বাদল সাহা, গোপালগঞ্জ
প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২০:৫৪ পিএম
আপডেট : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২১:১৫ পিএম
প্রবা ফটো
শিকলবন্দি থেকে মুক্ত হয়েছে ভিসা পাসপোর্ট ছাড়াই বিমানে ওঠা আলোচিত শিশু জুনায়েদ মোল্লা। না বলে আর কোথাও যাবে না, এমন আশ্বাস পেয়েই শিকল খুলে দেওয়া হয়। তবে পড়াশোনা খরচ দিতে না পারার কারণেই বারবার পালিয়ে যেত বলে জানায় শিশুটি। তবে পড়ালেখা শিখে পাইলট হতে চায় জুনায়েদ।
শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলে দেওয়া হয় জুনায়েদের পায়ের শিকল। তাদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সে ঘরের বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তবে এখনও জুনায়েদকে দেখতে তাদের ভিড় করছেন এলাকাবাসী।
বুধবার সকালে ঢাকার বিমানবন্দর থানা থেকে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার পারইহাটি গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয় আলোচিত শিশু জুনায়েদ মোল্লাকে। এরপর বারবার পালানোর কারণে শিকলবন্দি করে রাখা হয়। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর খুলে দেওয়া হয় শিকল।
পরিবার থেকে পড়ালেখার খরচ দিতে না পারার কারণে মাদ্রাসা থেকে গালমন্দ শোনায় বারবার পালিয়ে যেত শিশুটি। তবে এবার আর পালানো নয়, পড়ালেখা শিখে পাইলট হতে চায় জুনায়েদ। ঘুরতে চায় দেশ-বিদেশ। শিকলবন্দি করা অমানবিক বলে মনে করেছে জুনায়েদের পরিবার। আর কোথাও পালিয়ে যাবে না বলে আশ্বাস দেওয়ায় জুনায়েদের পায়ের শিকল খুলে দেওয়া হয়।
আলোচিত শিশু জুনায়েদ বলছে, ‘মাদ্রাসায় পড়ার সময় আব্বার কাছে কাগজ ও কলম কেনার টাকা চাইতাম। আব্বা পড়ালেখার খরচ দিতে পারত না। খাতা-কলমের জন্য হুজুর মারত। মার খাওয়ার ভয়ে মাদ্রাসা থেকেও মাঝেমধ্যে পালিয়ে যেতাম।’
জুনায়েদ আরও জানায়, আমি পড়ালেখা শিখতে চাই। শিখে পাইলট হয়ে বিমানে দেশ-বিদেশ ঘুরতে চাই। সরকার যদি আমাকে সাহায্য করত আমি পড়ালেখা শিখতাম।
জুনায়েদের চাচা ইউসুফ মোল্লা বলেন, ’জুনায়েদ পাগল নয় যে ওকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখব। ওর শিকল খুলে দেওয়া হয়েছে। ও এখন আগের মতো ঘুরে বেড়াতে পারছে। বিমানে ওঠার শখ ছিল। কিন্তু ধরা পড়ায় জুনায়েদের বিমানে চড়ার স্বপ্ন পূর্ণ হয়নি। তাই বিমান কর্তৃপক্ষের কাছে জুনায়েদের ইচ্ছা পূরণ করার দাবি জানাই।‘
জুনায়েদের বাবা ইমরান মোল্লা বলেন, ‘ওর বয়স যখন ছয় বছর, তখন মাদ্রাসায় ভর্তি করে দিই। মাকে দেখার জন্য মন সব সময় ব্যাকুল থাকত। মাঝে মাঝে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে প্রথমেই তার মায়ের কাছে যেত। মা তাকে আশ্রয় দিত না। কষ্টে সে অন্যত্র যেত। সেখান থেকে খুঁজে নিয়ে আসতাম। মঙ্গলবার সকালে বাড়িতে নিয়ে এসে পায়ে শিকল দিয়েছিলাম যাতে আবার পালিয়ে যেতে না পরে। তবে খবর প্রকাশ হওয়ার পর পায়ের শিকল খুলে দিয়েছি।’
সোমবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে নিরাপত্তাবেষ্টনী পেরিয়ে কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে উঠে পড়েছিল জুনায়েদ।