চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২১:০৪ পিএম
আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২১:৩৩ পিএম
বন্ধুর মৃত্যুর খবরে শোকে মারা যান আরেক বন্ধু আজম (বাঁয়ে)। পাশাপাশি কবরে সমাহিত করা হয় তাদের। প্রবা ফটো
চট্টগ্রামের হাটহাজারী পৌরসভার আজিমপাড়ার কালা চাঁন ফকির দীঘির পাড়ে পাশাপাশি দুটি কবর খোঁড়া হয়েছে। সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৬টার দিকে একটি কবরে একজনকে দাফন করা হয়। পাশের কবরটা তখনও খালি। ঘণ্টাচারেক পরে সেই কবরেও আরেকজনকে দাফন করা হয়। তারা দুজনই বন্ধু। ছোটবেলা থেকে একই সঙ্গে একই পাড়ায় বেড়ে উঠেছেন তারা। একজনের মৃত্যুর খবরে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আরেকজনের মৃত্যু হয়।
মৃত দুই বন্ধুর নাম মো. আরাফাত ও আজম। আরাফাত পেশায় মিস্ত্রি, আজম সিএনজিচালক। দুজনের বয়স আনুমানিক ২৮ বছর। সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান আরাফাত। তার মৃত্যুর খবর শুনে হৃদরোগে আক্রান্ত হন আজিম। চার ঘণ্টার ব্যবধানে মারা যান তিনিও।
চট্টগ্রামের হাটহাজারী পৌরসভার আজিমপাড়া এলাকায় মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটে। আরাফাত ওই এলাকার মূসা সওদাগরের ছেলে ও আজম একই এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে। বন্ধুর শোকে বন্ধুর মৃত্যুর এমন বিষয়টি নাড়া দিয়েছে স্থানীয়দের।
স্থানীয় কাউন্সিলর মো. আজম বলেন, ‘তারা দুজন একসঙ্গে বড় হয়েছেন, একই বাড়ির ছেলে। আরাফাতের মৃত্যুর খবরে আজম দেখতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে হাসপাতাল নিয়ে গেলে তিনিও মারা যান। দুজনের মৃত্যুই হৃদরোগের কারণে হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।’
এদিন বিকালে হাটহাজারী কালা চাঁন ফকির জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে আসর নামাজের পর আরাফাতের জানাজা শেষে মসজিদের কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। পাশে আরেকটি কবরও খোঁড়া হয়। একদম পাশাপাশি। এশার নামাজের পর আজমকে ওই কবরে দাফন করা হয়। আরাফাতকে দাফন করে ফিরছিলেন স্থানীয় যুবক মো. রহমত আলী বাবু। প্রতিদিনের বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে দুজন একসঙ্গে বড় হয়েছেন। আজম বিবাহিত ছিলেন, তার দুই সন্তান আছে। আরাফাতের বিয়ের কথা চলছিল। এর মধ্যেই আরাফাত সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হন। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান আজম। আরাফাতের মৃত্যুর পর তিনি বিলাপ করছিলেন, বন্ধু কেন তাকে ছেড়ে চলে গেল। একা কীভাবে থাকবে এসব বলে। বন্ধুর কবরও দেখে এসেছে। কিছুক্ষণের মধ্যে তিনিও বন্ধুর সহযাত্রী হলেন। পাশাপাশি কবরে তাদের দাফন করা হচ্ছে। এমন মর্মান্তিক ঘটনা জীবনে আর দেখিনি।’
দুজনের আলাদা জানাজা ও দাফনের বিষয়ে স্বজনরা জানিয়েছেন, আজমের বোন জামাই বান্দরবান থাকেন। তিনি আসতে দেরি হওয়ায় আজমের জানাজা পরে হয়।