মাদারীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৭:৪৭ পিএম
আপডেট : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২০:৫২ পিএম
কুকুরের কামড়ে আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। প্রবা ফটো
মাদারীপুরে একটি পাগলা কুকুরের কামড়ে আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ। তাদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি। আতঙ্কে ঘর থেকে বের হচ্ছে না স্থানীয়রা। এরই মধ্যে পুলিশ কুকুরটিকে ধরার জন্য অভিযান পরিচালনা করছে।
রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলার কালকিনি উপজেলার কালিগঞ্জ, ফাসিয়াতলাসহ বিভিন্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মাদারীপুর জেলা সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স ঝুমা সেন বলেন, ‘সকাল থেকে কুকুরের কামড়ের রোগী আসছে হাসপাতালে। সাধারণ রোগীদের সঙ্গে কুকুরে কামড় দেওয়া রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবুও সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
মাদারীপুর জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার রিয়াদ মাহমুদ বলেন, ‘একসঙ্গে কালকিনির ৮-১০টি এলাকায় কুকুরের আক্রমণে অনেক মানুষ আহত হয়। ফলে হাসপাতালে আসন সংকট দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পাগলা কুকুর বন্দি করা না হলে ভয়াবহতা বাড়তে পারে।’
মাদারীপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. রিয়াদ মাহামুদ বলেন, ‘হাসপাতালে সকাল ৯টা থেকেই একের পর এক কুকুরের কামড়ে মারাত্মক জখম রোগীরা আসতে থাকে। আহত সবার পায়ের হাটু থেকে নিচ পর্যন্ত জখম রয়েছে, অনেকের হাতেও কামড় আছে। বিশেষ করে শিশু ও নারীদের সংখ্যা বেশি। কামড়ে আহত সবার জলাতঙ্ক রোধে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। গুরতর আহত রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
স্থানীয় ইজিবাইকচালক সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘কুকুরে কামড়ানো একসঙ্গে চারজনকে আমি হাসপাতালে নিয়ে আসছি। সবার পায়ে কুকুরটি কামড় দেয়। লাল, সাদা ও হলুদ রঙের বড়সরো এই কুকুরটি এলাকায় আগে কখনো দেখি নাই।’
কালীগঞ্জ এলাকার শিশু হালিমার মা ময়না আক্তার বলেন, ‘সকাল ৯টার দিকে আমার মেয়ে হালিমা বাড়ির পাশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে বেওরিশ কুকুরটা এসে আমার মেয়ের পায়ে ও কোমড়ে কামড় দেয়। মেয়েটা হাসপাতালে ছটফট করছে। মেয়েটাকে নিয়ে খুব চিন্তা হচ্ছে।’
দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর রূপালীর বাবা ফজলুল সরদার বলেন, ‘মেয়েকে সকালে স্কুলে যাওয়ার পথে কুকুর কামড়ে আহত করেছে। পাগলা কুকুর শুধু আমার মেয়েকে নয়, এলাকার অনেকে শিক্ষার্থী ও বৃদ্ধকে কামড় দিয়ে আহত করেছে।’
মাদারীপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুবোধ কুমার দাস বলেন, ‘কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে একটি ইউনিয়নের ৫০ জনের বেশি মানুষকে কুকুরে কামড় দিয়েছে। এ বিষয় কোনো কিছুই করার নেই। কারণ আমাদের উপজেলা বা জেলা পর্যায়ে কুকুরটি ধরার লজিস্টিক সাপোর্ট নেই। আমরা অনেকটা নিরুপায়। এই মুহূর্তে কুকুরটিকে গুলি করে মেরে ফেলা ছাড়া বিকল্প পথ নেই। এটি পুলিশ করতে পারে।’
কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হাসান বলেন, ‘আমাদের তথ্য মতে এই পর্যন্ত ৪১ জনকে কুকুটি কামড় দিয়েছে। কুকুরটির মালিক নেই, বেওয়ারিশ। যাকে সামনে পায় তাকেই কামড় দিয়ে পালায়। সকাল থেকেই পুলিশের একটি টিম কুকুরটি ধরতে মাঠে কাজ করছে। পুলিশ কুকুরটিকে সামনে পেলেই প্রতিহত করবে। এ ছাড়াও কুকুরটি থেকে দূরে থাকতে এলাকার জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা হয়েছে।’