× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

মৃত্যুঝুঁকি নিয়েই টিলার পাদদেশে বসবাস

কাওছার আহমদ, সিলেট

প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২৩ ১০:২৭ এএম

সিলেটে টিলার পাদদেশে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে কয়েক হাজার পরিবার। প্রবা ফটো

সিলেটে টিলার পাদদেশে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে কয়েক হাজার পরিবার। প্রবা ফটো

সিলেটে টিলার পাদদেশে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে কয়েক হাজার পরিবার। মূলত কম ভাড়ায় কিংবা বিনা ভাড়ায় থাকতে পারার কারণে ভূমিহীন ও দরিদ্র শ্রেণির লোকেরাই ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। আবার কিছু গোষ্ঠী টিলা কাটা বা দখলে রাখার জন্য টিলার পদদেশে ঘর বানিয়ে ভূমিহীনদের কম ভাড়ায় বরাদ্দ দেয়। সরকারিভাবে এর কোনো তালিকা নেই, তবে বেসরকারি হিসাবে প্রায় ১০ হাজার পরিবার টিলার পাদদেশে বসবাস করছে।

ভারী বর্ষণ হলেই সিলেটে টিলা ধসে প্রায়ই হতাহতের ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি টানা বৃষ্টির কারণে পাহাড়-টিলাধসের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে প্রাণহানির শঙ্কাও বেড়েছে। গত শনিবারই সিলেটের অন্তত চারটি স্থানে টিলাধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছে এক শিশু। আহত হয়েছে অন্তত ১০ জন। এ ছাড়া টিলা ধসে অন্তত চারটি ঘর ভেঙে গেছে।

শনিবার সিলেট সদর উপজেলার খাদিম চা-বাগান এলাকায় টিলা ধসে এক শিশু মারা যায়। এ ছাড়া জৈন্তাপুরে টিলা ধসে তিনটি বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে এবং নবীগঞ্জে আহত হয়েছে ১০ জন। টিলাধসের ঘটনা ঘটেছে নগরীর আখালিয়ায়ও। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট নগরীর তারাপুর চা-বাগান, হাওলাদারপাড়া, আখালিয়া, পীরমহল্লা ব্রাহ্মণশাসন, জাহাঙ্গীরনগর এবং নগরের উপকণ্ঠের খাদিমপাড়া, খাদিমনগর, বালুচর, ইসলামপুর মেজরটিলা, বিমানবন্দর সড়ক, জোনাকী, মংলিরপাড় এলাকায় বিভিন্ন টিলার পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে কয়েকশ পরিবার। এ ছাড়া গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় টিলা ও পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকি নিয়ে বাস করছে সহস্রাধিক পরিবার।

খাদিমনগর এলাকায় টিলার পাদদেশে বসবাসকারী রফিক উদ্দিন বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। জমি কেনার সামর্থ্য নেই। ঘরভাড়া করাও অনেক খরচের। এটি সরকারি টিলা। কোনো টাকা-পয়সা লাগে না। তাই ঝুঁকি নিয়েই এখানে থাকি।’

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) হিসাবমতে, সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকা, সদর, জৈন্তাপুর, গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, ফেঞ্চুগঞ্জ, কানাইঘাট ও গোয়াইনঘাট উপজেলায় প্রায় ৪০০ পাহাড়-টিলা রয়েছে। এসব টিলার ওপর ও পাদদেশে অনেক পরিবার ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করে।

বেলার সিলেটের সমন্বয়ক শাহ শাহেদা আক্তার বলেন, ‘টিলার পাদদেশে অন্তত ১০ হাজার পরিবার ঝুঁকিতে রয়েছে। টানা বৃষ্টি হলেই টিলা ধসে প্রাণ যায় অনেকের। এদের বসবাস ও প্রাণহানির জন্য প্রশাসনের গাফিলতি রয়েছে।’ 

শাহেদা আক্তার বলেন, ‘২০১২ সালে বেলার করা একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত সিলেটে পাহাড়-টিলা কাটায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। একই সঙ্গে পাহাড়-টিলা সংরক্ষণ ও তার পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী দরিদ্র মানুষজনকে পুনর্বাসনের নির্দেশনা দেন। কিন্তু ওই রায়ের ১১ বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হয়নি।’

এ বিষয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, ‘যারা টিলার পাদদেশে বসবাস করে তারা সরতে চায় না। কাউকে জোর করে সরালেও কিছু দিন পর তারা আবার ফিরে আসে। নিরাপদে সরে যেতে সব সময় মাইকিং করা হয়। এ বছরও প্রত্যেক উপজেলায় স্থানীয় নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মাধ্যমে মাইকিং করা হয়েছে। কিন্তু কেউ কথা শোনেনি। জনসচেতনতার জন্য সাইনবোর্ড স্থাপনসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’ 

জেলা প্রশাসক বলেন, টিলার পাদদেশে বসবাসকারীদের সঠিক হিসাব তার কাছে নেই। তবে খোঁজ নিয়ে পরে জানাতে পারবেন। আলোচনার মাধ্যমে তাদের অন্যত্র সরানো ও পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া চলছে। তাদের মধ্যে যদি কেউ ভূমিহীন থেকে থাকে, তাহলে প্রশাসন বা স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে তাদের সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করা হবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা