× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

জয়দেবপুর রেলক্রসিং

রেলগেটেই শেষ দিনের ৯ ঘণ্টা

রেজাউল করিম, গাজীপুর

প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৫:১৬ পিএম

গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলক্রসিংয়ে কিছুক্ষণ পর পর সিগন্যাল পড়ায় সড়কের দুই পাশেই সৃষ্টি হয় তীব্র যানজটের। বুধবার তোলা। প্রবা ফটো

গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলক্রসিংয়ে কিছুক্ষণ পর পর সিগন্যাল পড়ায় সড়কের দুই পাশেই সৃষ্টি হয় তীব্র যানজটের। বুধবার তোলা। প্রবা ফটো

জয়দেবপুর রেলক্রসিং গাজীপুরবাসীর জন্য একটি অভিশাপ। শহরের প্রবেশমুখে স্থাপিত এই রেলক্রসিং পার হয়েই যেতে হয় গুরুত্বপূর্ণ সব জায়গায়। ক্রসিংয়ের কারণে তৈরি যানজটে প্রতিদিন ৮-৯ ঘণ্টা সময় নষ্ট হয় নগরবাসীর। এজন্য স্থানীয়রা বলেন, ‘মিসরের দুঃখ নীলনদ, আর গাজীপুরের দুঃখ জয়দেবপুর রেলক্রসিং।’ 

ক্রসিংয়ের অদূরেই জয়দেবপুর রেলস্টেশন। ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ এবং উত্তরবঙ্গের সব ট্রেন এই পথ দিয়ে যাতায়াত করে। জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, মৌতি এক্সপ্রেস ও মালগাড়ি ব্যতীত প্রতিদিন আসা-যাওয়া করে ৬৪টি যাত্রীবাহী ট্রেন। প্রতিটি ট্রেন আসা-যাওয়ার সময় স্বাভাবিকভাবেই দুই পাশের পথ আটকে দেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় ট্রেন আসার অপেক্ষা। প্রতিবার অন্তত ১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হয় রাস্তার দুই পাশে আটকে পড়া যাত্রীসহ বিভ্ন্নি যানবাহন চালকদের।

নগরবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জয়দেবপুর রেলক্রসিং পার হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা পর্যায়ের অধিকাংশ সরকারি দপ্তর, আদালত, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় (নগর ভবন) যেতে হয়। এ ছাড়া আশেপাশেই রয়েছে জেলা পরিষদ কার্যালয়, শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যালয়, জেলার একমাত্র স্টেডিয়াম, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অভিজাত আবাসিক এলাকা। এসব প্রতিষ্ঠান ও এলাকায় চলাচলকারীদের যানজটে ভোগান্তি পোহাতে হয়।

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে গাজীপুর শহরে প্রবেশের প্রধান এবং একমাত্র সড়ক হচ্ছে শিববাড়ী-জয়দেবপুর-রাজবাড়ী সড়ক। এর প্রবেশপথেই জয়দেবপুর রেলক্রসিং। এ রেলক্রসিংয়ের দক্ষিণ পাশেই রয়েছে জয়দেবপুর রেল জংশন। এ পথে প্রতিদিন আসা-যাওয়া করে ৬৪টি যাত্রীবাহী ট্রেন। প্রতিবার যদি গড়ে ৬-৮ মিনিট সময় যান চলাচল বন্ধ থাকে, তাহলে প্রতিদিন কমপক্ষে ৯ ঘণ্টা নিয়মিত যানজটের কবলে পড়তে হয় ।

২০১৩ সালে গাজীপুর সিটি করপোরেশনে উন্নীত হলেও রেলক্রসিংয়ের সমস্যার সমাধান হয়নি। উল্টো বেড়েছে মানুষের চাপ। রেলক্রসিংয়ের পাশে রেললাইনের ওপর আড়াআড়ি বসেছে দোকানপাট। এগুলো সবই ভ্রাম্যমাণ দোকান। এদের মধ্যে ফল বিক্রেতার সংখ্যাই বেশি। ট্রেন কাছাকাছি এলে ফলের ঝুড়িগুলো তুলে নেন। ট্রেন চলে গেলে আবারও পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে। ফলে প্রায় প্রতিদিনই এখানে কোনো না কোনো দুর্ঘটনা ঘটে। অনেকেই ট্রেন আসার আগে রেলক্রসিংয়ের প্রতিবন্ধক ফেলার পর নিচ দিয়ে যাতায়াত করেন। মোটরসাইকেল আরোহীদের অনেকে সেগুলো উঁচু করে বিপজ্জনকভাবে পার হয়ে যান। 

নগরবাসীর অভিযোগ, সিটি করপোরেশন হয়েছে ১০ বছর। কিন্তু এখনও ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়নি। মেয়র নির্বাচনের আগে সবাই প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে ভুলে যান। এ ছাড়া এই আসন থেকে বিভিন্ন সময় নির্বাচিত সংসদ সদস্যরাও কোনো জোরালো পদক্ষেপ নেননি।

ছায়াবীথি এলাকার বাসিন্দা আবু রায়হান বলেন, ‘এখানে ফ্লাইওভার নির্মাণ করা জরুরি। ট্রেন আসার সময় গুরুতর রোগীদের নিয়ে বেহাল অবস্থার মধ্যে পড়তে হয় স্বজনদের। নগরীতে আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িও আটকে থাকতে দেখা গেছে। এই রেলক্রসিং এখন গলার কাঁটা হয়ে উঠেছে।’

জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার হানিফ আলী বলেন, ‘প্রতিদিন এই রেলক্রসিং অতিক্রম করে যাত্রীবাহী ৬৪টি ট্রেন। এ ছাড়া মৌতি এক্সপ্রেস ও মালগাড়ি রয়েছে। মৌচাক রেলস্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ার পরেই গেট বন্ধ করার নিয়ম। কিন্তু যানজট নিরসনের জন্য আরও ৫-৭ মিনিট পরে রেলক্রসিংয়ের গেট বন্ধ করি। এখানে ফ্লাইওভার হওয়াটা জরুরি। এতে ভোগান্তি কমবে।’ 

জানতে চাইলে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এএসএম সফিউল আজম বলেন, ‘ফ্লাইওভারের কাজটি জাইকার প্রজেক্ট। এজন্য সার্ভে চলমান রয়েছে। এটা স্থানীয় সরকারের কাজ, তারাই কাজটি করবে। আমরা তাদের সহযোগিতা করছি। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজটি শুরু হবে।’ 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা