জয়পুরহাট প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ অক্টোবর ২০২৩ ১২:২৯ পিএম
আপডেট : ০৩ অক্টোবর ২০২৩ ১২:৩৪ পিএম
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে একটি সড়কের দুই পাশে আধা কিলোমিটারজুড়ে এক যুগ আগে রোপণ করা তালগাছ ন্যাড়া করে দিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ। প্রবা ফটো
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে একটি সড়কের দুই পাশে আধা কিলোমিটারজুড়ে এক যুগ আগে রোপণ করা তালগাছ ন্যাড়া করে দিয়েছে পল্লী বিদ্যুতের লোকজন। উপজেলার নিশ্চিন্তা-পাঠানপাড়া সড়কের কর্ণপাড়া-পাঠানপাড়ার অংশে রাস্তার পূর্ব ও পশ্চিম পাশে বেড়ে ওঠা প্রায় ৪০টি তালগাছ একেবারে ন্যাড়া করে দেওয়া হয়েছে।
তালগাছ ন্যাড়া করে ফেলার কারণে সেগুলো ধীরে ধীরে মরে যেতে পারে বলে শঙ্কা স্থানীয়দের। বিদ্যুৎ বিভাগের এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। এ ঘটনার প্রতিবাদে গত রবিবার বিকালে ওই সড়কে উজ্জ্বল নক্ষত্র ফাউন্ডেশন নামে স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মানববন্ধন করেছে। এতে স্কুলের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বলছে, বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে এবং দুর্ঘটনা থেকে রক্ষার
জন্য লাইনের আশপাশের গাছগুলোর ডালপালা ছাঁটাই করে দেওয়া হয়েছে। তবে তালগাছ এভাবে ন্যাড়া করে দেওয়া ঠিক হয়নি। এগুলো শ্রমিকেরা করেছে।
ক্ষেতলাল উপজেলার গণমঙ্গল-পাঠানপাড়া সড়কের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে তালগাছগুলোর অবস্থান। গতকাল সোববার বিকেলে সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, গণমঙ্গল থেকে পাঠানপাড়া রাস্তার কর্ণপাড়া এলাকার পূর্ব পাশের কিছু তালগাছে ডাল কাটা হয়েছে। এর কিছু পর ওই অংশের পশ্চিম পাশে বিদ্যুতের লাইন পার হয়। ওই পাশের ছোট-বড় সব গাছ ন্যাড়া করে দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি গাছের দু-একটি ডাল রাখলেও মাথা রাখা হয়নি।
উজ্জ্বল নক্ষত্র ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক আমানুল্লাহ আমান বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে সড়কের ৪০টি তালগাছ হত্যা করা হয়েছে। আমরা এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে দোষীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
নওটিকা গ্রামের রাজ্জাক সরকার বলেন, পল্লী বিদ্যুতের লোকজন এসে সমানে তালগাছগুলো কেটে দিয়ে গেল। এই গাছগুলোর বয়স ১২ বছরের বেশি হয়ে গেছে। আর বিদ্যুতের লাইন তো কয়েক বছর আগের। তিনি এভাবে কাটতে নিষেধ করেন, কিন্তু তারা কোনো কথা শোনেনি।
প্রকৃতি নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী এম রাসেল আহমেদ বলেন, যখন এই তালগাছগুলো এমনভাবে কাটা হচ্ছে, তখন তিনি প্রতিবাদ করেন। তারপরও তার কথা না শুনে ন্যাড়া করে কেটেছে। এই তালগাছগুলো ১২-১৪ বছর আগে রোপণ করা। এখানে প্রায় ৪০টি তালগাছের মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছে পল্লী বিদ্যুতের লোকজন। এর আগে কয়েকটি গাছ ন্যাড়া করে দেওয়ায় তা মারা গেছে। এবার এই গাছগুলোও মারা যেতে পারে।
এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ ক্ষেতলাল সাব জোন অফিস গণমঙ্গল অভিযোগ কেন্দ্রের লাইন টেকনিশিয়ান মো. সাহাদত হোসেন বলেন, ‘তালগাছগুলোর ডাল একটু রেখে কাটতে পারত। কিন্তু কাটতে কাটতে এমনভাবে কেটেছে। এখন লাইনের নিচে বিশেষ করে তালগাছ থাকলে বজ্রপাত পড়ে। এতে সমস্যা হয়। আশা করি এই বিষয়ে আমরা সচেতন থাকব।’
পল্লী বিদ্যুৎ ক্ষেতলাল সাব জোন অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মো. নাজিম হোসাইন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমাদের নিয়ম হলো তারের ওপরে, নিচে ও আশপাশে ১০ ফুট কেটে দিতে হবে। এখানে গাছ বা ডাল থাকলে তা কেটে দিতে হবে। তালগাছের মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া থাকলে এটা শ্রমিকদের ঠিক হয়নি। এর পক্ষে আমি না। এটি আমি সরেজমিনে দেখব। আর এ রকম ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে ব্যাপারে সচেতন থাকব।’