পটিয়া (চট্টগ্রাম) ও ঢাবি প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২২:৩৫ পিএম
আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২২:৩৫ পিএম
ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা-সংগ্রামের বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের ৯২ তম আত্মাহুতি দিবসে পাহাড়তলী ইউরোপিয়ান ক্লাবের সামনে স্থাপিত আবক্ষ মূর্তিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন সংগঠন। ছবি : নিপুল কুমার দে
চট্টগ্রামের পটিয়ায় রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের আত্মাহুতি দিবস পালিত হয়েছে। ১৯৩২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর তিনি আত্মাহুতি দিয়েছিলেন। দিবসটি উপলক্ষে ধলঘাটের প্রীতিলতা কমপ্লেক্সের সামনে স্থাপিত আবক্ষ মূর্তিতে প্রীতিলতা ট্রাস্টসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।
রবিবার দুপুরে প্রীতিলতা ট্রাস্ট মিলনায়তনে আয়োজিত স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন বীরকন্যা প্রীতিলতা ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি পংকজ চক্রবর্তী। প্রধান অতিথি ছিলেন দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত।
বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশনের (ইপসা) নির্বাহী পরিচালক আরিফুর রহমান, চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবু মো. মহিউদ্দীন প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিপ্লবী পূর্ণেন্দু অর্ধেন্দু সুখেন্দু প্রীতিলতা বাস্তুভিটা স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রবোধ রায় চন্দন। বক্তব্য দেন উত্তরাধিকারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শৈবাল বড়ুয়া, পটিয়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক আবদুল হাকিম রানা, চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্ত প্রমুখ।
প্রধান অতিথি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, বীরকন্যা প্রীতিলতা বাঙালির মুক্তির চেতনার উৎস। তিনি একজন অজপাড়াগাঁয়ের মেয়ে হয়েও দেশমাতৃকাকে শত্রুমুক্ত তথা স্বাধীন স্বদেশ গড়ার প্রত্যয়ে অকাতরে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তার মাঝে অগাধ ও নিখুঁত দেশপ্রেম ছিল বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।
ঢাবির মিলন চত্বরে আলোচনা সভা
এদিকে প্রীতিলতার আত্মাহুতি স্মরণে আলোচনা সভা করেছে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র। সভায় বক্তারা বর্তমান সময়ে প্রীতিলতার মতো গণতান্ত্রিক অধিকার ও মর্যাদা আদায় এবং শোষণ মুক্তির সংগ্রামে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
গতকাল বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মিলন চত্বরে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় প্রীতিলতার জীবনসংগ্রাম নিয়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। সীমা দত্তের সভাপতিত্বে ও দপ্তর সম্পাদক তৌফিকা লিজার পরিচালনায় সভায় আলোচনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পী ও ঢাকা নগরের সদস্য সুস্মিতা রায় সুপ্তি।
আলোচনা সভায় নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পী বলেন, ‘প্রীতিলতা যেসময় স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দেন, সেসময় এদেশে নারীদের সশস্ত্র স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণের পথ প্রশস্ত ছিল না। প্রীতিলতা এই স্বপ্ন নিয়েই আত্মাহুতি দিয়েছিলেন যে, তার আত্মদানের মধ্য দিয়ে দেশের বোনেরা স্বাধীনতা আন্দোলনে ভাইয়েদের পাশাপাশি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াইয়ে যোগ দেবে। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে দেশের স্বাধীনতার জন্য নারীরা সশস্ত্র সংগ্রামে অংশগ্রহণ করুক- এটাই চেয়েছিলেন প্রীতিলতা। আত্মাহুতির মধ্য দিয়ে তিনি সেই দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছিলেন।’
সুস্মিতা রায় সুপ্তি বলেন, ‘প্রীতিলতার মতো অসংখ্য শহীদের আত্মদানে পরাধীন ভারতবর্ষ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু এই শহীদদের স্বপ্নের সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কি? নারীদের মর্যাদা ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কি? আজ ব্রিটিশ নেই, পাকিস্তানি শাসক নেই। তার পরিবর্তে আছে দেশীয় শোষক শ্রেণি। এদের সবার চরিত্রই এক।’