× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

দুদকের গণশুনানিতে জমি অধিগ্রহণ শাখা নিয়ে অভিযোগের পাহাড়

কক্সবাজার অফিস

প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০২৩ ১৮:৫৭ পিএম

আপডেট : ১১ অক্টোবর ২০২৩ ১৯:৫৩ পিএম

দুদকের গণশুনানিতে জমি অধিগ্রহণ শাখা নিয়ে অভিযোগের পাহাড়

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের জমি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখা নিয়ে যেন ভুক্তভোগীদের অভিযোগের শেষ নেই। জেলাজুড়ে সরকারের চলমান মেগা প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ হওয়ার পর সেই টাকা আদায় করতে গিয়ে পদে পদে হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। এখানে কার জমির টাকা কে তুলে নিয়ে গেল তারও সঠিক ব্যাখ্যা নেই। 

বুধবার (১১ অক্টোবর) কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আয়োজিত গণশুনানিতে এসব অভিযোগ তুলে ধরা হয়। সকাল ১০টায় কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরির শহীদ সুভাষ হলে  অনুষ্ঠিত হয়েছে এই গণশুনানি। 

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণশুনানির আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি দুদক কমিশনার (তদন্ত) মো. জহিরুল হক বলেন, ’আমাদের দেশটা খুব বেশি উদ্ভট। এখানে অশিক্ষিত মানুষগুলো বিদেশ গিয়ে অত্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠায়। আমাদের রেমিট্যান্স বাড়ে। আর শিক্ষিত মানুষ দেশের টাকা লুট করে বিদেশে টাকা পাচার করে। যে টাকা জমা হয় সুইস ব্যাংকে। এসব শিক্ষিত দুর্নীতিবাজদের প্রকাশ্যে ঘৃণা করতে হবে।’

তিনি বলেন, ’সব দুর্নীতি নিয়ে দুদক কাজ করে না। দুদক যেসব অভিযোগ আমলে নিয়ে কাজ করে, তার বেশিরভাগই সরকারি প্রতিষ্ঠান ঘিরে। এর বাইরে মানি লন্ডারিং বিষয়ে কাজ করে। অপরাপর অপরাধের ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা কাজ করে। দুদক আমলে নেওয়া মামলায় এ পর্যন্ত দুর্নীতির ক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ ও মানি লন্ডারিংয়ের ক্ষেত্রে শতভাগ সফলতা পেয়েছে।’ 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে দুদক মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আকতার হোসেন, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম, দুনীতি প্রতিরোধ কমিটির জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন বকুল বক্তব্য দেন।

এর পরই শুরু হয় জমা হওয়া ৬৯টি অভিযোগের বিষয়ে গণশুনানি। যেখানে মঞ্চ উঠে ভুক্তভোগীরা উপস্থাপন করে হয়রানি, অনিয়ম, দুর্নীতির নানা অভিযোগ। আর একই মঞ্চে বসে এসব অভিযোগের উত্তর দেন অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। উভয় পক্ষের বক্তব্যের পর ছিল দুদকের নিজস্ব মতামতও।

শুনানিতে উপস্থাপিত অভিযোগের বেশিরভাগই কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ বা এলএ শাখা নিয়ে। 

যেখানে কক্সবাজার শহরের কলাতলী এলাকার আমিন নামের এক প্রবাসীর স্ত্রী মুন্নী আকতার বলেন, ’সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে জায়গা কিনি আমি। অথচ জমি অধিগ্রহণ হওয়ার ওই জমির তথ্য দিয়ে টাকা উত্তোলন করে নিয়ে গেছেন ইদ্রিস নামের এক ব্যক্তি।’

অভিযোগকারী মুন্নীর কাগজপত্র দেখে দুদক কমিশনার জহিরুল হক বলেন, ’এই জমির দুজন ক্রেতা। একজন আমিন ও অপরজন ইদ্রিস। আমিন এই জমির প্রথম ক্রেতা। প্রথমজন টাকা পেলেন না আর দ্বিতীয়জন পেলেন।’ 

অভিযোগকারীকে বৃহস্পতিবার কাগজপত্র নিয়ে দেখা করতে বলেন জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান।

শুনানিতে মহেশখালীর মাতারবাড়ী এলাকার বেলাল হোসেন জানান, তিনি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে তার বাবার সম্পত্তির টাকার জন্য ফাইল জমা দেন। অনেকে শুনানিতে অংশগ্রহণ করে আশ্বাস দিয়েছিলেন টাকা দেওয়ার। ডিসি ও এডিসিও একই আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু টাকা পাননি।

এলএ শাখার কর্মকর্তা সুভাশিষ চাকমা এ-সংক্রান্ত দেওয়ানি মামলা থাকায় জটিলতার কারণে টাকা দেওয়া যাচ্ছে না বলে দাবি করেন। কিন্তু অভিযোগকারী তা মানতে রাজি নন। তিনি বলেন, দেওয়ানি মামলায় পক্ষভুক্ত নন তিনি।

জেলা প্রশাসক তাকে দেখা করতে বলেন। কিন্তু বেলাল দাবি করেন, তিনি জেলা প্রশাসকের কাছে আগেই গিয়েছিলেন। জেলা প্রশাসক তাকে সার্ভেয়ারের কাছে যেতে বলেন। কিন্তু সার্ভেয়ারের কাছে যেতে বলার বিষয়টি অস্বীকার করেন জেলা প্রশাসক। জেলা প্রশাসকের দাবি, তিনি সার্ভেয়ারের কাছে যেতে বলেননি, তিনি বলেছিলেন এডিসি অথবা এলএওর কাছে যেতে।

এ সময় দুদক কমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জেলা প্রশাসক স্বীকার করেন জমি অধিগ্রহণ ও টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু কিছু দুর্নীতি হচ্ছে। ডিসি বলেন, ’ক্ষতিপূরণের টাকা বিতরণে স্বচ্ছতা জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য যা যা করার প্রয়োজন সব করা হচ্ছে।’ দুদক কমিশনার জহিরুল হক এ ব্যাপারে আরও সতর্ক হওয়ার আহ্বান করেন।

শুনানিতে অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে সাদ্দাম হোসেনের কাছে ৩০ শতাংশ ঘুষ দাবি এবং ঘুষ না দেওয়ায় ৫২ লাখ টাকা অপর তিনজন ব্যক্তিকে দিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়। পেকুয়ার মগনামা এলাকার নুরুল আলমকে এলএও সুভাশিষ চাকমা শুনানি করার পর সার্ভেয়ারের কাছে যেতে বলেন। কিন্তু সার্ভেয়ারের শর্ত না মানায় অপরজনকে টাকাগুলো দিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেন। 

একইভাবে ঈদগাঁওর প্রবাসী ছৈয়দ হোসেন, রামুর মাহবুবুল আলম ও মীর কাশেম মাস্টারও অভিযোগ করেন অধিগ্রহণের টাকা না পাওয়ার বিষয়ে। এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে সাত দিনের মধ্যে সমাধানের নির্দেশ দেন দুদক কমিশনার। অন্যথায় দুদক নিজস্বভাবে তার তদন্ত শুরু করবে বলে জানান।

শুনানিতে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মেডিকেল সনদ বাণিজ্য, সমবায় কর্মকর্তার টাকা আত্মসাৎ, পাসপোর্ট অফিসে ঘুষ বাণিজ্য ও দালাল চক্রের বিষয়ে অভিযোগ তোলা হয়। যা সামাধানের নির্দেশও দেওয়া হয়।

পাসপোর্ট অফিস কর্মকর্তার উদ্দেশে দুদক কর্মকর্তা বলেন, ’কিছু রোহিঙ্গা পাসপোর্ট পেয়ে গেছে। কিছু আবেদনকারী হয়রানির শিকার হচ্ছে। পাসপোর্ট অফিসের হয়রানি নতুন নয়। সব পাসপোর্ট অফিসে দালালদের দৌরাত্ম্য থাকে। আপনার আত্মীয়স্বজনের কাছে জিজ্ঞেস করেন, পাসপোর্ট করতে কী পরিমাণ হয়রানি পোহাতে হয়। পাসপোর্টে সমস্যা আছে এটা প্রমাণিত। হয়রানি করা যাবে না।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা