× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

কাপ্তাইয়ে ভাসমান হাট

প্রতি হাটে বিক্রি হয় ১০ লাখ টাকার কলা

অর্ণব মল্লিক, কাপ্তাই (রাঙামাটি) প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৪:১৪ পিএম

রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের ভাসমান কলার হাট। বৃহস্পতিবার তোলা। প্রবা ফটো

রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের ভাসমান কলার হাট। বৃহস্পতিবার তোলা। প্রবা ফটো

লেক ধরে একটি একটি করে নৌকা আসছে। ভিড়ছে ঘাটে। প্রতিটি নৌকায় আছে পাহাড়ে উৎপাদিত কলা। বিক্রি করতে আনছেন চাষিরা। পার্বত্য অঞ্চলে উৎপাদিত এসব কলা ফরমালিনমুক্ত ও সুস্বাদু হওয়ায় এর কদর বেশি। নৌকা ঘাটে ভিড়তে না ভিড়তেই ব্যবসায়ীরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন সেই নৌকার ওপর। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পাইকাররা দর-কষাকষি করছেন। গত বৃহস্পতিবার রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের ভাসমান কলার হাটে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। 

কাপ্তাই লেকের ওপর প্রতি শনিবার ও বৃহস্পতিবার বসে এ ভাসমান কলার হাট। যেখানে রাঙামাটির বিভিন্ন দুর্গম এলাকা থেকে নৌকাযোগে বিপুল পরিমাণ কলার ছড়া নিয়ে বিক্রি করতে আসেন চাষিরা। তাই এসব কলা কিনতে জেটিঘাটে ভিড় জমান দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত পাইকাররা। প্রতি হাটে প্রায় ১০ লাখ টাকার কলা বিক্রি হয়।

ভাসমান কলার হাটে গিয়ে দেখা যায়, সারি সারি কলা নিয়ে একের পর এক ইঞ্জিনচালিত নৌকা ভিড়ছে ঘাটে। বোট ভেড়ার সঙ্গে সঙ্গেই পাইকারি ক্রেতারা কলাগুলো কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন। হচ্ছে দর-কষাকষি। দরদামে মিলে গেলেই নৌকা থেকে কলার ছড়াগুলো তোলা হচ্ছে ট্রাকে। পাহাড়ে উৎপাদিত এসব কলার ছড়া চলে যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

ভাসমান কলার হাট নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলা সদর, ধুপশীল, লতাপাহাড়, ফারুয়া, রাইক্ষং, কেংড়াছড়ি, কাপ্তাইয়ের হরিণছড়া, বারুদগোলাসহ বিভিন্ন দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল থেকে চাষিরা কাপ্তাই জেটিঘাট বাজারে কলা নিয়ে আসেন বিক্রির জন্য। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় এবং কলার দাম কম হওয়ায় চট্টগ্রাম শহরের পাইকারি ক্রেতাদের আগ্রহ থাকে এই কলার হাটে। এ কারণে এ হাটে এক দিনেই লাখ লাখ টাকার কলা কেনাবেচা হয়ে থাকে।

বিলাইছড়ির দুর্গম ফারুয়া এলাকা থেকে নিজ বাগানের কলা বিক্রি করতে এসেছেন মনিধন তঞ্চঙ্গ্যা। তিনি জানান, দুর্গম ফারুয়া থেকে নৌকায় করে কাপ্তাই জেটিঘাটে কলা নিয়ে আসতে ৭-৮ ঘণ্টা লেগে যায়। এতে সময় ও অর্থ দুটাই অনেক ব্যয় হয়। তবে কষ্ট হলেও কাপ্তাই জেটিঘাটে কলা বিক্রি করতে আনতে পারলে কিছুটা লাভবান হওয়া যায়। তিনি জানান, এক হাটেই তিনি প্রায় দুই লাখ টাকার কলা বিক্রি করে থাকেন। এতে প্রায় ৪০ হাজার টাকা লাভ হয়।

এ ছাড়া কলা বিক্রি করতে আসা বিলাইছড়ির দুর্গম রাইক্ষংপাড়ার কৃষক সাধনময় চাকমা জানান, আমাদের নিজস্ব বাগানের উৎপাদিত এই কলা আমরা জেটিঘাট হাটে নিয়ে আসি। তবে একসময় লেকের পানি কমে যাওয়ায় কষ্ট হলেও বর্তমানে লেকের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় যাতায়াত ব্যবস্থা অনেক ভালো হয়েছে। এতে জেটিঘাটে কলা বিক্রি করে আমরা লাভবান হচ্ছি। এ ছাড়া এভাবে কলা বিক্রি করেই আমাদের সবার সংসার চলে।

এদিকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কাপ্তাই জেটিঘাটে কলা কিনতে আসেন ব্যাপারীরা। তাদের মধ্যে একজন চট্টগ্রাম শহরের বাসিন্দা মো. আব্দুর রহিম। তিনি জানান, চট্টগ্রাম ফিরিঙ্গিবাজারে তার ফলের দোকান রয়েছে। বিশেষ করে কাপ্তাইয়ে যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো হওয়াতে তিনি কাপ্তাই জেটিঘাটে ভোরবেলা চলে আসেন কলা কিনতে। এখান থেকে কলা কিনে বেশ লাভবান হই। 

চট্টগ্রামের রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, হাটহাজারী থেকে আসা বেশ কয়েকজন পাইকারি ক্রেতা জানান, পাহাড়ের কলাগুলো খুব ভালো। দামও অনেকটা কম। প্রতি সপ্তাহেই তারা একেক ব্যবসায়ী ২-৩টি ট্রাকে করে লক্ষাধিক টাকার কলা শহরে নিয়ে যান। 

এ ছাড়া কাপ্তাই জেটিঘাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে জানা যায়, কাপ্তাইয়ের জেটিঘাটে ভাসমান এই কলার হাট একটি ঐতিহ্যবাহী বাজার। বিশেষ করে দীর্ঘদিন ধরে এই হাট বসছে। বর্তমানে এই ভাসমান হাটের জনপ্রিয়তা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি সপ্তাহের হাটে ১০ লাখ টাকারও বেশি কলার কেনাবেচা হয়ে থাকে। এতে পাহাড়ের কলাচাষিরা বেশ লাভবান হচ্ছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা