সদরপুর-চরভদ্রাসন (ফরিদপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৭:২১ পিএম
সদরপুর উপজেলা নির্বাচন অফিস। ছবি : সংগৃহীত
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসে নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র, জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন কিংবা ভোটার স্থানান্তরে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিটি কাজের জন্য নির্দিষ্ট হারে টাকা দিতে হয়। না হয় বিভিন্ন অজুহাতে সেবাপ্রত্যাশীদের হয়রানি করা হয়। তাদেরকে দিনের পর দিন ঘুরতে হয়। জাতীয় পরিচয়পত্রের কাজ দেরিতে হওয়ায় পাসপোর্ট, চাকরিসহ জরুরি কাজে বিপাকে পড়ছেন অনেকেই।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হয়রানির শিকার একাধিক ব্যক্তি জানান, উপজেলা নির্বাচন অফিসের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. এনায়েত মল্লিক এখন কাজ করেন চুক্তিতে-কমিশনে। তার নির্বাচিত কম্পিউটারের দোকানে ৫-৭ হাজার টাকা দিলেই নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র, জাতীয় পরিচয়পত্রের সংশোধন কিংবা ভোটার স্থানান্তরের কাজ সহজেই হয়ে যায়। না হয় কাগজপত্র ঠিক থাকলেও নানা অজুহাতে দিনে দিনের পর দিন নির্বাচন অফিসে ঘুরতে হয়।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে আসা সদর ইউনিয়নের পূর্ব শ্যামপুর এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, ‘এক কাজের জন্য কয়েকবার নির্বাচন অফিসে আসতে হচ্ছে। এখানে গজিয়ে উঠেছে দালালের সিন্ডিকেট। দালালদের টাকা দিলে দ্রুত সময়ের মধ্যেই কাজ হয়ে যায়। যারা দালালের সাহায্য নিচ্ছে না বা টাকা দিচ্ছে না তাদের ঘুরতে হচ্ছে মাসের পর মাস।’
কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের নিচগ্রাম এলাকার বাসিন্দা নাইম উদ্দিন বলেন, ‘জন্মনিবন্ধনের সমস্যা আছে বলে আমার এক আত্মীয়ের কাছে নতুন ভোটার করার জন্য ৬ হাজার টাকা চেয়েছে কম্পিউটার অপারেটর এনায়েত। টাকা না দেওয়ায় কাজ আর হয়নি।’
আকোটের চর ইউনিয়নের মণিকোঠা এলাকার বাসিন্দা শিপন বেপারি বলেন, ‘ইমারজেন্সি ভোটার হওয়ার জন্য আইডি কার্ড করতে নির্বাচন অফিসের কম্পিউটার অপারেটর ৩ হাজার টাকা চেয়েছে। টাকা দিতে পারিনি বলে কাজ স্থগিত রয়েছে।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাচন অফিসের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. এনায়েত মল্লিক মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে বলা এসব অভেযোগ মিথ্যা। আমি এসব করি না। অফিসের অন্য কোনো স্টাফ জড়িত থাকতে পারে।’
উপজেলার আশপাশের কিছু কম্পিউটারের দোকান চুক্তির মাধ্যমে কাজ দেয়Ñ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি কারও সঙ্গে কোনো চুক্তি করি না। আপনারা যাচাই করে দেখেন’ বলেই ফোন কেটে দেন। পরে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ করেননি।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এমন কোনো অভিযোগ পাইনি। তাই এসব বিষয়ে অবগত নই। আপনাদের মাধ্যমে জানলাম। বিষয়টি নজরে থাকবে।’