা বিষয়টির খোঁজ নিয়ে দেখব।
এ বিষয়ে জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহতাব উদ্দিনকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।