সিকিমে বাঁধে ভাঙন
রংপুর অফিস
প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২৩ ১৫:৩৯ পিএম
আপডেট : ০৪ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:৫৫ পিএম
ভারতে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তিস্তা নদী বেষ্টিত উত্তরের পাঁচ জেলায় ভয়াবহ বন্যার শঙ্কা। প্রবা ফটো
টানা বৃষ্টিতে ভারতের সিকিম রাজ্যে একটি হ্রদের বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে উজানের পানি এসে নামছে তিস্তা নদীতে। এ কারণে তিস্তা নদী বেষ্টিত বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলায় ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এজন্য সতর্কতা জারি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। একইসঙ্গে নদীর তীরবর্তী বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করছে স্থানীয় প্রশাসন।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর চুংথাং বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বুধবার সকাল থেকে নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডালিয়া পয়েন্টে বুধবার বিকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত নদীর পানি বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে গজলডোবা পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি ২৮৫ সেন্টিমিটার এবং দোমুহুনী পয়েন্টে বুধবার সকাল থেকে ৮২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। তিস্তার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে অন্য নদীর পানি। এতে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলো প্লাবিত হয়ে বন্যা হতে পারে।
পাউবোর বুধবার দুপুর ১২টার তথ্য অনুযায়ী, তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৬ সেন্টিমিটার, কাউনিয়া পয়েন্টে ৫৯ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদীর চিলমারী পয়েন্টে ২ দশমিক ৩৪ মিটার, ধরলা নদীর কুড়িগ্রাম পয়েন্টে এক দশমিক ৮২ মিটার এবং দুধকুমার নদের পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপদসীমার ২ দশমিক ৩২ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
রংপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে আগামী ৪৮ ঘণ্টা ভারতের সিকিম অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এতে তিস্তা নদীতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হবে। বিপদসীমা অতিক্রমের সর্বোচ্চ রেকর্ড ৫২ দশমিক ৮৪ মিটারে কাছাকাছি ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি পৌঁছাতে পারে। পানি উন্নয়ন বোর্ড এসব তথ্য প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানিয়েছে।’
উজানের ঢলে ভয়াবহ বন্যার খবরে প্রস্তুতি নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। প্রতিবার বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে স্থানীয়দের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং শুরু হয়েছে। বন্যাকালীন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্রগুলো।
গঙ্গাচড়া উপজেলার লহ্মীটারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, ‘উজানের ঢলে পানি বৃদ্ধি হলে আমার ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যেহেতু ভয়াবহ বন্যার পূর্বাভাস পাওয়া গেছে, তাই আমার ইউনিয়নের মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে মাইকিং শুরু হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোও।’
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ তামান্না বলেন, ‘বন্যায় যেন মানুষের জানমালের রক্ষা হয় সে লক্ষ্যে প্রশাসন কাজ করছে। বন্যা স্থায়ী হলে ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্য সহায়তা প্রদান এবং বন্যা শেষে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে কাজ করছে।’