সংগঠন মায়ের কান্নার উদ্যোগে আলোচনা
দিনাজপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:২২ পিএম
আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:২৪ পিএম
দিনাজপুরে মায়ের কান্নার আলোচনা সভায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকসহ অন্যরা। ছবি : প্রবা
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান দেশে গুমের রাজনীতি শুরু করেছিল বলে অভিযোগ করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। এজন্য তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতির মরণোত্তর বিচারও দাবি করেছেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের আমলে সেনা ও বিমানবাহিনীর সদস্যদের বিনাবিচারে হত্যা করা হয়েছিল। জুনে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, অথচ রায় হয়েছে ডিসেম্বরে, এমনও হয়েছে।’
শনিবার (২৩ সেপ্টম্বর) সকালে দিনাজপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ‘মায়ের কান্না’ সংগঠনের উদ্যোগে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে অকার্যকর, ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তাদের ছেলে তারেক রহমান। জিয়ার প্রত্যক্ষ মদদে পঁচাত্তরের পর দেশে নির্বিচারে যাদের হত্যা করা হয়েছে, সেসব ঘটনার বিচারে আলাদা কমিশন গঠন করা হবে। এরপর খুনিদের মরণোত্তর বিচার করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়াতে হবে। তবেই জাতি দায়মুক্ত হবে।
‘বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যাকারী জিয়ার গুম-খুন ও খালেদা জিয়ার অগ্নিসন্ত্রাসের ভুলুণ্ঠিত মানবাধিকার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা সংসদ সদস্য নাহিদ এজাহার খান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রংপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক, ইকবালুর রহিম এমপি, মানবাধিকার কর্মী এসএম আব্রাহাম লিংকন, দীপ্ত টিভির সিইও ফুয়াদ হাসান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলতুফুজ্জামান মিতা, জেলা আওয়ামী লীগের অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
মোজাম্মেল হক বলেন, পঁচাত্তরের বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর তো কারও মানবতা দেখিনি। অথচ তখন দায়মুক্তির আইন করে খুনিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। জাতির পিতাকে হত্যা করে তার বিচার চাওয়া যাবে না। এমন আইন করে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘মায়ের কান্নার অভিযোগের দালিলিক প্রমাণ রয়েছে। কমিশন গঠন করে জড়িতদের বিচারের প্রক্রিয়া চলছে। আইনমন্ত্রী সেই প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।’
‘গুম, খুন ও অগ্নিসন্ত্রাসকারী দল’ যাতে আগামীতে আর কখনও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকারও আহ্বান জানান মোজাম্মেল হক।
আলোচনা সভার পূর্বে গণদাবী-৭৭ এবং অগ্নিসন্ত্রাসের আর্তনাদ নামক দুইটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শিত হয়।
জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, ‘খুনের রাজনীতি শুরু করেছেন জিয়াউর রহমান। তার পথ ধারে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দেশে খুন, অগ্নিসন্ত্রাস, অরাজকতা সৃষ্টি করে দেশকে অকার্যকর করার অপচেষ্টা চালিয়েছে।’
জাতীয় সংসদ এলাকা থেকে জিয়ার কবর অন্যত্র সরানোর দাবি জানিয়ে সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা নাহিদ এজাহার খান এমপি বলেন, ‘অগ্নিসন্ত্রাস, হত্যা, মানুষ পুড়িয়ে হত্যার দায়ে তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে।’
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা বলেন, বিদ্রোহ দমনের নামে ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান এক হাজার ১৫৬ জন সামরিক বাহিনীর সদস্যদের ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হত্যা করেন। জিয়ার মরণোত্তর বিচার ও সংসদ ভবন এলাকা থেকে তার কবর অপসারণ করতে হবে।