নিখোঁজ যুবকের মায়ের আকুতি
ধামরাই (ঢাকা) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২০:৫২ পিএম
আপডেট : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১১:৩৩ এএম
নিখোঁজ রহমত উল্লাহ’র ছবি হাতে মায়ের অপেক্ষা। প্রবা ফটো
ঢাকার ধামরাইয়ের যুবক রহমত উল্লাহকে (২০) র্যাব পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ১৬ দিন আগে। অথচ আজও তার কোনো খোঁজ মেলেনি। র্যাবের নানা দপ্তর বা পুলিশ, কেউ তার তথ্য দিতে পারছে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ রহমত উল্লাহকে তুলে নেয়নি বলে দাবি করছে তারা।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গেলেও থানা নেয়নি। এমতাবস্থায় তারা প্রচণ্ড অসহায় হয়ে পড়েছে।
রহমত উল্লাহর মা কান্না করতে করতে বলেন, ‘আমার ছেলের সন্ধান চাই। যে শাস্তি দেয় দিক। আমরা অন্তত দেখতে তো পাব। মেরে ফেলা হলেও আমার ছেলের লাশ দিক।’
নিখোঁজ যুবক উপজেলার গাংগুটিয়া ইউনিয়নের বড়নালাই গ্রামের প্রয়াত আব্দুর রউফের ছেলে। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছোট। বড় ভাই সৌদি আরব প্রবাসী শ্রমিক। বাড়িতেই মা ও ভাবির সঙ্গে থাকতেন তিনি। গত ২৯ আগস্ট দিবাগত রাত ১২ দিকে বাড়ি থেকে র্যাব পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।
রহমত উল্লাহর পরিবার জানায়, ওই রাতে র্যাবের মতো পোশাক পরা ১০-১৫ জন ও সাদা পোশাকের ২৫-৩০ জন তাদের বাড়ি গিয়ে রহমত উল্লাহকে ঘর থেকে আটক করে। কেন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তা জানতে চাইলে তার নামে অভিযোগ আছে বলে জানায়।
রহমত উল্লাহর মা মমতাজ বেগম বলেন, ‘রাতে তারা এসে দরজায় কড়া নাড়ে। আমি ভেবেছি বড় ছেলের বিরুদ্ধে একটি মামলা থাকায় তাকে না পেয়ে ছোট ছেলেকে ধরে নিয়ে যেতে পারে। তাই রহমত উল্লাহকে ঘরের সিলিংয়ের ওপরে লুকিয়ে রাখি। পরে দরজা খুললে বেশ কয়েকজন ঘরে ঢুকে তল্লাশি করে। এরপর তারা সিলিংয়ে খোঁজ করতে গেলে রহমত উল্লাহ নিচে নেমে আসে। পরে তারা তাকে তুলে নিয়ে যায়। নিয়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়।
রহমত উল্লাহর বোনের স্বামী মশিউর রহমান বলেন, ‘ভোরেই মানিকগঞ্জ র্যাব ক্যাম্পে যাই। তারা ধামরাই থানায় খোঁজ নিতে বলেন। আমরা ধামরাই থানায় খোঁজ নিই। সেখানেও তাকে পাইনি। এরপর নবীনগর র্যাব ক্যাম্প ও ডিবি কার্যালয়ে গিয়েও কোনো সন্ধান পাইনি। আবার মানিকগঞ্জ র্যাব ক্যাম্পে যোগাযোগ করলে তারা ধামরাই থানায় জিডি করার পরামর্শ দেন। ধামরাই থানায় জিডি করতে গেলে পুলিশ র্যাবের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পাইনি।’
র্যাব-৪ মানিকগঞ্জ সিপিসি-৩ কোম্পানি কমান্ডার মোহাম্মদ আরিফ হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে দেখা হচ্ছে। আমাদের কোনো টিম সেখানে যায়নি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হলেও তো এত দিন গোপন থাকার কথা নয়।
ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ বলেন, র্যাব তুলে নিয়ে গেছে এমন কোনো অভিযোগ এখনও আমাদের কাছে নেই। তবে কেউ অভিযোগ করলে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।