জামালপুরে পাটের আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় কৃষকরা লোকসানের মুখে পড়ছেন। চাষিদের উৎপাদন খরচও উঠছে না। এতে হতাশায় চাষিরা।
স্থানীয় একাধিক কৃষক সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বিঘায় উৎপাদন খরচ প্রায় ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা। পাট উৎপাদন হয়েছে ৫ থেকে ৬ মণ। প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭০০ থেকে ২ হাজার ১০০ টাকায়। এতে প্রতি বিঘায় লোকসান হচ্ছে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। গত বছর পাট ২ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা মণে বিক্রি হলেও এ বছর দাম ১ হাজার টাকা কমেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় ২৬ হাজার ৭০৪ হেক্টর জমিতে দেশি ও তোষা জাতের পাট চাষ হয়েছে। গত বছর ২৯ হাজার ৯৪৫ হেক্টরে চাষ হলেও এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ হাজার ২৬৬ হেক্টর কম জমিতে পাট চাষ হয়েছে।
মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের কৃষক রাজ্জাক বলেন, ‘৫২ শতক জমিতে পাটের আবাদ করেছিলাম, ফলন তেমন ভালো হয়নি। গত বছর একই জমিতে যেখানে ১২ মণ পাট হয়েছে, এবার সেখানে মাত্র ৮ মণ পাইছি। দামও গতবারের চাইতে কম। লাভ তো দূরে থাক, খরচই উঠবে না।’
মাহামুদপুর ইউনিয়নের কৃষক মজিবুর রহমান বলেন, ‘আবাদে যে হাড়ভাঙা খাটুনি করি, সেই খাটুনির কোনো দাম পাওয়া গেল না। দুই বাজারে ঘুরে শেষে বাড়ি থেকেই ২ হাজার টাকা মণে পাট বিক্রি করছি।’
ব্যবসায়ী মোজাফ্ফর বলেন, বড় মোকামে পাট কেনার তেমন আগ্রহ নেই। মোকামে গত বছরের পাট এখনও আছে, সেগুলোই বিক্রি হচ্ছে না। সব মিলিয়ে এ বছর পাটের দাম কম।
জামালপুরের মুখ্য পাট পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সরকারি মিলগুলো বন্ধ হওয়ার কারণে পাটের দাম কমে গেছে। বেসরকারি মিলগুলো সরকারের নির্ধারিত মূল্যে পাট কিনছেন না।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘এ মৌসুমে জেলায় অনাবৃষ্টির কারণে পাটের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। পাট চাষ ও কাটা-- এই দুই সময়েই বৃষ্টি খুব কম ছিল। আমরা কৃষকদের পাশে থেকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছি।’