জয়পুরহাট প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৭:২৮ পিএম
আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:০৮ পিএম
সৌলাগাড়ী বিলের জলাবদ্ধতা নিরসনে বিজিবি-বিএসএফের বৈঠকে দুদেশের কর্মকর্তারা। প্রবা ফটো
জয়পুরহাট সীমান্তের সৌলাগাড়ী বিলের জলাবদ্ধতা নিরসনে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মধ্যে পতাকা বৈঠক হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে চলা দুই ঘণ্টাব্যাপী এই পতাকা বৈঠক সীমান্ত পিলার ২৭৪/১০-এস এর ভুটিয়াপাড়া এলাকায় অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে বিজিবির পক্ষে ১২ সদস্য প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ১৪ বিজিবি পত্নীতলা ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. হামিদ উদ্দিন। ১২ সদস্য বিশিষ্ট বিএসএফ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ১৩৭ ব্যাটালিয়ন বিএসএফের কমান্ড্যান্ট সুকবীর ডঙ্গর।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জয়পুরহাট জেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি ও জনপ্রতিনিধিরা।
পত্নীতলা ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. হামিদ উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আজকের আমন্ত্রণে ওনারা (বিএসএফ) এসেছেন। জলাবদ্ধতা থাকা এলাকা পরিদর্শন করেছেন। ভারত পার্শ্বের খাল দিয়ে বিলের পানি প্রবাহের জন্য নালা পরিষ্কার ও প্রশস্ত করে স্থায়ীভাবে একটা সমাধান করার ব্যাপারে ইতিবাচকভাবে সাড়া দিয়েছে। তারা আগামী বর্ষা মৌসুম আসার আগেই এই খালটি প্রশস্থ ও গভীর করবেন বলে কথা দিয়েছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতিনিধিরা সৌলাগাড়ী বিলের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরের খালকে প্রশস্ত করে ছোট যমুনা নদীর সাথে সংযোগ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশ্বাস দেন।
ধলাহার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. তোজাম্মল হক বলেন, জয়পুরহাট সদর উপজেলার ভুটিয়াপাড়া বিজিবি ক্যাম্পের কয়েকটি সীমানা পিলারের মধ্যবর্তীস্থানে ভারতের অংশে একটি খাল রয়েছে। দেশভাগের পর থেকে বাংলাদেশের সৌলাগাড়ী বিলের মাঠের পানি ভারতের খালে প্রবাহিত হয়ে আসছিল। দশ বছর আগে ওই খালের পাশে বিএসএফ আরকেপুর ক্যাম্প স্থাপন করে। এরপর খালে কয়েকটি বাঁধ দেয় বিএসএফ। এতে বাংলাদেশের সৌলাগাড়ী বিলের মাঠের পানি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। বর্ষা মৌসুমে সৌলাগাড়ী বিলের ফসলি মাঠে পানি জমে থাকে। ওই বিলের ফসলি মাঠে খদিপাড়া, কৈকুড়ি, রামকৃষ্ণপুর ও ধলাহার গ্রামের কৃষকদের প্রায় চার হাজার বিঘা জমি রয়েছে। চলতি রোপা আমন মৌসুমে কৃষকেরা তাদের জমিতে রোপা আমন ধানের গাছ রোপন করেছিলেন। গত আগষ্ট মাসে কয়েক দিনের টানা বর্ষণে ফসলি মাঠটির প্রায় চার হাজার বিঘা জমির রোপা আমন ধান পানিতে ডুবে যায়।
চেয়ারম্যান বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা বিজিবি-১৪, পত্নীতলা ব্যাটালিয়নে ঘটনাটি জানান। ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. হামিদ উদ্দিন জলাবদ্ধতা নিরসনে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ১৩৭ ব্যাটালিয়নের আরকেপুর ক্যাম্প কমান্ডারকে বিষয়টি অবহিত করেন। এতে কোনো সুরাহা হয়নি। এরপর তিনি বিজিবির মহাপরিচালকের নির্দেশে বিএসএফের ১৩৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বিএসএফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক সৌলাগাড়ী বিলের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য খালের বাঁধ কেটে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। এতে খালের পানি প্রবাহ স্বাভাবিক হয়।
ইউপি চেয়ারম্যান মো. তোজাম্মল হক আরও বলেন, পরে পত্নীতলা ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. হামিদ উদ্দিন জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে ওই বিলের ফসলি মাঠ পরিদর্শন করেন। এ সময় কৃষকেরা সৌলাগাড়ী বিলের ফসলি মাঠের জলাবদ্ধতার নিরসনে স্থায়ী সমাধান দাবি করেন। এরপর বিএসএফ ব্যটেলিয়নের অধিনায়কের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে স্থায়ী সমাধানের জন্য পতাকা বৈঠকের আমন্ত্রণ জানানো হয়।
হিলি সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের সৌজন্য সাক্ষাৎ
দিনাজপুরের হিলি সীমান্তের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিজিবি-বিএসএফের ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে সৌজন্যে সাক্ষাৎ ও বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে হিলি সীমান্তের চেকপোস্টে গেইটের শুন্য রেখা (২৮৫/১১ এস) পিলারের বাংলাদেশ অভ্যন্তরে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় ভারতের বিএসএফের ১৫১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক কমল ভগত সিং হিলি জিরো পয়েন্ট এলাকায় আসলে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান জয়পুরহাট-২০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানজিলুর রহমান।
জয়পুরহাট-২০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তানজিলুর রহমান বলেন, জয়পুরহাট-২০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের যোগদানের পর বিএসএফের সঙ্গে এটাই প্রথম সৌজন্য সাক্ষাত। মূলত সীমান্তে সৌহার্দ্য ও সম্প্রতি বজায় রাখতে এ সৌজন্য সাক্ষাত অনুষ্ঠিত হয়।