কুড়িগ্রাম প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:০৫ পিএম
আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:৫৮ পিএম
কুড়িগ্রামের চিলমারী-রৌমারী রুটে প্রথমবারের মতো ফেরি চলাচলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেননৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। প্রবা ফটো
দীর্ঘ অপেক্ষার পর কুড়িগ্রামের চিলমারী-রৌমারী রুটে প্রথমবারের মতো ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে চিলমারী নদীবন্দর উন্নয়নের ভিত্তিপ্রস্থরও স্থাপন করা হয়েছে। যার ফলে দারিদ্র্যপীড়িত জেলা কুড়িগ্রামে উন্নয়নের একটি নতুন মাত্রা যোগ হলো।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) কুড়িগ্রামের চিলমারী (রমনা) ফেরিঘাটে ‘চিলমারী-রৌমারী নৌরুটে ফেরিঘাট ও ফেরি সার্ভিস উদ্বোধন এবং চিলমারী নদীবন্দর উন্নয়নের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ)চিলমারী নৌ-বন্দরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে চিলমারী-রৌমারী রুটে নৌ-পথের দৈর্ঘ্য ২১ কিলোমিটার। তবে নদের ড্রেজিং করা হলে এ পথের দৈর্ঘ্য কমে হবে ১৩ থেকে ১৪ কিলোমিটার। কুড়িগ্রাম জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে দুটি উপজেলা রৌমারী ও চর রাজীবপুর ব্রহ্মপুত্র নদ দিয়ে বিচ্ছিন্ন। এ দুটি উপজেলার মানুষকে নৌকায় করে ঝুঁকি নিয়ে কুড়িগ্রাম জেলা শহরে যেতে হয়। এখন ফেরি চলাচল শুরু হওয়ার পর তারা নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারবেন।
এ উদ্বোধন উপলক্ষে বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমোডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফার সভাপতিত্বে একটি সুধী সমাবেশ আয়োজিত হয়। এতে ফেরির ভাড়া কমানোর দাবি ওঠে। এ দাবি তোলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন।
এ ব্যাপারে নৌ-প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘চিলমারী-রৌমারী রুটে ফেরি চলাচল শুরু হচ্ছে। আজকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) কুঞ্জলতা ফেরি দিয়ে রুটটিতে চলাচল শুরু হলো। এখানে ভাড়া কমানোর একটা দাবি রেখেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। সর্বসাধারণের সুবিধার জন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রস্তাবিত ভাড়া থেকে কমিয়ে সিএনজিচালিত বেবি ট্যাক্সি/অটোরিকশা ৬৬০ টাকা থেকে কমিয়ে ৩০০ টাকা, মোটরসাইকেল ২২০ টাকা থেকে কমিয়ে ১০০ টাকা, বাইসাইকেল ১২০ টাকা থেকে কমিয়ে ৫০ টাকা, জনসাধারণের জন্য প্রস্তাবিত ৮০ টাকা কমিয়ে ৫০ টাকা করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা ও অ্যাম্বুলেন্সের কোনো ভাড়া ভাড়া লাগবে না। অন্যান্য যানের ক্ষেত্রেও ভাড়া শতকরা ১৫ ভাগ কমানো হয়েছে। আজ থেকে ফেরি চলাচলের কারণে ব্রহ্মপুত্র নদ বিধৌত রৌমারী-রাজীবপুর উপজেলার মানুষদের জেলা শহরে যাতায়াতে ভোগান্তি কমে আসবে। চিলমারী-রৌমারী রাজিবপুরই নয়, কুড়িগ্রামের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ অনেক সহজ হবে, যাতায়াত খরচও কমে যাবে। পরবর্তীতে আরও একটি ফেরি এ রুটে যুক্ত হবে। এই ফেরি রুটের নাব্যতা বজায় রাখার জন্য দুটি ড্রেজার থাকবে।’
রেল, নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সাবেক সভাপতি নাহিদ হাসান নলেজ বলেন, ‘চিলমারী-রৌমারী ফেরি চালুর দাবিতে ১৪ বছর থেকে আন্দোলন-সংগ্রাম করে আসছি। ফেরি চলাচল এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। তবে দারিদ্র্যপীড়িত জেলার মানুষের কথা বিবেচনা করে যানবাহন ও যাত্রী পারাপারের ভাড়া সহনীয় পর্যায়ে রাখতে হবে। তবেই এখানকার মানুষ রাষ্ট্রীয় সুবিধা ভোগ করতে পারবে।'
সুধী সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব ও বিআইডব্লিওটিসির চেয়ারম্যান এস এম ফেরদৌস আলম, জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ, জেলা পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন।