রাজবাড়ীতে বোমা বিস্ফোরণ
রাজবাড়ী প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:১০ পিএম
আপডেট : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২০:২৩ পিএম
সোহেল ওরফে ব্ল্যাক সোহেল (বামে) এবং রাসেল (ডানে)। প্রবা ফটো
রাজবাড়ীর সদরের খানগঞ্জ ইউনিয়নের বেলগাছিতে বোমা বিস্ফোরণে এক কিশোরের কব্জি বিচ্ছিন্নের ঘটনায় উপজেলার খানগঞ্জ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি সোহেল ওরফে ব্ল্যাক সোহেল ও তার সহযোগী রাসেলের নাম উঠে এসেছে। ওই ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার বাবুর জবানবন্দিতে ওই দুজনের জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে বলে জানিয়েছেন রাজবাড়ী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক বিমল চন্দ্র বর্মন।
জানা যায়, গত ২০ আগস্ট বেলগাছির হরিহরপুরে রাস্তায় বোমা বিস্ফোরণে প্রতিবন্ধী ১৭ বছরের সুমনের কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ ঘটনায় পরে সদর থানায় বিস্ফোরক আইনে মামলা হলে বাবু নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলাটি পরবর্তীতে জেলা গোয়েন্দা শাখাকে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। পরে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বাবু ওই ঘটনার সঙ্গে সোহেল ও রাসেলের জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন বলে জানিয়েছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঘটনার আগের দিন ১৯ আগস্ট বিকালের দিকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ব্ল্যাক সোহেলের সহযোগী রাসেল একটি ব্যাগ বাবু সরদারের বাড়িতে নিয়ে যান। বাবুর স্ত্রীকে রাসেল ব্যাগটি রাখতে বলেন। রাসেল বলেন, ‘ভাবি ব্যাগে যন্ত্রপাতি ও জিনিস আছে, খুইলেন না। পরে আমি আর সোহেল এসে নিয়ে যাব।’
তখন বাবুর স্ত্রী তাদের বসত ঘরের চাউলের মধ্যে ব্যাগটি রেখে দেন। পরে বাবু বাড়িতে আসলে তার স্ত্রী ব্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে বাবুও বলেন- ‘ব্যাগটি যেন খোলা না হয়। সোহেল ও রাসেল পরে এসে সেটি নিয়ে যাবেন।’
পরদিন সকালে বাবু বাইরে যান। অন্যের বাড়িতে কাজে চলে যান তার স্ত্রীও। কোনো এক সময় হরিহরপুরের হালিম শেখের ছেলে বাকপ্রতিবন্ধী কিশোর সুমন বাবুর ঘরে যায়। ঘরে কেউ না থাকায় সুমন কীভাবে যেন ওই ব্যাগটি থেকে স্কচটেপে মোড়ানো দুটি বস্তু নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বেলগাছি রেলস্টেশনের দিকে চলে যায়। প্যাঁচানো স্কচটেপ খুলতে গিয়ে সেটি বিস্ফোরণ ঘটে। পরে তাকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে একই দিন বাবুর বাড়িতে রেখে যাওয়া ব্যাগটি নিতে আসেন সোহেল ও রাসেল। ব্যাগ খুলে দেখেন ব্যাগের মধ্যে জিনিস (বোমা) নাই। এ সময় বাবুর স্ত্রী তাদের বলেন, ‘ব্যাগ যেভাবে রাখা হইছে, সেভাবেই দিলাম। ব্যাগতো কেউ খুলেনাই।’ তখন সোহেল ও রাসেল বলেন, ‘যা হওয়ার হইছে।’ এ সময় এ ঘটনা কাউকে বলতে বাবুর স্ত্রীকে নিষেধ করেন তারা।
পুলিশ সূত্র জানায়, বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৯ সেপ্টেম্বর হরিহরপুরের বেলগাছি থেকে বাবুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জবানবন্দিতে এ ঘটনার সঙ্গে হরিহরপুরের ইব্রাহিমের ছেলে সোহেল ওরফে ব্ল্যাক সোহেল ও কাজির হাট এলাকার রাসেল জড়িত বলে স্বীকার করেন বাবু। তবে তারা এখনো পলাতক।
সোহেলের বিষয়ে রাজবাড়ী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জাকারিয়া মাসুদ রাজিব প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, সংগঠনের কারও এ ধরনের অপরাধে জড়িতের প্রমাণ মিললে তাদের বহিষ্কার করা হবে।
জানতে চাইলে রাজবাড়ী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক বিমল চন্দ্র বর্মন বলেন, মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামিকে জেল হাজতে রাখার অনুরোধ জানিয়েছি। একই সঙ্গে জবানবন্দিতে যাদের নাম এসেছে তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।