চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:১০ পিএম
আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:৫৪ পিএম
চট্টগ্রামের আদালত ভবন। ছবি: সংগৃহীত
বঙ্গবন্ধু ও জেলহত্যা মামলার অন্যতম সাক্ষী নৌ-বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রাব্বানী হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া মো. সাইফুল ইসলাম ওরফে বিলাই সাইফুলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও একমাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. রবিউল আলম এ রায় ঘোষণা করেন। এর আগে আসামি সাইফুলকে কারাগার থেকে আদালতে নেওয়া হয়। রায় ঘোষণা শেষে তাকে ফের কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালতের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট অশোক কুমার দাশ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘গোলাম রাব্বানী হত্যা মামলায় এর আগে সাইফুল ইসলামকে খালাস দিয়েছিলেন আদালত। পরে বাদী পক্ষ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করলে হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে নতুন করে রায় দিতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের আদেশের পর ফের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এরপর গতকাল বুধবার যুক্তিতর্ক শেষ হয়। এদিন আদালত রায় ঘোষণা করেন। এতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে আসামি সাইফুল ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত।’
এর আগে, ২০০৪ সালে ১১ এপ্রিল গুলিবিদ্ধ হন গোলাম রাব্বানী। সে সময় তিনি কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনে (কেইপিজেড) ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে কর্মরত ছিলেন। ওই বছরের ২৫ এপ্রিল তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় ব্যাংককে মারা যান।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, গোলাম রাব্বানীকে হত্যার ঘটনায় কেইপিজেডের সাবেক পরিচালক আবু নাসের চৌধুরী ও কর্মচারী হুমায়ুন কবির চৌধুরীর নাম উল্লেখ করে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় ২০০৪ সালের ১১ এপ্রিল ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম এমতাজুল ইসলাম মামলা করেন। পরে একই বছরের ২৮ আগস্ট সাত আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। তারা হলেন, আবু নাসের চৌধুরী, হুমায়ুন কবির চৌধুরী, সাইফুল ইসলাম ওরফে বিলাই সাইফুল, মনছুর আলম, মো. সেলিম, সোহেল প্রকাশ আবদুল মালেক ও মো. হাশেম।
পরে ওই মামলায় ২০০৫ সালের ৭ এপ্রিল চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার আদালতে রায় ঘোষণা করেন। এই রায়ে মো. সেলিম, মো. হাশেম ও সোহেলের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
আসামি আবু নাসের চৌধুরী ও হুমায়ুন কবির চৌধুরীর বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১২০(বি)/৩০২ ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের প্রত্যেককে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
আসামি সাইফুল ইসলাম ওরফে বিলাই সাইফুল, মনছুর আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেওয়া হয়।
নিম্ন আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ দুই আসামি আবু নাসের ও হুমায়ুন কবিরের সাজা বৃদ্ধি চেয়ে এবং আসামি সাইফুলের খালাসের বিরুদ্ধে পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। শুনানির পর ২০০৫ সালের ২ আগস্ট হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ রুল জারি করেন।