পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু
চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৩ ১৪:২৯ পিএম
দুদকের সাবেক উপপরিচালক ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লা।
চট্টগ্রামের চাঁন্দগাও থানা পুলিশ হেফাজতে মারা যাওয়া দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক উপপরিচালক ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাকে গ্রেপ্তারে সংশ্লিষ্ট দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার এম এ মাসুদ সই করা এক আদেশে তাদেরকে দামপাড়া পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
সিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার (জনসংযোগ) স্পিনা রানী প্রামাণিক প্রতিদিনের বাংলাদেশকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রত্যাহার হওয়া সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) পদমর্যাদার এই দুই পুলিশ কর্মকর্তা হলেন ইউসুফ আলী ও এটিএম সোহেল রানা। তারা চাঁন্দগাও থানায় কর্মকর্ত ছিলেন।
শহীদুল্লা দুদক থেকে ২০০৭ সালের ১২ জুলাই অবসরে যাওয়ার আগে চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর উপপরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন। পরিবার নিয়ে চান্দগাঁও থানার পাশের এক কিলোমিটার এলাকায় থাকতেন তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার চান্দগাঁও থানা পুলিশ হেফাজতে রাত সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান শহীদুল্লা। এর ঘণ্টাখানেক আগে তাকে নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, একটি সিআর মামলায় ওয়ারেন্টের ভিত্তিতে শহীদুল্লাকে গ্রেপ্তারের ১৫ মিনিট পরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর দ্রুত তাকে হাসপাতালেও নেওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার কিছুক্ষণ পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এজাহার ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানার তথ্য অনুযায়ী, ২৯ আগস্ট চট্টগ্রাম ৬ষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরিফুল ইসলামের আদালতে ৩২৩ (মারধর) ও ৫০৬ (২) (ভয়ভীতি প্রদর্শন) ধারায় মামলা করেন রণি আক্তার তানিয়া নামে এক নারী। মামলায় ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লা ও তার শ্যালক মোহাম্মদ কায়সার আনোয়ারকে আসামি করা হয়। এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ২৭ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরোয়ানাটি ১ অক্টোবর চান্দগাঁও থানায় পৌঁছায়। পরোয়ানাপত্র পাওয়ার পর মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এএএসআই ইউসুফ আলী ও এটিএম সোহেল রানা নগরের পূর্ব ষোলশহর মোজাহের উল্লাহ মুহুরী বাড়ির পুকুরপাড় এলাকা থেকে শহীদুল্লাকে গ্রেপ্তার করেন।
শহীদুল্লার পরিবারের অভিযোগ, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি হৃদরোগী ছিলেন। তাকে পুলিশ নিয়ে যাওয়ার পর ওষুধ নিয়ে পরিবারের সদস্যরা থানায় গেলেও দেখা করার সুযোগ পাননি।
শহীদুল্লার ছেলে নাফিস শহীদ বলেন, ‘বাবাকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার চাচারা থানায় যান। কিন্তু ওই সময় থানার ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। এটা পরিকল্পিত হত্যা।’
অভিযোগ অস্বীকার করে চান্দগাঁও থানা-পুলিশ জানায়, শহীদুল্লার সঙ্গে পুলিশের কেউ অসদাচরণ করেনি। গ্রেপ্তারের কিছুক্ষণ পর খারাপ লাগার কথা জানালে তাকে থানার ওসির কক্ষে নিয়ে বসানো হয়। পরে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে তার ভাইদের সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে পাঠানো হয়।