× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

জেলা পরিষদের জায়গা রুস্তমের ভোগে

যশোর প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২৩ ১০:৪১ এএম

আপডেট : ০৬ অক্টোবর ২০২৩ ১১:০২ এএম

জেলা পরিষদের জায়গা রুস্তমের ভোগে

আছে তিনতলাবিশিষ্ট একাধিক বাড়ি। বিভিন্ন জায়গায় মিল-ফ্যাক্টরিও। শ্রমিকসংখ্যাও আছে দুই শতাধিক। তারপরও লোলুপ দৃষ্টি সরকারি সম্পত্তির দিকে। এজন্য গড়ে তোলা হয়েছে সন্ত্রাসী বাহিনী। যাদের কাজই হলো দখলে কেউ বাধা দিতে এলে হয়রানি ও নির্যাতন করা। যশোরের ঝিকরগাছার লাউজানী মল্লিকপুর এলাকায় এভাবে গত এক যুগে চার একর ১৯ শতক বা প্রায় ১৩ বিঘা সরকারি জমি দখলে নেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক যুগ আগে সরকারি ওই সম্পত্তিতে একটি ঘর তুলে বাস শুরু করেন রফিক মিয়া নামের এক চা-দোকানি। ঘরের সামনে রাস্তার পাশে বসেই বিক্রি করতেন চা। আশপাশের জমিতে চাষ করতেন শাকসবজি। রোপণ করেছেন বিভিন্ন গাছ। কৌশলে জোর করে তাকে এই জায়গা থেকে বিতাড়িত করা হয়। 

এ প্রসঙ্গে কথা হয় চা-দোকানদার রফিক মিয়ার সঙ্গে। তিনি প্রতিনিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘হুমকি দিয়ে রাতের বেলা আমাকে বিতাড়িত করেছে। এরপর জায়গা দখল করে নেওয়া হয়। প্রথমে সেখানে ছোট্ট পরিসরে ব্যবসা শুরু করলেও পরে পুরো জায়গায় রুস্তম কারখানা ও নিজের ডেরা তৈরি করে নিয়েছে। তার ছেলে রাসেল সেখানে বসেই একটি সশস্ত্র বাহিনী চালায়।’

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ওই চার একর ১৯ শতক বা প্রায় ১৩ বিঘা জমির মালিক জেলা পরিষদ। এর অবস্থান ঝিকরগাছা উপজেলার লাউজানী বাজার থেকে পশ্চিমে ৫০০ গজ দূরে। সেখানে ৫৮ নম্বর মল্লিকপুরের মৌজার ৩ নম্বর খতিয়ান ৩৮৯ দাগে রয়েছে এই জায়গা। এক যুগ আগে এলাকার প্রভাবশালী রুস্তম আলী নামে এক ব্যক্তি দখল করে সেখানে প্রথমে রুস্তম ট্রেডার্স নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। প্রথমদিকে সেখানে চট ও চটের উৎপাদিত বস্তা কেনাবেচা হতো। এরপর দফায় দফায় পুরো জায়গা দখল করে নিয়ে তৈরি করেছেন বস্তা ফ্যাক্টরি ও টুইনিং ফ্যাক্টরি। তবে এসব প্রতিষ্ঠান নির্মাণের জন্য নেওয়া হয়নি কারখানা অধিদপ্তরের অনুমোদন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। 

জানতে চাইলে যশোর মিল অ্যান্ড ফ্যাক্টরির ইন্সপেক্টর শওকত হোসেন বলেন, ‘কারখানা স্থাপনে লাউজানীতে কারখানা অধিদপ্তর থেকে কোনো লাইসেন্স নেওয়া হয়নি। যদি কেউ লাইসেন্স ছাড়া কারখানা স্থাপন করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

যশোর পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক নুরুল আলম বলেন, ‘ওই এলাকায় আমাদের কাছ থেকে কেউ পরিবেশের ছাড়পত্র নেয়নি। খোঁজখবর নেওয়া হবে। ছাড়পত্র ছাড়া কেউ যদি কারখানা স্থাপন করে, তবে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।’

সরেজমিনে দেখা যায়, দখল করা জায়গা থেকে রুস্তম আলীর বাড়ির দূরত্ব আধা কিলোমাটার। বাড়িটি তিনতলাবিশিষ্ট। বাড়ির নিচতলাসহ আশপাশের জায়গায় রয়েছে তার অন্যান্য কিছু কারখানা। জেলা পরিষদের দখল করা জমিতে গড়ে তোলা ও আশপাশের কারখানা মিলে দুই শতাধিক শ্রমিক কাজ করে। সরেজমিন অনুসন্ধানে গেলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে চড়াও হন রুস্তম আলী ও তার ছেলে রাসেল ও তার বাহিনী। একপর্যায়ে সংবাদ যেন প্রকাশ না করা হয়, এজন্য হুমকি দেওয়া হয়।

বিষয়টি নিয়ে ঝিকরগাছা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মামুনুর রশিদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা জেলা পরিষদের জমি। দখল করে সেখানে কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। তারা আরও জায়গা দখল করে পাকা স্থাপনা তৈরি করতে চেষ্টা করছিল। আমি সেখানে লোক পাঠিয়ে বন্ধ করে দিয়েছি। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করলে আমি তাকে সহযোগিতা করব।’

যশোর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘যত বড়ই প্রভাবশালী হোক না কেন, জেলা পরিষদের সম্পত্তি কেউ যদি দখল করে কলকারখানা স্থাপন করে, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা