× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল

পরিত্যক্ত ভবনে বহির্বিভাগের কার্যক্রম

জামালপুর প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০২৩ ১১:৫১ এএম

আপডেট : ০২ অক্টোবর ২০২৩ ১২:২০ পিএম

জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল। ছবি: সংগৃহীত

জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল। ছবি: সংগৃহীত

জামালপুরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে বহির্বিভাগের কার্যক্রম। ভবনের ছাদ থেকে খসে পড়ছে পলেস্তরা। বেরিয়ে গেছে মরিচা ধরা রড। দেয়াল ও পিলারগুলোতে দেখা দিয়েছে ফাটল। ১৯৬১ সালে নির্মিত ভবনটিকে ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে মেয়াদ উত্তীর্ণ ও অতি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে সতর্কবার্তা সেঁটে দিয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। এর পরও ঝুঁকি নিয়েই ভবনটিতে প্রতিদিন চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম। 

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও সেবাপ্রত্যাশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জামালপুরের ২৬ লাখ মানুষের চিকিৎসাসেবার ভরসাস্থল ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল। প্রতিদিন সকাল থেকেই জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের সহস্রাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন এখানে। তারা লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে যান বহির্বিভাগের ভবনের ছাদের নিচে। ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও তারা বাধ্য হয়ে আসেন সেবা নিতে। অনেকেই আবার জানেন না তারা রয়েছেন জীবনের ঝুঁকিতে। জেলার ৭ উপজেলা ছাড়াও কুড়িগ্রামের রৌমারী-রাজিবপুর, শেরপুরের শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী ও সদর উপজেলার অসংখ্য রোগী প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসেন এ হাসপাতালে।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, ভবনের ছাদ থেকে পলেস্তরা খসে মরিচা ধরা রড বের হয়ে গেছে। দেয়াল ও পিলারগুলোতে দেখা দিয়েছে ফাটল। এ ছাড়া ভবনের দরজা-জানালার অবস্থাও ভালো নয়। ঝুঁকিপূর্ণ এ ভবনের করিডোরে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে সহস্রাধিক রোগী ও তাদের স্বজন। এ ছাড়া ভবনটিতে রয়েছে টিকিট কাউন্টার, ওষুধ বিতরণ কেন্দ্র, রক্ত সঞ্চালন কেন্দ্র, ল্যাবসহ হাসপাতালের সব পরীক্ষাগার। তাই চিকিৎসাসেবার সব কার্যক্রম চলছে এ ভবন থেকেই।

চিকিৎসা নিতে আসা নান্দিনা এলাকার বাসিন্দা শাহিদুর রহমান শাহেদ বলেন, ‘ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ জানার পরও এখানেই সেবা নিতে আসি। বাইরে প্রাইভেট ক্লিনিকে ডাক্তার দেখাতে গেলে প্রচুর টাকা খরচ হয়। সেই সামর্থ্য আমাদের নেই। তাই বাধ্য হয়েই জীবনের ঝুঁকি আছে জেনেও এখানেই ডাক্তার দেখাতে হয়।’

হাবিবুর রহমান নামে আরেকজন বলেন, ‘মানুষ হাসপাতালে আসে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হতে। কিন্তু এই হাসপাতালে এসেই ভয়ের মধ্যে থাকতে হয়। কখন যেন ছাদ ধসে মাথার ওপর পড়ে। তাহলে আমরা কীভাবে চিকিৎসাসেবা নেব।’

ইসলামপুর পৌর এলাকা থেকে আসা মাহাত হাসান বলেন, ‘এই ভবনটি যে ঝুঁকিপূর্ণ তা অনেক রোগী জানে না। ছোট একটি সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে, তা অনেক সময় চোখেই পড়ে না। ভবনটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়ে বড় ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে।’

হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও মানবাধিকারকর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, ‘অনেক আগেই এই ভবনটিকে মেয়াদ উত্তীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক সত্য হচ্ছে, ভবনটি আগের মতোই আছে। আর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় প্রতিদিন স্বাস্থ্যসেবা নিচ্ছেন রোগীরা। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই ভবনটি ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।’ 

গাইনি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ফাখরিয়া আলম বলেন, ‘এই ভবন ২০২১ সালে অতি ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু সাধারণ রোগীদের কথা চিন্তা করে বিপজ্জনক জেনেও সেবা দিয়ে যাচ্ছি। এতে ডাক্তার ও রোগী সবাইকেই ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হয়।’

হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মাহফুজুর রহমান সোহান বলেন, ‘হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন ১২০০ থেকে ১৫০০ রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ভবনটি ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য বহু আগেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরকে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু এরপরও নতুন ভবন নির্মাণে উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তাই রোগীদের পাশাপাশি চিকিৎসকদের ঝুঁকি নিয়েই চালিয়ে যেতে হচ্ছে কার্যক্রম।’ তবে খুব শিগগির বহির্বিভাগের কার্যক্রম অন্যত্র স্থানান্তর করা হবে বলে জানান তিনি।

জামালপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোবারক হোসেন বলেন, ‘হাসপাতালের বহির্বিভাগের ভবনটির মেয়াদ উত্তীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে স্বাস্থ্য বিভাগকে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া সেখানে একটি ছয়তলা ভবন নির্মাণের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা