× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বিলাইছড়িতে উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়ম

আগাছা পরিষ্কার ও মাটি কেটেই শেষ সড়ক নির্মাণ

রিকোর্স চাকমা, রাঙামাটি

প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৬:৪২ পিএম

আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৭:২৬ পিএম

ঝোপঝাড়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে কোটি টাকার সড়ক। রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার পাংখোয়াপড়া। প্রবা ফটো

ঝোপঝাড়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে কোটি টাকার সড়ক। রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার পাংখোয়াপড়া। প্রবা ফটো

রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলায় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চারটি সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। একটি সড়কে নামমাত্র কাজ করলেও বাকি তিনটির সন্ধান দিতে পারেননি খোদ স্থানীয়রাও। ফলে সরকারের টাকা গচ্চা যাওয়ার পাশাপাশি এলাকাবাসীর কোনো কাজে আসছে না এসব প্রকল্প। এ ছাড়াও উপজেলায় একটি ফুটওভার ব্রিজের কাজেও আপত্তি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। 

জানা যায়, ২০১৬ সালে বিলাইছড়ি ইউনিয়নের ডাউনপাড়া হতে পাংখোয়াপাড়া পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণে এক কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। যার কাজ শেষ হওয়া দেখানো হয়েছে ২০১৯ সালে। অথচ সরেজমিনে দেখা যায়, ডাউনপাড়া হতে পাংখোয়াপাড়া পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সড়কের মাত্র দেড় কিলোমিটার ইট বিছানো হয়েছে। বাকি পথ পুরোটাই ঝোপঝাড় ও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।

খোঁজ নিতে গেলে স্থানীয়রা বলেন, ডাউনপাড়া থেকে ধুপশীল পর্যন্ত ইট বিছানো হয়েছিল। বাকি দেড় কিলোমিটারের মধ্যে মাত্র ৬০০-৭০০ মিটার আগাছা পরিষ্কার ও কিছু মাটি ফেলেই শেষ করা হয় কাজ। 

স্থানীয় বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য প্রিয় তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ‘প্রায় চার বছর আগে কাজটি করা হয়েছে। জেলা পরিষদের সদস্য রেমলিয়ানা পাংখোয়া এ রাস্তার প্রকল্প নিয়েছিলেন। কাজ চলাকালে তদারকিও করে গেছেন তিনি। কিন্তু পুরোটা কাজ কেন করা হয়নি, আমরা তা কিছুই জানি না। এটুকু রাস্তা আমাদের কোনো উপকারেই আসেনি। পুরো রাস্তার কাজ করলে আমাদের খুব উপকারে আসত। রাস্তাটি এখন সম্পূর্ণ জঙ্গলাকীর্ণ হয়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। অনেক স্থানে পাহাড় ধসে ভেঙে গেছে।’ 

বিলাইছড়ি ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য রানীবালা তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ‘ওইটুকু জঙ্গল ও মাটি কেটে করা রাস্তা এলাকাবাসীর কোনো উপকারে আসেনি। ফলে যেটুকু করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ জঙ্গলাকীর্ণ হয়ে পড়ে রয়েছে।’ 

এ ছাড়া ২০১৭-১৮ অর্থবছর একই উপজেলার ফারুয়া ইউনিয়নে পশ্চিম মন্দিরাছড়া হতে পূর্ব মন্দিরাছড়া, লতাপাহাড় হতে শুকরছড়ি এবং গবছড়ি হতে সাংড়াছড়ি পর্যন্ত ১০০-১৫০ মিটারের আরসিসি রাস্তা নির্মাণের কোনো তথ্যও সরেজমিনে পাওয়া যায়নি। এমনকি স্থানীয়রাও কোনো তথ্য দিতে পারেননি। সড়ক তিনটির প্রতিটিতে বরাদ্দ ছিল ১৫ লাখ টাকা। 

ফারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিদ্যালাল তঞ্চঙ্গ্যা জানান, আমার ইউনিয়নের ওইসব এলাকায় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ থেকে রাস্তা নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের তথ্য আমি জানি না। তবে অন্য জায়গায় রাস্তা নির্মাণের কথা শুনেছি।

প্রকল্পের বিষয়ে জেলা পরিষদ সদস্য রেমলিয়ানা পাংখোয়া বলেন, এগুলো যেহেতু টেকনিক্যাল বিষয়Ñ তাই যেকোনো প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে আমাদের জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছ থেকে। তিনি নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন। 

রাঙামাটি জেলা পরিষদ নির্বাহী প্রকৌশলী বিরল বড়ুয়া বলেন, ‘প্রকল্পটির কাজ আমি আসার আগেই হয়েছিল। তাই ফাইলপত্র না দেখলে সঠিক কিছুই বলতে পারব না।’ 

এদিকে বিলাইছড়ি উপজেলা সদরে বিলাইছড়ি ছাত্রাবাসে যাতায়াতের জন্য নির্মাণাধীন একটি ফুটওভার ব্রিজের কাজেও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী। এ প্রকল্প প্রথমে নেওয়া হয়েছিল ২০১৭ সালে। কাজ শেষ করার কথা ছিল ২০১৯ সালে। কিন্তু প্রকল্পের সেই মেয়াদকালে ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেলেও তখন কোনো কাজই করা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয়রা বলেন, সেই সময় কাজ না করেও বিল উত্তোলন করা হয়েছিল। পরে অভিযোগ ও প্রতিবাদের মুখে এবার নতুন করে ১ কোটি টাকা ব্যয় দেখিয়ে ব্রিজটি নির্মাণ করতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। এখন কাজ চলছে দরপত্র আহ্বান ছাড়াই। 

এ বিষয়ে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী বিরল বড়ুয়া বলেন, ‘কাজ সম্পূর্ণ নিয়ম অনুযায়ীই হচ্ছে। এখানে অনিয়ম-দুর্নীতির কিছুই নেই। ওই সময় সেখানে বেশি পানি জমে থাকার কারণে পাইলিং করার মতো অবস্থা ছিল না। এ ছাড়া উজানে একটি বাঁধ ছিল। সেখান থেকে পানি নামত। পরে বাঁধটির পানি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করে প্রকল্পের প্রয়োজনীয় মেয়াদ বাড়িয়ে এ বছর ব্রিজটির কাজ করা হয়েছে।’ 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা