কুমিল্লা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০২৩ ২১:৪৬ পিএম
আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০২৩ ২২:০৯ পিএম
কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। সংগৃহীত ছবি
মদমুক্ত পূজার বক্তব্য দিয়ে তোপের মুখে পড়েছেন কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। তার এই বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা।
তারা বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হলে তার খেসারত দিতে হবে।
শনিবার (৭ অক্টোবর) হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের তিন সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার, অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক ও নির্মল রোজারিও এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, ৪ অক্টোবর বিকালে কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে পূজার প্রস্তুতি উপলক্ষে আয়োজিত সভায় বাহাউদ্দিন বাহার ‘মদমুক্ত পূজা’ করার যে সাম্প্রদায়িক কটাক্ষমূলক বক্তব্য দিয়েছেন, তার মধ্য দিয়ে তিনি তার সাম্প্রদায়িক চেহারা পূজার্থীদের সামনে উন্মোচিত করেছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মদ পূজার আনুষঙ্গিক কোনো বিষয় কখনও ছিল না, আজও নেই। মদের জন্য পূজার সংখ্যা বাড়ছে বলে তিনি যে মন্তব্য করেছেন, তা তার ‘রাজনীতিক’ ও ‘মুক্তিযোদ্ধা’ পরিচয়কে জনসমক্ষে নিঃসন্দেহে ভূলুণ্ঠিত করেছে। কারণ কোনো প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা জনগণের ধর্মীয় অনুভূতি নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য বা ব্যঙ্গ করতে পারে না।
সম্প্রতি কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় বাহাউদ্দিন বাহার বলেন, ‘প্রবলেম কিন্তু এ জায়গায় না, প্রবলেম অন্য জায়গায়। আপনারা কিছু প্রবলেম ক্রিয়েট করেন। সারা রাত মদ খেয়ে নাচেন, সকাল বেলা ঘুমাতে যান। খোলামেলা কথা বললাম আপনাদের। এটা বন্ধ করতে হবে। আমার কথা খারাপ লাগলেও একজনও কি বলতে পারবেন এ কথা মিথ্যা? মদমুক্ত পূজা করেন। এত মণ্ডপ হবে না। আমি বাস্তব কথা কইলাম, একদম ভিতরের কথা কইলাম।’
তিনি বলেন, ‘মাদকমুক্ত পূজার কথা বলছি আমি। একজন মুসলমান যদি মদ খেয়ে মসজিদে যায়, মৌলবাদী লাগবে না, মুসল্লিরাই তাকে জবাই করে ফেলবে। যে খাদ্য খাওয়ার পর মানুষের মনুষ্যত্ব থাকে না, তা কোনো ধর্ম অ্যালাউ করে না। আমরা এ বছর থেকে মাদকমুক্ত পূজা করব ইনশাআল্লাহ।’
সভায় দেওয়া বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে বাহাউদ্দিন বাহার বলেন, ’আমি যে কথা আগে বলেছি, সে কথা এখনও বলব। ঐক্য পরিষদের উচিত ছিল স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলার। তারা তা করেনি। আমি ঢালাওভাবে এসব কথা বলিনি। যারা খায় তাদের বলেছি। ধর্মীয় অনুষ্ঠান ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে হতে হবে। মদ খেয়ে গেলে ভাবগাম্ভীর্য ঠিক থাকে না। ঈদের দিন বখাটে ছেলেরা ড্রাম বাজিয়ে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করত। আমি ঈদের জামাতে বক্তব্য দিয়ে পুলিশ সুপারকে বলেছি তাদের গ্রেপ্তার করতে। পুলিশ ২৫টি ড্রাম পার্টিকে গ্রেপ্তার করে। সুন্দর কুমিল্লার জন্য আমি সব সময় আন্দোলন করেছি।’