মিরপুরে বিদ্যুতায়িত হয়ে মৃত্যু
ঝালকাঠি প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২৩:১০ পিএম
আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০:৪৪ এএম
মা-বাবা ও বোনের দাফনের পর শিশু হোসাইনের কান্না থামানোর চেষ্টা করছেন স্বজনরা। শনিবার ঝালকাঠির আগলপাশা গ্রাম থেকে তোলা। প্রবা ফটো
ঢাকায় বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যাওয়া একই পরিবারের তিনজনের লাশ ঝালকাঠিতে দাফন করা হয়েছে। শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় জানাজা নামাজ শেষে তাদের মরদেহ সদর উপজেলার বাসন্ডা ইউনিয়নের আগলপাশা গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এর আগে গত শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে মো. মিজান (৩০), তার স্ত্রী মুক্তা বেগম (২৫) ও মেয়ে লিমার (৭) মরদেহ বাড়িতে আনা হয়। এ সময় বাড়িতে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বৃষ্টির মধ্যে মিরপুরে কমার্স কলেজসংলগ্ন ঝিলপাড় বস্তির বিপরীত পাশের রাস্তায় বিদ্যুতায়িত হয়ে একই পরিবারের তিনজনসহ চারজনের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহত দম্পতির সাত মাস বয়সি ছেলে হোসাইন অলৌকিকভাবে বেঁচে যায়। মিজান ঢাকায় শরবত, ঝালমুড়ি ইত্যাদি বিক্রি করে সংসার চালাতেন। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে থাকতেন ঝিলপাড় বস্তিতে। তিনি ঝালকাঠি সদরের বাসন্ডা ইউনিয়নের আগলপাশা গ্রামের নাসির হাওলাদারের ছেলে।
মিজানের বাবা নাসির হাওলাদার বলেন, ‘আমার পোলায় বউ-বাচ্চা লাইয়া ঢাকায় ঝালমুড়ি বেচাবিক্রি কইরা কোনোরকম সংসারা চাইলত। একলগে তিনজনের এই করুণ মৃত্যু কোনোভাবে মানা যায় না। সাত মাস বয়সি শিশু হোসাইনের মধ্যে ওদের স্মৃতি খুঁইজা আমারে বাঁচতে হইবে। এ ঘটনার জন্য দায়ীদের আমি বিচার চাই।’
এদিকে মা-বাবাকে হারিয়ে কিছুতেই কান্না থামছে না শিশু হোসাইনের। কোলে নিয়ে প্রতিবেশীদের শিশুটির কান্না থামানোর চেষ্টা করতে দেখা যায়।
নাসির হাওলাদার জানান, তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। মিজান ভাই-বোনদের মধ্যে মেজ। চার বছর আগে তিনি পরিবার নিয়ে ঢাকায় যান।
প্রতিবেশী আজগর আলী বলেন, মিজানের পরিবার অত্যন্ত গরিব। দরিদ্রতার কারণে মিজান ঢাকায় গিয়ে শরবত ও ঝালমুড়ি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। বেঁচে যাওয়া শিশুটির জন্য এলাকাবাসীর কষ্ট হচ্ছে। সবার উচিত শিশুটির খোঁজখবর রাখা, পরিবারটির সহায়তা করা।