সংবাদ সম্মেলনে দাবি
বান্দরবান প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৮ অক্টোবর ২০২৩ ২৩:০১ পিএম
বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন। প্রবা ফটো
বান্দরবানে উদ্ভাবিত কলাবতী শাড়ির তাঁতশিল্পী রাধাবতী দেবী এর উদ্ভাবক নন বলে দাবি করেছেন পিস মহিলা কল্যাণ সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক ও বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর কো-অর্ডিনেটর সাইং সাইং উ (নিনি)। রবিবার (৮ অক্টোবর) সকাল ১১টায় পিস মহিলা কল্যাণ সংগঠনের আয়োজনে বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি কলাবতী শাড়ির ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি কিছু কিছু মিডিয়া তাঁতশিল্পী রাধাবতীকে কলাবতী শাড়ির উদ্ভাবক হিসেবে তুলে ধরছে, যা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
তিনি দাবি করেন, কলাগাছের তন্তু থেকে শাড়ি কীভাবে উদ্ভাবন করা যায়, বিভিন্ন দেশে উৎপাদিত কলাগাছের সুতা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে তিনি দীর্ঘদিন ধরে নিরলসভাবে গবেষণা করেছেন। পরিশেষে কলাগাছের তন্তু থেকে সুতা উৎপাদন করার পর তাঁতশিল্পী খুঁজতে গিয়ে সিলেট থেকে রাধাবতী দেবীকে নিয়ে আসা হয়। তখন তার বেতন ছিল দৈনিক ৮০০ টাকা।
তৎকালীন জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজির সার্বিক সহযোগিতায় সাইং সাইং উ নিজেও দিনরাত বিনা পয়সায় পরিশ্রম করে দীর্ঘ ৮ মাস ধরে গবেষণা করে সফল হয়েছেন কলাবতী শাড়ি তৈরিতে।
সাইং সাইং উ বলেন, ‘রাধাবতী দেবী দৈনিক মজুরিতে কলাবতী শাড়ি তৈরিতে যুক্ত ছিলেন। রাধাবতী বান্দরবানে সাংবাদিকদের কাছে নিজেই স্বীকার করেছিলেন, সেখানে আসার আগে কলাগাছের তন্তু থেকে যে সুতা তৈরি হয়, তা তিনি জানতেন না। আর এখন কিছু মিডিয়ায় রাধাবতী দেবীকে কলাবতী শাড়ির উদ্ভাবক হিসেবে তুলে ধরছে, যা দুঃখজনক।’
তিনি আরও বলেন, ‘কলাবতী শাড়ি বান্দরবানের ব্র্যান্ডিং প্রোডাক্ট। কলাবতীর সৃষ্টি ও জন্ম বান্দরবান পার্বত্য জেলায়। কলাগাছের সুতায় তৈরি বাংলাদেশের প্রথম শাড়ি। কলাবতী শাড়ি তৈরির সম্পূর্ণ পরিকল্পনা, আইডিয়া ও প্রক্রিয়া আমার নিজের। এই কাজে নিজের সম্পৃক্ততার আরেকটি কারণ ছিল সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে এই এলাকার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কাজ করা।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওই প্রকল্পে জেলা প্রশাসক শুধু ফতুয়া ও লুঙ্গি তৈরির কথা বলেছিলেন। তবে আমি বলেছিলাম শাড়ি করলে এটি দ্রুত পরিচিত ও ব্র্যান্ডিং হবে। এরপরও স্বার্থান্বেষী মহল এ শাড়ির সুনাম ও প্রচার দেখে রাধাবতীকে কলাবতী শাড়ির উদ্ভাবক হিসেবে কিছু মিডিয়ায় জাহির করে দেশ ও জাতির কাছে ভুল তথ্য উপস্থাপন করছে। একজন সচেতন মানুষ হিসেবে বিষয়টি আমি সাংবাদিকদের কাছে উপস্থাপন করেছি।’
তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘সত্য তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে বান্দরবানের এই সৃষ্টিকে বাঁচিয়ে রাখতে আমি সংবাদকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানাই।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডজানক্ট ফ্যাকাল্টির ড. জহিরুল হক, প্রক্টর মুহাম্মদ ওয়াহিদুর রহমান, ইংলিশের কো-অর্ডিনেটর হাসান মাহামুদ, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ওমর ফারুক রুবেল, প্রেস ক্লাবের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক মিনারুল হক, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক বুদ্ধজ্যোতি চাকমা প্রমুখ।