মিরসরাইয়ে দুই দলের সংঘর্ষে কিশোর নিহত
চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২২:৪৬ পিএম
আপডেট : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২২:৫২ পিএম
হাসপাতালে নিহত কিশোরের স্বজনরা আহাজারি করছেন। প্রবা ফটো
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে রায়হান হোসেন রুমন নামে এক কিশোর নিহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে। শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রুমনের মা খালেদা আক্তার বাদী হয়ে জোরারগঞ্জ থানায় এই মামলা করেন। এতে প্রধান আসামি করা হয়েছে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আমিনকে। মামলায় ১৫ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ৬০-৭০ জনকে আসামি করা হয়।
চট্টগ্রামের সহকারী পুলিশ সুপার (মিরসরাই সার্কেল) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘নিহত রুমনের মা খালেদা আক্তার বাদী হয়ে নুরুল আমিন চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামি এবং ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৬০-৭০ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছেন। ঘটনার পর চারজনকে আটক করা হয়েছিল। তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’ তবে মামলার বাকি আসামিদের নাম জানাতে রাজি হননি পুলিশের এই কর্মকর্তা।
গত শুক্রবার বিকালে মিরসরাই উপজেলার ওচমানপুর ইউনিয়নের আজমপুর বাজারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সংঘর্ষে নিহত হয় রুমন। ঘটনার পর তাকে নিজেদের কর্মী দাবি করে স্থানীয় ছাত্রলীগ। হত্যার জন্য তারা বিএনপির নেতাকর্মীদের দায়ী করছিলেন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যানের বাড়িতে বিএনপির সভা হয়। সভা শেষে আজমপুর বাজারে সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা। রুমন ওই সময় মোবাইলে সংঘর্ষের ঘটনার ভিডিও করছিল। ওই সময় পিটিয়ে তাকে পানিতে ফেলে দেওয়া হয়। ওই হামলায় দুই পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর হোসেন চৌধুরী তপু বলেন, ‘রুমন আমাদের সক্রিয় কর্মী ছিল। বিএনপির সন্ত্রাসীদের তাণ্ডবের ভিডিও করছিল বলে তাকে মাথায় আঘাত করে পানিতে ফেলে দেওয়া হয়। তারপর তারা রুমনের মৃত্যু নিশ্চিত করে।’
এই ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে শনিবার বিকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপি। সংবাদ সম্মেলনে রুমন হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার বলেন, ‘৫ অক্টোবর বিএনপির রোডমার্চের প্রস্তুতি নিতে সেখানে আমাদের নেতাকর্মীরা সভা করছিলেন। সেই সভায় আওয়ামী লীগ হামলা করে। আমাদের নেতাকর্মীরা আত্মরক্ষার চেষ্টা করেন। তাদের আঘাতেই রুমন মারা গেছে। তারপর রাতে তারা পুলিশ প্রহরায় নুরুল আমিন চেয়ারম্যানসহ আমাদের নেতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা করেছে।’
নুরুল আমিন চেয়ারম্যান বলেন, ‘শুক্রবার দুপুর থেকে আমাদের সভায় আসার পথে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করা হয়েছে। বিকালে তারা যখন বাড়িতে হামলার প্রস্তুতি নেয়, তখন আমি জোরারগঞ্জ থানার ওসিকে কয়েকবার কল করেছি। তিনি সাড়া দেননি। তিনি সাড়া দিলে এমন ঘটনা ঘটত না। নোমান কোনো দল করত না। তাকে আওয়ামী লীগের লোকেরা হত্যা করেছে। রাত থেকে আমার পরিবারকে পুলিশ কাস্টডিতে রাখা হয়েছে। পরিবারের বক্তব্য নিতে যাওয়ায় আশরাফ উদ্দিন নামে স্থানীয় এক সাংবাদিককে মেরে পুলিশে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।’
সহকারী পুলিশ সুপার মনিরুল বলেন, ‘আশরাফ উদ্দিন নামে একজন নিজ থেকে থানায় ঢুকেছিল। তিনি বলেছেন তাকে কেউ হুমকি দিয়েছে। ভয় পেয়ে তিনি থানায় আশ্রয় নেন। কিছুক্ষণ বসে থেকে আবার তিনি চলে যান। তাকে কেউ পুলিশে তুলে দেয়নি, পুলিশও তাকে আটক করেনি।’