রাজশাহী অফিস
প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:০৩ পিএম
আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২০:৪৫ পিএম
আদালত চত্বরে স্লোগান দিচ্ছে নেতাকর্মীরা। প্রবা ফটো
রাজশাহীর আদালত চত্বরে হট্টগোলে জড়িয়েছে আওয়ামী লীগের দুটি পক্ষ। রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত আদালত এলাকায় রাজশাহী-৬ আসনের সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সমর্থকদের মধ্যে এই হট্টগোল হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শাহরিয়ার আলমের নির্বাচনী এলাকার বাঘা পৌরসভার মেয়র আক্কাস আলীসহ আওয়ামী লীগ নেতারা আদালতে হাজিরা দিতে এলে আদালত চত্বরে অবস্থান নেন শাহরিয়ার আলমের অনুসারীরা। দুপুর ১টার দিকে হাজিরা দিয়ে বের হয়ে আক্কাস আলী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তখন পাশেই জেলা যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী জোবায়ের হাসান রুবনের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা শাহরিয়ার আলমের পক্ষে স্লোগান শুরু করেন।
আক্কাস আলী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলা শেষে সমর্থকদের নিয়ে আদালত চত্বরে ব্যানার হাতে মিছিল বের করেন। ‘নির্যাতিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীবৃন্দ’-এর ব্যানারে আয়োজিত ওই মিছিলের ব্যানারে লেখা ছিল—‘বাঘা-চারঘাটের সংসদ সদস্য পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম কর্তৃক আর কত নির্যাতন সইব।’
এ সময় স্লোগান-পাল্টা স্লোগানে আদালত চত্বর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
শাহরিয়ার আলমের সমর্থকদের দাবি, সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের প্ররোচনায় একটি পক্ষ নৌকার প্রার্থীদের বিরোধিতা করছেন। আর লিটন সমর্থকদের দাবি, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ক্ষমতা ধরে রাখতে দলের পুরোনো ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের নামে একের পর এক মামলা দিয়ে কোণঠাসা করে রাখছেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাঘা পৌরসভার মেয়র আক্কাস আলী বলেন, ’২০২২ সালের ২১ মার্চ বাঘা শাহদৌলা ডিগ্রি কলেজে থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে নিজেদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমাকেসহ আওয়ামী লীগের শতাধিক নেতাকর্মীর নামে মামলা করা হয়। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের নির্দেশে এই মামলাগুলো করা হয়েছে। দলের লেবাস পরে একটা রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে থেকে নৌকার বিরুদ্ধে ভোট করে অন্য দলের মানুষকে জেতায় আর আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নামে মামলা দেয়। এসব ঘটনা দলের লোক কীভাবে মেনে নেবে? আমাদের মনে হয় না এই মানুষকে নৌকা প্রতীক দিলে কেউ ভোট দেবে।’
তিনি বলেন, ’২০১৫ সালে নার্গিস, ২০১৬ সালে বাবলু চকরাজপুর ইউনিয়নে এবং ১৭ ও ২১ সালে আমি বাঘা পৌরসভায় নৌকা প্রতীকে ভোট করি। এই নির্বাচনগুলোতে শাহরিয়ার আলম নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন এবং অন্য দলের প্রার্থীকে জেতাতে সহযোগিতা করেন। ফলে ওইসব নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পরাজিত হয়।’
আক্কাস আলী বলেন, ’আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমার নামে সাতটি মামলা হয়েছে। যেখানে আসামি করা হয়েছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের একাধিক নেতাকর্মীকে।’
শাহরিয়ার আলমের সমর্থক সরদহ ইউনিয় পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা হাসানুজ্জামান মধু বলেন, ’বাঘা পৌরসভার মেয়র আক্কাস আলী আওয়ামী লীগ করলেও সব সময় দল ও স্থানীয় এমপি শাহরিয়ার আলমের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। নৌকার ও দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করেন। অনুসারীদের নিয়ে তিনি দলের মধ্যে সর্বদাই বিশৃঙ্খলা করেন।’
তিনি দাবি করেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদের প্ররোচনায় আক্কাস আলী এগুলো করছেন।