× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

যে সেতুতে উঠতে হয় সাঁকো দিয়ে

নুর আলম আকন্দ, গাইবান্ধা

প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১২:১৫ পিএম

আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১২:৩৬ পিএম

সংযোগ সড়ক না থাকায় বাঁশের সাঁকো দিয়ে গাইবান্ধার ফুলছড়িতে অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত একটি সেতুতে উঠতে হয়। সম্প্রতি তোলা। প্রবা ফটো

সংযোগ সড়ক না থাকায় বাঁশের সাঁকো দিয়ে গাইবান্ধার ফুলছড়িতে অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত একটি সেতুতে উঠতে হয়। সম্প্রতি তোলা। প্রবা ফটো

গাইবান্ধার ফুলছড়িতে অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুর সংযোগ সড়ক না থাকায় তা এলাকাবাসীর কোনো কাজে আসছে না। প্রায় অর্ধযুগ আগে নির্মাণ করা এই সেতুতে এখনও উঠতে হয় বাঁশের সাঁকো বা মই দিয়ে। স্থানীয়দের কাছে এটি ‘উড়াল ব্রিজ’ নামে পরিচিত। তবে অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত এই সেতু নির্মাণের দায় বর্তমানে সরকারি কোনো দপ্তর নিচ্ছে না। একে অন্যের ওপর দায় চাপাচ্ছে। 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বলছে, এই সেতু উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয় করতে পারে আর পিআইও কার্যালয় বলছে, এটি এলজিইডি করতে পারে। দুই দপ্তরের ঠেলাঠেলিতে দীর্ঘদিনেও সেতুটির সংস্কারসহ সংযোগ সড়ক নির্মাণ সম্ভব হয়নি। এই দুই দপ্তর ছাড়াও এই উপজেলার অন্যান্য দপ্তরও এই সেতু নির্মাণের সঠিক হদিস দিতে পারেনি।

সেতুটির অবস্থান গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার টেংরাকান্দির চরে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফুলছড়ি ইউনিয়নের টেংরাকান্দি গ্রামের সঙ্গে বাজে ফুলছড়ি, ফুলছড়ি নৌঘাঁটিসহ অন্তত চারটি গ্রামের সংযোগ রক্ষা করতে খালের ওপর প্রায় ৩০ ফুট দৈর্ঘ্যের এই সেতু নির্মাণ করা হয়। তবে সেতুটির সংযোগ সড়ক না থাকায় কোনোমতে সাঁকোর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে লোকজন চলাচল করছে। 

স্থানীয়রা জানান, সেতুটি নির্মাণের পর দুই পাশের সংযোগ সড়ক তৈরির আগেই বন্যা হয়। এরপর আর সংযোগ সড়ক তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। স্থানীয়রা চাঁদা তুলে সেতুর দুই পাশে বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন। প্রায় অর্ধযুগ ধরে সেই সাঁকো দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে চার গ্রামের হাজার হাজার মানুষ।

টেংরাকান্দি এলাকার ব্যবসায়ী আব্দুল ওহাব মিয়া বলেন, এই পথ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে অনেক মানুষ চলাচল করে বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীরাও এই পথ দিয়ে চলাচল করে। সেতুটির সংস্কারসহ দুই পাশে সংযোগ সড়ক করা হলে হাজার হাজার মানুষের উপকার হবে।

পূর্ব টেংরাকান্দি নুরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক শাজাহান প্রামানিক বলেন, এই সেতুটি জনগণের কোনো উপকারে আসে নাই। এখন এই এলাকার মানুষের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায়ই সাঁকো দিয়ে চলাচলের সময় দুর্ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে ছোট বাচ্চা ও বয়স্ক মানুষের চলাচলে ব্যাপক অসুবিধা হয়। 

এই পথে চলাচলকারী আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা নামে একজন বলেন, এর আগেও এখানে একটি সেতু ছিল। সেটি দিয়েও মানুষ চলাচল করতে পারে নাই আবার নতুন করে এই সেতু হলেও মানুষের কোনো কাজে আসছে না। সরকারের টাকাগুলো শুধু নষ্ট হয়েছে।

এ ব্যাপারে ফুলছড়ি ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সইরুদ্দিন মোবাইল ফোনে বলেন, যত দূর মনে পড়ে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণ করেছিল পিআইও কার্যালয়। নির্মাণের পর থেকে সংযোগ সড়কের অভাবে কোনো যানবাহন এই সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করতে পারেনি। পরে স্থানীয়রা চাঁদা তুলে সাঁকো তৈরি করে কোনোমতে হেঁটে চলাচল করে আসছে। এলাকার মানুষের সীমাহীন এই দুর্ভোগ থেকে বাঁচাতে সেতুটি সংস্কারের দাবি জানাই। 

ফুলছড়ি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শহীদুজ্জামান বলেন, ওইসব ফুটওভার সেতু আমরা করি না। সেতুটা আমাদের নয়। ওটা এলজিইডির হতে পারে। তারপরও আমাদের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার মিজান সেখানে দীর্ঘদিন ছিলেন। তিনিই ভালো বলতে পারবেন।

ফুলছড়ি উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ইঞ্জিনিয়ার রফিকুল ইসলাম ছুটিতে থাকায় মোবাইল ফোনে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। 

উপ-সহকারী প্রকৌশলী এস্তামুল হক বলেন, ওইটা আমরা করি নাই। ওই সময় আমি ছিলাম না। উপজেলা চেয়ারম্যান বলার পর আমি সেতুটি দেখতে গেছিলাম; দেখে মনে হয়েছে আমাদের (এলজিইডি) কোনো প্রকল্পের করা নয়। হয়তো অন্য কোনো ফান্ড থেকে কেউ করতে পারে। সেটা পিআইও (প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা) করতে পারে, আবার এলজিইডিও করতে পারে।

তথ্য সংরক্ষণের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক ফাইল অডিট হয়ে গেলে বেশিদিনের পুরোনো ফাইল সংরক্ষণ করা থাকে না।

তিনি আরও বলেন, আমরা একটা প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। অনুমোদন হলে সেতুটি সম্পূর্ণ নতুনভাবে করা হবে। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা