মুন্সীগঞ্জের মেঘনায় ট্রলারডুবিতে ৬ যাত্রী নিখোঁজ

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদীতে বালুবাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় পিকনিকের ট্রলারডুবিতে একই পরিবারের চারজনসহ ছয় যাত্রী নিখোঁজ হয়েছেন। শুক্রবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার লঞ্চঘাটের অদূরে মেঘনা নদীতে ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার পর নৌ-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে জানালে রাত ৮টার দিকে নৌ-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছে।

নিখোঁজ যাত্রীরা হলেন, গজারিয়ার দক্ষিণ ফুলদি গ্রামের একই পরিবারের সুমনা আক্তার, জান্নাতুল মাওয়া, সাফা, মারওয়া এবং রংপর জেলার বাসিন্দা একই পরিবারের সাব্বির হোসেন ও রিমাত।

নারায়ণগঞ্জ কলাগাছিয়া নৌ-ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. হাবিবুল্লাহ ট্রলারডুবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ’ঘটনার খবর পেয়ে নৌ-পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছে।’

গজারিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ীর ইনচার্জ মো. ইজাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই আমরা খবর পাই। তবে নৌকা ম্যানেজ করতে না পারায় এবং নদীতে ঢেউ থাকায় আমাদের ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে দেরি হয়।

নিখোঁজদের স্বজন সাবেক ইউপি সদস্য দুলাল মিয়া বলেন, আমার বড় ভাই মফিজুল ইসলাম সেনাবাহিনীতে চাকরি করেন। তিনি বৃহস্পতিবার রাতে ছুটিতে পরিবার নিয়ে দক্ষিণ ফুলদি গ্রামের বাড়িতে আসেন। শুক্রবার বিকালে ট্রলার নিয়ে মেঘনা নদীতে ঘুরতে বের হন। নদীতে ঘুরে বাড়ি ফেরার পথে বাল্কহেডের ধাক্কায় ট্রলারটি ডুবে যায়। ট্রলারে আমার ভাই মফিজুল ইসলাম ছাড়াও তার স্ত্রী সুমনা দুই মেয়ে সাফা ও মাওয়া, তার খালা শাশুরী, এক বায়রা ও তার বাচ্চা, ভাগনি, ভাতিজি, ট্রলার চালকসহ ১২জন লোক ছিল। কয়েকজন জীবিত উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে আমার ভাই মফিজুল ইসলাম এবং ভাগনি শিরিন আক্তার মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতাল চিকিৎসাধীন রয়েছে।

ট্রলারচালক রফিক মিয়া জানান, শুক্রবার সকালে ১১ জন যাত্রী গজারিয়া থেকে নৌভ্রমণে বের হন। তারা দিনভর বিভিন্ন স্থানে ঘোরাফেরা শেষে তাদের নিয়ে সন্ধ্যার দিকে বাড়ি ফিরছিলাম। ট্রলারটি গজারিয়া লঞ্চঘাটের অদূরে পৌঁছলে নারায়ণগঞ্জমুখী বালুবাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় আমাদের ট্রলারটি ডুবে যায়। ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজন উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন। এ সময় ১১ জনের মধ্যে পাঁচজন সাঁতার কেটে ওপরে উঠতে পারলেও একই পরিবারের চারজনসহ ছয়জন নিখোঁজ রয়েছেন।’

ট্রলারডুবির খবর পেয়ে গজারিয়া উপজেলার দক্ষিণ ফুলদি গ্রাম থেকে নিলুফা বেগম নামের এক নারী মেঘনা নদীর তীরে ছুটে এসে স্বজনদের খোঁজে আহাজারি করছেন। তবে রাত ৮টা পর্যন্ত ওই নারী তার স্বজনদের সন্ধান পাননি।